মেশিনের ভোট নেওয়ার বিপক্ষে অবস্থান জানিয়ে রোববার সাংবাদিকদের কাছে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এ অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, “আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিশ্বের ইতিহাসে নজিরবিহীন কেলেঙ্কারির পর এবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও সরকারের ইচ্ছাপূরণে সক্রিয় হয়ে উঠেছে নির্বাচন কমিশন।
“ইভিএম মেশিনের মাধ্যমে কারসাজি করে সরকারের পক্ষে রায় নেওয়ার জন্য জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে তারা। আমরা নির্বাচনে কমিশনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, ইভিএম বাতিল করে বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের উদ্যোগ গ্রহণ করুন।”
গবেষণার উদ্ধৃতি দিয়ে রিজভী বলেন, ইভিএম একটি অস্বচ্ছ ভোটগ্রহণ পদ্ধতি, যা গণতন্ত্র চর্চার সহায়ক নয়। এই মেশিনে সহজেই ‘টেম্পার’ করা যায়। তাই এ মেশিন ব্যবহার করে নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্য ফলাফল পাওয়া অসম্ভব।
“ইভিএমের বিরুদ্ধে শুধু বিএনপি নয়, দেশের প্রায় সব দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল ও নির্বাচন পর্যবেক্ষককারী প্রতিষ্ঠান সবাই বলেছে, ইভিএম হচ্ছে ভোট কারচুপির অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের কানে কথা ঢুকছে না।”
৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠেয় ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে এবারই প্রথম রাজধানীর অর্ধ কোটি ভোটার মেয়র ও কাউন্সিলর বাছাইয়ে ইভিএমে ভোট দেবেন।
বরাবরই ইভিএম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসা বিএনপি নেতাদের সন্দেহ, যন্ত্রে ভোটগ্রহণ হলে ‘ম্যানিপুলেট’ করার এবং ফলাফল ক্ষমতাসীনদের অনুকূলে টানার সুযোগ রয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন বরাবরই বলে এসেছে, ইভিএমে বরং কারচুপির সুযোগ কমবে।
তবে এই সংশয় ও শঙ্কার মধ্যেও বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। দুই সিটিতেই দলের পক্ষে মেয়র পদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে দলটি।
কমিশন কীভাবে সরকারের ইচ্ছাপূরণে কাজ করছে তার ব্যাখ্যা দিয়ে রিজভী বলেন, গত বুধবার ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হবে ইভিএম মেশিনে। তার বক্তব্যের পরপরই নির্বাচন কমিশনার ‘আরো তারস্বরে বলে উঠলেন, ইভিএম ব্যবহার করেই তারা নির্বাচন করবেন’।
নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব মজিবুর রহমান সারোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী, ফরিদা ইয়াসমীন, শাহ নেছারুল হক, আবদুল কালাম আজাদ ও নজরুল ইসলাম তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।