ঢাকা সিটি ভোটে অংশগ্রহণ নিয়ে বাম জোটে দ্বন্দ্ব

ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে বাম গণতান্ত্রিক জোটে দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Dec 2019, 12:32 PM
Updated : 29 Dec 2019, 12:33 PM

জোটের বড় দল সিপিবি এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পক্ষপাতি হলেও ভোটে অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে বাকি ছয়টি দল।

বর্তমান ইসির প্রতি আস্থা না থাকলেও ‘রাজনৈতিক লড়াইয়ের অংশ’ হিসেবে এই নির্বাচনে যোগ দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখাচ্ছে সিপিবি।

অন্যদলগুলো মনে করছে, সরকারের ‘অনুগত’ এই ইসির অধীনে  নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগই নেই।

গত বৃহস্পতিবার সিপিবির ঢাকা কমিটি এক সংবাদ সম্মেলনে আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কথা জানিয়েছিল।

ঢাকা উত্তরে সাজেদুল হক রুবেলকে এবং ঢাকা দক্ষিণে মানবেন্দ্র দেবকে সিপিবি মেয়র প্রার্থী করছে বলেও দলটির নেতাদের সঙ্গে কথা জানা যায়।

কিন্তু জোটভুক্ত অন্য দলগুলোর আপত্তির মধ্যে রোববার সিপিবি কার্যালয়ে সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে বৈঠকে বসেন বাম গণতান্ত্রিক জোটের নেতারা।

বৈঠক শেষে জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক জানান, নির্বাচনে সিপিবির অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে বাসদ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী), গণসংহতি আন্দোলন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ ও গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির নেতারা।

ঢাকা সিটি ভোটে অংশগ্রহণ নিয়ে বাম জোট এখন দ্বিধাবিভক্ত (ফাইল ছবি)

তিনি বলেন, “জোটের নেতারা মনে করছেন, এই নির্বাচনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সাধারণ মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগ, যা ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার, তা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন কোনো আস্থা তৈরি করতে পারেনি। আমরা দেখছি, নির্বাচন কমিশন ভোটাধিকার প্রয়োগে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি।”

ইসির বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে বাম জোটের সমন্বয়ক বলেন, “নির্বাচন কমিশনের সরকার অনুগত ভূমিকা লক্ষ্যণীয়। গত (২০১৮ সালে) ৩০ ডিসেম্বর সরকারের ভোট ডাকাতির প্রধান সহযোগী ছিল নির্বাচন কমিশন।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া বাম জোট ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে পুনর্নির্বাচনের দাবি তুলেছিল। বিএনপি নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও ভোট ডাকাতির অভিযোগ তুলে ফল প্রত্যাখ্যান করেছিল।

আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি। অন্য দলগুলোর মধ্যেও স্থানীয় সরকারের এই নির্বাচনে যাওয়ার তোড়জোড় দেখা যাচ্ছে।

সিপিবির নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্তের বিষয়ে সাইফুল হক বলেন, “সিপিবির এই অংশগ্রহণ আমাদের সঙ্গে পাবলিকলি দ্বিমত প্রকাশ করল। ঐক্য বা সংহতির ক্ষেত্রে তা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে প্রভাব ফেলবেই।”

এ বিষয়ে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, “৩১ ডিসেম্বরের আগে সিপিবি নির্বাচনে অংশগ্রহণের বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো কথা বলবে না। তবে আমরা সবরকমের প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।”

সাইফুল হকের কথার পরিপ্রেক্ষিতে সেলিম বলেন, “সিপিবি নির্বাচনে অংশ নিলেও তাতে গণতান্ত্রিক বাম জোটের ঐক্যে কোনো সমস্যা হবে না।”