তিনি বলেছেন, স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির উত্তরসূরিদের সঙ্গে কোনো আপস আওয়ামী লীগ করবে না। দলে ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে বের করে দেওয়া হবে।
বিজয় দিবস উপলক্ষে সোমবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে একাত্তরের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সরকারের সেতুমন্ত্রী কাদের।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালির মুক্তি এসেছিল অনেক রক্ত ঝরিয়ে, শোষণ-বঞ্চনা আর যন্ত্রণার শেষে লাখো মানুষের আত্মাহুতি ও বাংলা মায়ের আত্মদানের বিনিময়ে।
পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী দীর্ঘ নয় মাস তাদের স্থানীয় দোসর জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ, রাজাকার, আল-বদর, আল-শামস ও শান্তি কমিটির সহায়তায় বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে ৩০ লাখ বাঙালিকে হত্যা করে, দুই লাখ মা-বোনের সন্ত্রমহানি করে।
সরকারের হাতে থাকা নথির তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে সরকার একাত্তরের সেই স্বাধীনতাবিরোধীদের মধ্যে ১০ হাজার ৭৮৯ জনের প্রথম তালিকা বুধবার প্রকাশ করেছে।
তবে অনেক স্বাধীনতাবিরোধী ‘আওয়ামী লীগের চারপাশেও’ আছে মন্তব্য করে কলামনিস্ট আবদুল গাফফার চৌধুরী বলেছেন, তাদের যথাযথভাবে চিহ্নিত করতে না পারলে রাজাকারদের সঠিক তালিকা প্রণয়ন করা সম্ভব হবে না।
“স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি এবং তাদের বংশধর, তাদের ব্যাপারে আমাদের কোনো আপস নেই। আমরা যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, তারাই কেবলমাত্র আওয়ামী লীগ করতে পারবে।
দলে অনুপ্রবেশকারী হিসেবে কেউ থাকলে আগামী সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের ‘বের করে দেওয়া হবে’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “বাংলার জমিনে এই অপশক্তিকে ওঠে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না, বিজয় দিবসে এটিই আমাদের শপথ।”
স্মৃতিসৌধে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুও ‘স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির’ হুমকির কথা বলে সতর্ক করেন।
“বাংলাদেশ এখনও নিরাপদ হয়নি।স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর আগে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে সম্পূর্ণরূপে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আর রাজাকার সমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসবে না, সে বিষয়ে নিশ্চিৎ হতে হবে। ”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই শরিক নেতা বলেন, “একাত্তরের যে লক্ষ্য ও চেতনা ছিল, সে লক্ষ্য অনুযায়ী আমরা সম্পূর্ণভাবে এগোতে পারিনি। আমরা আরও এগোতে পারতাম, যদি পঁচাত্তরে রাজনৈতিক বিপর্যয় না হত, সামরিক শাসন না থাকত। আর যাতে আমরা হোঁচট না খাই, তার গ্যারান্টি অর্জন করাটাই এ মুহূর্তের গুরুত্নপূর্ণ রাজনৈতিক কর্তব্য।”
সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, রাজাকারের তালিকাটি এখনও তার ‘পরীক্ষা’ করে দেখা হয়নি। ‘পরীক্ষা নিরীক্ষা’ করে তবেই তিনি মন্তব্য করবেন।
“তবে আমাদের প্রত্যাশা সঠিক তালিকাটি প্রকাশিত হোক। দেশের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে কার কী ভূমিকা তাহলে তা স্পষ্ট হয়ে উঠবে।”
জি এম কাদের বলেন, “আমাদের প্রত্যাশা দেশ শান্তির দিকে এগিয়ে যাবে। বেকারত্বমুক্ত দেশ হবে। দুর্নীতিমুক্ত দেশ হবে। এ দেশ গড়ার লক্ষ্যে আমরা সম্মিলিতভাবে কাজ করব।”