খালেদার জামিন শুনানিতে দুই পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবী

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন শুনানিতে দুই পক্ষের ৩০ জন করে আইনজীবীকে আদালত কক্ষে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Dec 2019, 05:07 AM
Updated : 12 Dec 2019, 05:34 AM

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার পর প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে ৬ বিচারকের আপিল বেঞ্চে এই শুনানি শুরু হয়েছে।

দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ড মাথায় নিয়ে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া গত এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বিভিন্ন মামলায় জামিন হওয়ার পর জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় জামিন হলেই তার মুক্তির পথ খুলবে বলে তার আইনজীবীরা আশা করছেন।

গত ৫ ডিসেম্বর আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চে এই আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ চিকিৎসা প্রতিবেদন দিতে না পারায় এজলাসে তুমুল হট্টগোলের মধ্যে তাদের আরও ছয় দিন সময় দিয়ে ১২ ডিসেম্বর আদেশ দেওয়ার দিন ঠিক করে আদালত।

সেদিনের হট্টগোলের পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির আদালত কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে নেয় হয়েছে কড়া নিরাপত্তা।

আদালতের ফটকে প্রবেশের সময় সবার পরিচয়পত্র দেখা হচ্ছে। আপিল বিভাগে আদালত কক্ষের বাইরে আর্চওয়ে বসানোর পাশাপাশি বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী সারিবদ্ধভাবে অবস্থান নিয়ে আছেন।

আপিল বিভাগের তালিকাভুক্ত না হলে আইনজীবীদের কাউকে আদালত কক্ষে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। সেখানে নিরাপত্তায় থাকায় কর্মীরা সবার কার্ড দেখে তারপর ভেতরে ঢোকার অনুমতি দিয়েছেন।

সকাল ৯টায় আদালত বসার পর খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, “আপনারা আমাদের শেষ ভরসাস্থল। বাইরে আমার শত শত আইনজীবী দাঁড়িয়ে আছে, কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না। অথচ ডিএজি, এএজি প্রায় সব ঢুকে বসে আছে।”

প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপিল বিভাগে এনরোলমেন্ট ছাড়া কাউকে ঢুকতে দেওয়া হবে না। আমি একা এই সিদ্ধান্ত নিই নাই, সবাই মিলে নিয়েছি।”

খন্দকার মাহবুব তখন বলেন, “আমি সে কথা বলছি না। ডিএজি, এএজি সবাই ঢুকেছে। এই ডিসক্রিমিনেশন কইরেন না। আমার জুনিয়রকে পর্যন্ত ঢুকতে দেওয়া হয়নি। আমি একজন বয়স্ক মানুষ। বুড়ো বয়সে আমাকে ফাইল নিয়ে আসতে হয়েছে।”

প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপনার জুনিয়র অবশ্যই ঢুকবে।”

খন্দকার মাহবুব বলেন, “ঢুকতে দিচ্ছে না তো। আমরা আশ্বস্ত করছি কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না। যারা সিনিয়র আছি বিষয়টা দেখব।”

গত সপ্তাহের শুনানির কথা মনে করিয়ে দিয়ে প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, “আপনরা তো করেননি, দেখেননি।”

খালেদার আইনজীবী বলেন, “শত শত পুলিশ রাইফেল নিয়ে দাঁড়ায়ে আছে। আর আমার শত শত আইনজীবীও দাঁড়িয়ে আছে। এতে বিশৃঙ্খলা হতে পারে।”

তখন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম দাঁড়িয়ে বলেন, “উনাদের কতজন লাগবে বলে দেন। উভয়পক্ষের ২০ জন অথবা ৩০ জন করে থাকতে পারে।”

বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তখন বলেন, যারা আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত, তাদের মধ্যে থেকে ৩০ জন করে থাকতে পারে।

অ্যাটর্নি জেনারেল তখন প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ করে বলেন, “রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলেন ৩০টা করে স্লিপ দিতে। আমরা সবাই বের হয়ে যাব। স্লিপ নিয়ে পরে ঢুকব।”

প্রধান বিচারপতি তখন বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার শুনানি শুরুর আগে ৫ মিনিট সময় দেওয়া হবে। তখন সবাই বেরিয়ে গিয়ে আবার ঢুকবে। উভয় পক্ষের ৩০ জন করে আদালতকক্ষে থাকতে পারবে।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আপিল বিভাগে তালিকাভুক্ত মোট আইনজীবীর সংখ্যা ৬১৩ জন।