সর্বোচ্চ আদালতেও জামিন মেলেনি, মুক্তি হচ্ছে না খালেদার

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন সর্বোচ্চ আদালতেও নাকচ হয়ে গেছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2019, 07:30 AM
Updated : 6 Jan 2020, 02:09 PM

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ বিচারকের আপিল বেঞ্চ বৃহস্পতিবার সর্বসম্মত এই সিদ্ধান্ত দেয়।

বিএনপি চেয়ারপারসনের সম্মতি থাকলে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী তাকে দ্রুত ‘অ্যাডভানসড ট্রিটমেন্ট’ দেওয়ার পদক্ষেপ নিতে বলেছে আপিল বিভাগ।

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাত বছরের সাজার রায়ের পর হাই কোর্টে আপিল করে জামিন চেয়েছিলেন তার আইনজীবীরা।

অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এ তিন বিবেচনায় হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ জুলাই আবেদনটি খারিজ করে দিলে খালেদার আইনজীবীরা আপিল বিভাগে আসেন।

আদালতের বাইরে বিএনপিপন্থি ও সরকার সমর্থক আইনজীবীদের পাল্টাপাল্টি বিক্ষোভ আর কড়া নিরাপত্তার মধ্যে বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে আপিল বিভাগ বিএনপি চেয়ারপারসনের আবেদনটির নিষ্পত্তি করে দিল।

খালেদা জিয়ার পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন জয়নুল আবেদীন ও খন্দকার মাহবুব হোসেন। তাদের সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জমির উদ্দিন সরকার, মইনুল হোসেন, এজে মোহাম্মদ আলী, মাহবুব উদ্দিন খোকন, ফজলুর রহমান, রুহুল কুদ্দুস কাজল, নিতাই রায় চৌধুরী ও সগির হোসেন লিয়ন।

অন্যদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে খুরশীদ আলম খান এবং রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম জামিনের বিরোধিতা করে শুনানিতে অংশ নেন।

আদেশের পর খন্দকার মাহবুব হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “জামিন চেয়ে আমরা আইনি লড়াই চালিয়েছি। সাত বছরের সাজায় জামিন না দেওয়া নজিরবিহীন। এটি সুপ্রিম কোর্টের জন্য একটি কলঙ্কজনক ঘটনা হয়ে থাকবে।”

জামিন পাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে কিনা জানতে চাইলে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের জ্যেষ্ঠ আইনজীবীদের নিয়ে একটি প্যানেল আছে। তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাছাড়া আপিল বিভাগ জামিন কেন দেননি, সে কারণটা তো এখনও আমরা জানি না। সেটাও দেখতে হবে।”

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম  সাংবাদিকদের বলেন,  “যে মেডিকেল রিপোর্টগুলো আগে দাখিল করা হয়েছিল, সেগুলোসহ গতকাল যেটা দাখিল করা হয়েছে সেটি পড়ে শোনানো হয়েছে আদালতে। তাতে আমরা দেখিয়েছি, আসলে তার শারীরিক অবস্থার বিশেষ কোনো অবনতি হয়নি। যে রকম ছিল, সে রকই আছে।”

সর্বশেষ রিপোর্টে কী বলা হয়েছে জানতে চাইলে মাহবুবে আলম বলেন, খালেদা জিয়ার দুই পায়ের হাঁটু প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল ১৯৯০ ও ২০০২ সালে।

“এটা ভালো হওয়ার পর্যায়ে নেই। স্বাভাবিকভাবে এতদিন পরে রিপ্লেসমেন্টের কার্যকারিতা থাকে না। তাই এর অ্যাডভান্সড (উন্নত) চিকিৎসা নিতে হয়। কতগুলো বিশেষ ধরনের ইনজেকশন আছে, সেই ইনজেকশন দেওয়ার ব্যাপারে তার অনুমতি না পাওয়া গেলে তো আর দেওয়া যাবে না। উনি (খালেদা জিয়া) অনুমতি দিচ্ছেন না। আদালত বলেছেন, যদি উনি অনুমতি দেন তাহলে কর্তৃপক্ষকে সে ব্যবস্থা করবে।”

রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা বলেন, “এর আগে একটি মামলায় (জিয়া এতিমখানা দুর্নীতি মামলা) উনাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আর এ মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড। মোট ১৭ বছর কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে তাকে। কাজেই এটাকে শর্ট সেনটেন্স বলার সুযোগ নেই। সুতরাং এখানে তিনি জামিন পেতে পারেন না।”

দুর্নীতির দুই মামলায় মোট ১৭ বছরের দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর আগে বিভিন্ন মামলায় জামিন হওয়ায় বিএনপি নেতাকর্মীরা তাকিয়ে ছিলেন জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তার জামিন শুনানির দিকে। এ মামলায় জামিন হলেই তার মুক্তির পথ খুলবে বলে তারা আশা করছিলেন। কিন্তু সর্বোচ্চ আদালতেও জামিন না মেলায় আপাতত তার মুক্তি মিলছে না।

মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্ট

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কনক কান্তি বড়ুয়া খালেদা জিয়ার সর্বশেষ মেডিকেল প্রতিবেদনটি বুধবার সুপ্রিম কার্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে পাঠিয়েছেন।

সেখানে তিনি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষায় গত ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনের পাশাপাশি গত ৭ অক্টোবর গঠিত মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদনও দিয়েছেন।  

গত ১০ ডিসেম্বর গঠিত মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন চিকিৎসক শামীম আহমেদ, বদরুন্নেছা আহমেদ, তানজিমা পারভীন, চৌধুরী ইকবাল মাহমুদ, সৈয়দ আতিকুল হক, মো. ঝিলান মিয়া সরকার ও মো. ফরিদ উদ্দিন।

এই বোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “খালেদা জিয়া ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, কফ জনিত শ্বাসকষ্ট (কফ ভেরিয়েন্ট অ্যাজমা), প্রতিস্থাপনজনিত হাঁটুর ব্যথায় (অস্টিও-আর্থরাইটিস) ভুগছেন। তার রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যা নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই আছে। তবে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন।

“খালেদার গেঁটে বাতজানিত সমস্যা জটিল পর্যায়ে রয়েছে; ক্রমেই এর অবনতি হচ্ছে। এর নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা এখনও আবিষ্কার হয়নি। কিন্তু এ রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যে চিকিৎসা চালু আছে, গত কয়েক দশকে তার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে।

“খালেদা জিয়ার গেঁটে বাতের জন্য প্রচলিত চিকিৎসা আর কাজ না করায় সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মানের এক ধরনের বায়োলজিক্যাল থেরাপি দেওয়ার সুপিারিশ করা হচ্ছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত (১১ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে তার কাছ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পাওয়া যায়নি। ফলে তার চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না।”

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, “ডান পায়ের ত্বকের নিচে এক ধরনের ছোট নডিউল আছে। এর জন্যও মেডিকেল বোর্ড একটি উন্নতমানের চিকিৎসার সুপারিশ করেছে; কিন্তু এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার সম্মতি না থাকায় তাকে চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।

“এছাড়া গত ৩ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। খালেদা জিয়াও চান মাঝে মাঝে এমন পরীক্ষা করানো হোক। তার ক্ষুধামন্দার সমস্যা বেড়ে যাওয়ায় মেডিকেল বোর্ড তার জিআই অ্যান্ডোস্কপি করার পরামর্শ দিচ্ছে।

“এসব সমস্যার প্রেক্ষিতে যেসব ওষুধ প্রয়োগ করা প্রয়োজন তার জন্য মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার সম্মতির জন্য অধীর অপেক্ষায় আছে।”

যা হল আদালতে

হাই কোর্ট এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন খারিজ করে দিলে গত ১৪ নভেম্বর আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবীরা।

এর ধারাবাহিকতায় গত ২৮ নভেম্বর আপিল বিভাগ জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়া আগে খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা জানতে মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন চায়।

গত ৫ ডিসেম্বর বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রতিবেদন দিতে না পারায় এজলাসে তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তাদের আরও ছয় দিন সময় দিয়ে ১২ ডিসেম্বর আদেশের দিন ঠিক করে আদালত।

সেদিনের হট্টগোলের পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালত কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নেয় হয় কড়া নিরাপত্তা।

আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত না হলে আইনজীবীদের আদালত কক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় সকালে আদালত বসার পর প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেনে খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।

তিনি অভিযোগ করেন, রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সবাই ভেতরে ঢুকতে পারলেও বিএনপিপন্থিদের তালিকাভুক্তি আছে কি না তা দেখা হচ্ছে। এমনকি তার জুনিয়রকেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি।

পরে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম আইনজীবী জয়নুল আবেদীনের মতামতের ভিত্তিতে প্রধান বিচারপতি দুই পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবী থাকার অনুমতি দেন।

ঠিক হয়, খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি শুরুর আগে ৫ মিনিট সময় দেওয়া হবে। তখন সবাই বেরিয়ে গিয়ে আবার ঢুকবে। উভয় পক্ষের ৩০ জন করে আদালতকক্ষে থাকতে পারবে।

কিন্তু সকাল সোয়া ১০টার দিকে আপিল বিভাগে খালেদার মামলার শুনানি শুরু হলে দেখা যায় কোনো পক্ষই বেঁধে দেওয়া সংখ্যা মানেনি।

এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি দুই পক্ষের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা কেউ কথা শোনেননি।”

এরপর প্রধান বিচারপতি খালেদা জিয়ার সর্বশেষ স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন চাইলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল বোর্ডের প্রতিবেদন জমা দেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল আলী আকবর।

প্রতিবেদন নিয়ে প্রথমে কথা বলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম । পরে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বক্তব্য তুলে ধরেন।

শুনানিতে তিনি বলেন, “এই আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা নিয়ে বলেছিলাম, মানবিক বিবেচনায় খালেদা জিয়াকে জামিন দেওয়া হোক। এই আদালতের প্রতি আমাদের সেই আস্থা এখনও আছে। আমরা তার সাথে (খালেদা জিয়ার সাথে) দেখা করতে গিয়েও দেখা করতে পারিনি।

“তার আত্মীয়-স্বজনরা এসে জানিয়েছেন, তার অবস্থা খুবই খারাপ। মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টেও তাই এসেছে। দিন দিন তার অব্স্থা খারাপ হচ্ছে। আমরা মানবিক কারণে খালেদা জিয়ার জামিন চাইছি। এমন তো না যে, জামিন পেলে তিনি পালিয়ে যাবেন। ”

জয়নুল আবেদীন বলেন, “তার উন্নত এবং যথাযথ চিকিৎসা প্রয়োজন। তিনি এখন এমন অবস্থায় আছেন যে তাকে ওষুধ প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। খালেদা জিয়ার অবস্থা এমন যে, তিনি পঙ্গু অবস্থায় চলে যাচ্ছেন। আর কিছুদিন গেলে হয়তো লাশ হয়ে বেরুবে।

“আপিল বিভাগ ১০ বছর সাজার আসামিকেও জামিন দিয়েছে। পাকিস্তানের মত বর্বর দেশেও নওয়াজ শরীফকে মেডিকেল গ্রাউন্ডে জামিন দিয়েছে, এয়ার অ্যাম্বুল্যান্সে করে লন্ডনে পঠিয়েছে। মানবিক বিবেচনায় আমরা তার (খালেদা জিয়া) জামিন চাইছি।”

খালেদা জিয়ার এ আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর বেলা ১১টায় আদালত বিরতিতে যায়। সাড়ে ১১টায় আদালত আবার বসে। প্রধান বিচারপতি তখন খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেনের বক্তব্য শুনতে চান।

খন্দকার মাহবুব হোসেন এ সময় বলেন, “আমাদের দেশে বলা হয় রাজনীতি আর জেলখানা পাশাপাশি। আমরা জানি- সত্য-মিথ্যা যাই হোক না কেন রাজনীতি করলে জেলে যেতেই হয়। আর একবার জেলে গেলে তার মত খারাপ লোক আর হয় না। আর ক্ষমতায় থাকলে ফেরেস্তা, সবই ভাল। আমরা সবদিক বিবেচনাতেই উনার (খালেদা জিয়ার) জামিন চাচ্ছি।”   

এরপর জামিনের বিরোধিতা করে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বলেন, “দুই মামলায় (জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা ও জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট মামলা) তিনি (খালেদা জিয়া) ১৭ বছরের সাজা ভোগ করছেন। এটাকে কোনোভাবেই শর্ট সেনটেন্স বলা যায় না। তাছাড়া দুই মামলাতেই আপিল শুনানির জন্য রেডি। এই অবস্থায় জামিন হওয়া উচিৎ নয়। আপিল বিভাগ দ্রুত আপিল নিষ্পত্তির জন্য সময় বেঁধে দিয়ে আদেশ দিতে পারে।”

দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সর্বশেষ মেডিকেল রিপোর্ট থেকে উদ্ধৃত করে শুনানিতে বলেন, “চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার সম্মতি পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে চিকিৎসকরা তার যথাযথ চিকিৎসা দিতে পারছেন না। আমরা তার জামিন আবেদন নাকচ করার আর্জি জানাচ্ছি।”

জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় হাই কোর্ট খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছিল। আপিল বিভাগ সে জামনি বহাল রেখেছিল।

সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে খুরশীদ আলম খান বলেন, “আগের একটি মামলায় হাই কোর্টের আদেশে যদি আপিল বিভাগ হস্তক্ষেপ না করে, তাহলে এ মামলায়ও হাই কোর্টের আদেশে আপিল বিভাগের হস্তক্ষেপ করা উচিৎ হবে না।

“তাছাড়া চিকিৎসায় উনি সম্মতি দিচ্ছেন না। তাহলে বোর্ডই কী করবে, আর চিকিৎসকই বা কী করবে?”

তিন পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বেলা ১টায় প্রধান বিচারপতি বলেন, “আমরা একটু নামবো। প্রত্যেকের (প্রধান বিচারপতিসহ ছয় বিচরকের) আলাদা আলাদা মত নিতে হবে। এসে আদেশ দেব।” 

বেলা সোয়া ১টায় এসে সিদ্ধান্ত জানায় আপিল বিভাগ।

প্রধান বিচারপতি বলেন, “এই সিদ্ধান্তটা সর্বসম্মতিক্রমে হয়েছে। কিছু পর্যবেক্ষণসহ আবেদনটি নিষ্পত্তি করা হল। যদি আবেদনকারী (খালেদা জিয়া) সম্মতি দেয়, তাহলে বোর্ডের সুপারিশ অনুযায়ী দ্রুত ‘অ্যাডভান্সড ট্রিটমেন্টের জন্য মেডিকেল বোর্ডকে পদক্ষেপ নিতে বলা হল।”

পুরনো খবর