নীরবে ভোট ডাকাতির জন্য এবার ইভিএম: রিজভী

গত সংসদ নির্বাচনের অস্বস্তি এড়াতে এবার সরকার নীরবে ডিজিটাল ভোট চুরি করতে ঢাকা সিটির নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Jan 2020, 10:45 AM
Updated : 12 Jan 2020, 10:47 AM

রোববার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।

তিনি বলেন, ২৯ ডিসেম্বর রাতের ভোট ডাকাতির কেলেংকারিতে অস্বস্তিতে পড়ে সরকার এখন ইভিএমের মাধ্যমে ডিজিটাল ভোট ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে। ‘তাবেদার’ নির্বাচন কমিশন সেই আয়োজন করতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

“সংশ্লিষ্ট সকলের আপত্তি সত্বেও ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন কমিশনের তোড়জোড় বেপরোয়া দুর্বৃত্তপনারই বর্ধিত প্রকাশ। সারাবিশ্বে বাতিল হওয়া ভোটাধিকার হরণের যন্ত্র ইভিএমে ভোট করার পথ থেকে এখনি সরে আসার জন্য আমরা ইসির প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

রিজভী বলেন, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটকক্ষ প্রায় ১৪ হাজার। প্রতিটি কক্ষে একটি করে ইভিএম ধরে ১৪ হাজার ইভিএমের প্রয়োজন পড়ে।

“ইসির বক্তব্য অনুযায়ী, ব্যাকআপ হিসাবে ৫০ শতাংশ মেশিন যদি রাখাও হয়, তাহলে প্রতি কক্ষের জন্য অতিরিক্তসহ মোট ২১ হাজার ইভিএম লাগার কথা। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আরো ১৪ হাজার ইভিএম অতিরিক্ত প্রস্তুত করে রাখছে। এটি রাখার মূল উদ্দেশ্য হলো- ভোটের আগেই ভোটের ফলাফল প্রস্তুত করা। আমরা মনে করি, এটি সম্পূর্ণরূপে রহস্যজনক।”

বিশেষজ্ঞদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে ইভিএমের ক্রটির বিভিন্ন দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, ইভিএমে ডিজিটাল ভোট ডাকাতি করা যায় খুবই সহজে। নির্বাচন কমিশন যে ইভিএমটি ব্যবহার করতে যাচ্ছে তার ইউনিট আছে দুইটি। একটি কন্ট্রোল ইউনিট, অন্যটি ব্যালট ইউনিট। কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট থাকলেও ব্যালট ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্টের ব্যবস্থা নেই। ইভিএমের কন্ট্রোল ইউনিটে ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিংয়ের পর ব্যালট ইউনিটে গিয়ে একজনের ভোট দিতে পারবেন অন্যজন।

“কোনো ভোটারের ফিঙ্গার প্রিন্ট ম্যাচিং না হলে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের হাতে ৫ শতাংশ ফিঙ্গার ম্যাচিং ক্ষমতা দিয়ে দিচ্ছে এই সরকারের একান্ত অনুগত নির্বাচন কমিশন। ফলে সাজানো ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে জনগণকে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে।”

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন বারবার বলছে, ব্যালট ইউনিট গোপন কক্ষে থাকবে, সেখানে ভোটার ছাড়া কারোর যাওয়ার সুযোগ নেই- এটা সম্পূর্ণ ডাহা মিথ্যা তথ্য।

“এখন অধিকাংশ ভোটকক্ষের নিয়ন্ত্রণ থাকে ক্ষমতাসীন দলের হাতে। প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের সবাই সরকারি কর্মকতা। সরকারের হুকুমেই তাদের কাজ করতে হয়।তাদের সাথে যুক্ত থাকে সরকারি দলের প্রার্থীর পোলিং এজেন্ট নামের ক্যাডার বাহিনী।”

নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু ও সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম উপস্থিত ছিলেন।