তাপসের অভিযোগ সঠিক নয়, ‘এভিডেন্স’ আছে: ইশরাক

ঢাকা দক্ষিণে সমর্থকদের ওপর হামলার যে অভিযোগ আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস করেছেন, তা সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2020, 01:02 PM
Updated : 12 Jan 2020, 01:15 PM

উল্টো তার সমর্থকদের ওপর হামলা করা হয়েছে অভিযোগ করে নির্বাচনে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির দাবি জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণ মিশন রোডে তার গণসংযোগে  প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের কর্মীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন নৌকার প্রার্থী তাপস।

রোববার সকালে শান্তিনগর কাঁচাবাজারে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “গতকাল আরকে মিশন রোডে নির্বাচনী প্রচারের এক পর্যায়ে আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ইশরাক হোসেনের বাসাতেও আমি গিয়েছি। সেখানে সকলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছি, ভোট প্রার্থনা করেছি।

“কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, আমরা সেখান থেকে চলে আসার পর সন্ধ্যার দিকে তারা অতর্কিতে আমাদের ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীসহ গণসংযোগে যারা ছিল তাদের ওপর আক্রমণ করেছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক।”

দুপুরে পুরান ঢাকার দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের মুখে পড়েন ইশরাক।

তিনি বলেন, “হামলার যে অভিযোগ করা হচ্ছে এটা সঠিক নয়। আমাদের কাছে এভিডেন্স আছে, ছবি আছে। আমাদের কোনো কর্মী-সমর্থক হামলা করেনি, বরং উনাদের লোকজন গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের কর্মীদের ওপর হামলা করেছে।

“আমার বাসার কাছে থাকা কয়েকটি গাড়ির গ্লাস ভাংচুর হয়েছে ওদের হামলায়।”

তাদের ‘এই হামলা’ সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশের সহায়ক কি না সে প্রশ্ন তুলে বিএনপির মেয়র প্রার্থী ইশরাক বলেন, “যদিও আমাকে এখনো প্রচারণায় বাধা দেয়া হয়নি, তবে আমার দলের কাউন্সিলর ও সমর্থকদের বিভিন্ন ওয়ার্ডে প্রচারে ওরা বাধা দিচ্ছে, প্রচারণা চালাতে দিচ্ছে না।

“এটা থেকে প্রমাণ হয় যে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এখনও ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি হয়নি। নির্বাচনে অবশ্যই সব প্রার্থীর সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।”

বেলা ১২টার পর জজকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে তৃতীয় দিনের নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন ইশরাক। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে বিএনপির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেন, প্রধান সমন্বয়কারী মির্জা আব্বাস, সদস্য সচিব আবদুস সালাম, সদস্য খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, মীর সরফত আলী সপু, কাজী আবুল বাশারসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাদের নিয়ে আদালন সড়ক, ইংলিশ রোড, বংশাল, তাঁতীবাজার হয়ে নয়া বাজারের মোড়ে এসে প্রচার শেষ করেন তিনি।

ইশরাক যখন মিছিলের অগ্রভাগে জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে লিফলেট বিলি করছিলেন, তখন সড়কের দুই পাশে নারী-পুরুষরা দাঁড়িয়ে তাকে শুভেচ্ছা জানাতে দেখা যায়। অনেক প্রবণি ইশরাকের মাথায় হাত বুলিয়ে দেন।

ইশরাকের বাবা সাদেক হোসেন খোকা বেড়ে উঠেছেন এই পুরান ঢাকায়। তিনি অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ছিলেন টানা ১০ বছর। প্রবীণদের অনেকে ইশরাককে ‘খোকার বেটা’ বলে সম্বোধন করেন।

ইশরাক বলেন, “আমার বাবা এই পুরান ঢাকার সন্তান। এখানে মুরুব্বি আছেন তারা বাবাকে চেনেন। আমি আজকে আপনাদের দোয়া চাইতে এসেছি। আপনাদের দোয়াই আমার একমাত্র ভরসা। আমি মেয়র পদে নির্বাচন করছি ধানের শীষে। এই প্রতীক গণতন্ত্রের প্রতীক, এই প্রতীক দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রতীক, এই প্রতীক দেশনায়ক তারেক রহমানের প্রতীক।”

এই মেয়র প্রার্থী বলেন, পুরান ঢাকার ঐতিহ্য ঠিক রেখে বাসযোগ্য নগরী গড়তে ঢাকাকে ঢেলে সাজাতে চান তিনি।

বিগত ১৩ বছরে মেয়ররা ঢাকাকে ‘বসবাসের অযোগ্য’ নগরীতে পরিণত করেছেন অভিযোগ করে ইশরাক বলেন, “যানজট, দূষণমুক্ত আধুনিক ঢাকা বিনির্মাণে কাজ করতে চাই।”

দুপুরে ওয়ারির বলদা গার্ডেনের দেওয়ালে ইশরাকের পোস্টার লাগানোর সময়ে চারজনকে পুলিশ আটক করে বংশাল থানা নিয়ে যায়, বিকালের দিকে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় বলে ইশরাকের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির একজন নেতা জানিয়েছেন।