মঙ্গলবার বাড্ডায় নির্বাচনী গণসংযোগে গিয়ে এ বক্তব্য দেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়ে ধানের শীষের প্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেন, “গণতান্ত্রিক রূপরেখাতে সকল ধর্মকে একইভাবে সম্মান ও অধিকার দেওয়া হয়েছে। তবে আমরা লক্ষ করছি, নির্বাচন কমিশন বারেবারে ইচ্ছা করে হিন্দু ধর্মের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন।
“বিভিন্ন স্কুলে পূজা হবে জেনে সকল স্কুল সেন্টারকে নির্বাচন কেন্দ্র হিসেবে নির্বাচন কমিশন দখল করে নিয়েছেন।”
তাবিথ বলেন, গত বছর ৫ অক্টোবর দুর্গা পূজার সময় রংপুর-৩ আসনে উপ-নির্বাচন করা হয়েছিল। এবারও সে ধারাবাহিকতায় হিন্দুদের সরস্বতী পূজার দিনে ভোটের দিনক্ষণ ঠিক করে নির্বাচন কমিশন ‘হিন্দু ধর্মের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন’।
হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য এটা ‘এক দুঃখজনক পরিস্থিতি’ উল্লেখ করে বিএনপির এই মেয়র প্রার্থী বলেন, “এ থেকে উত্তরণ করার জন্য ভোটের মাধ্যমে রায় দিতে হবে। আমরা এ ধরনের আচরণ বাংলাদেশের মাটিতে দেখতে চাই না। আমরা তা আর মানব না।”
আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে ভোটের তারিখ নির্ধারিত হলেও সেদিন সরস্বতী পূজা হওয়ায় তারিখ বদলাতে নানা মহল থেকে ইসিকে দাবি জানানো হচ্ছে।
ওই দাবি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে দেখা করতে যায় বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা।
তারা ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়ে নানা যুক্তি তুলে ধরলেও তাতে ইসির সাড়া মেলেনি।
‘অদম্য ঢাকা’ স্লোগানে ঢাকার নাগরিকদের ১২টি সমস্যা সমাধানে ব্রতী হওয়ার শপথ নিয়ে নগরবাসীর কাছে ভোট চাইছেন তাবিথ ।
এদিন বাড্ডায় এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, বাড্ডা এলাকায় জলাবদ্ধতা, বর্জ্য, পরিচ্ছন্নতা ও পয়ঃনিষ্কাশনকে ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা’ হিসেবে দেখছেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় বাধার মুখে পড়ছেন অভিযোগ জানিয়ে তাবিথ বলেন, সোমবার রাতে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে তার নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর করেছেন ‘আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা’।
এতে বিএনপির তিনজন কর্মী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
বিএনপি প্রার্থী বলেন, “আমরা যা আশঙ্কা করেছিলাম, তা ফলে যাচ্ছে। দিনের শেষে হামলার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। আমরা আহ্বান জানাচ্ছি, শান্তিপূর্ণভাবে শৃঙ্খলা বজায় রেখে ভোটারদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য।”
বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা, নির্বাচনী পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা ও ক্যাম্প ভাংচুরের পর পুলিশের কাছে জানানো হলেও তাতে সাড়া না পাওয়ারও অভিযোগ আসে তাবিথের কাছ থেকে।
তিনি বলেন, “পুলিশের কাছে আলাদাভাবে অভিযোগ দিচ্ছি। পুলিশ সদস্যরা কিছু কিছু স্পটে যাচ্ছেন। তারা যত কম দায়িত্ব পালন করা যায়, তারা তা করছেন। তারা দৃষ্টান্তমূলক কোনো কিছু করছে না।”
প্রার্থীদের আচরণবিধি না মানার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
“আচরণ বিধি অনেক ক্ষেত্রে মানা হচ্ছে না। নির্বাচন কমিশন কিছুই নিয়ন্ত্রণে আনতে চাচ্ছেন না বা পারছেন না । তার ফলে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করার জন্য উৎসাহ পাচ্ছে ।”
প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তাবিথ বলেন, “আসুন, আমি ভোটারদের ভোট দিয়ে জয়লাভের চেষ্টা করি, পেশি শক্তি দিয়ে না। পাল্টাপাল্টি কথা না বলে আমাদের উচিৎ, ভোটারদের সাথে কথা বলা, অপেক্ষা করা। ভোটাররা যে রায় দেবে, সকলে যেন সে রায় মেনে নেব।”