সন্দেহ থাকলে আদালতকে বলুন: ফখরুলকে কাদের

কারাবন্দি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যবিষয়ক প্রতিবেদন নিয়ে সন্দেহ থাকলে তা আদালতকে জানাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বলেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Dec 2019, 03:54 PM
Updated : 11 Dec 2019, 03:54 PM

সুপ্রিম কোর্টে খালেদা জিয়ার জামিন শুনানির আগের দিন আদালতের চাওয়া অনুসারে তার স্বাস্থ্যগত প্রতিবেদন বুধবার বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ পাঠালেও ঠিক প্রতিবেদনটি গেছে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন ফখরুল।

বুধবার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দলের ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার বর্ধিত সভায় বক্তব্যে বিএনপি নেতার উদ্দেশে কাদের বলেন, “সব কিছুতেই তাদের সন্দেহ।

“দেশের সর্বোচ্চ আদালতে গিয়ে বলুন যে, এই রিপোর্টে আপনাদের সন্দেহ রয়েছে। এই নালিশ কার কাছে দিচ্ছেন? আদালকে বলুন, আপনাদের আইনজীবীরা বলুক এই রিপোর্ট সন্দেহজনক। আদালতই সেটা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখবে।”

বিএনপি চিকিৎসকদের প্রতিবেদন নিয়েও অপরাজনীতি করছে বলে মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

“মেডিক্যাল বোর্ডে তাদের পছন্দের ডাক্তারও রয়েছে। মেডিক্যাল বোর্ড বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে রিপোর্ট দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল বলছেন, এই রিপোর্টে তাদের সন্দেহ আছে। প্রত্যেকটা বিষয়ে তারা তাদের নেতিবাচক রাজনীতির বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে।”

দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলনের নামে অস্থিরতা সৃষ্টির পাঁয়তারা হলে তার কঠোর জবাব দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “কালকে আদালতে রায় হবে, একটু আগে খবর পেলাম হাই কোর্টের কাছে একটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়েছে। তারা আদালতকে ভয় দেখাচ্ছে। আবারও অগ্নি সন্ত্রাসের হুমকি দিচ্ছে।

“আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আজকে বেগম জিয়ার মুক্তিকে কেন্দ্র করে তারা আন্দোলনের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। চক্রান্তের জবাব দিতে আওয়ামী লীগ প্রস্তুত। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার সক্ষমতা আওয়ামী লীগের আছে। এটা পঁচাত্তর সাল নয়, এটা ২০০৪ সালও নয়।”

দলের নেতা-কর্মীদের বৃহস্পতিবার সতর্ক থাকার নির্দেশনা দিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “গায়ে পড়ে আক্রমণ করবেন না। কিন্তু আক্রান্ত হলে কি আমরা ছেড়ে দেব? আক্রান্ত হলে কী করতে হবে, নির্দেশ আমরা দেব। নির্দেশের বাইরে আমরা কিছু করব না।

“আমরা ক্ষমতাসীন পার্টি, আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। আমরা এমন কোনো কাজ করব না, যাতে পাবলিক আমাদের ভুল বোঝে। জনগণের কাছে যেটা গ্রহণযোগ্য, সেটাই আমরা করব।”

‘বন্দুক উঁচিয়ে ক্ষমতা দখলের  দিন শেষ’

বিএনপি এবং গণফোরাম সভাপতি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা কামাল হোসেনকে উদ্দেশ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক কাদের বলেছেন, নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথে ক্ষমতার পরিবর্তন হবে না।

“এই সরকার জনগণের সরকার, জনগণ চাইবে আমরা বিধায় নেব। জনগণ কাকে চায়, এটা দেখার জন্য আরেকটা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। ক্ষমতার পরিবর্তন নিয়ে, যে যেটাই ভাবুন, যতই স্বপ্ন দেখুন, অন্য কোনোভাবে হবে না।

“ক্ষমতার পরিবর্তন আরেকটা নির্ববাচন ছাড়া সম্ভব না। বাংলাদেশে বন্দুক উঁচিয়ে ক্ষমতা দখলের দিন শেষ। সে অবস্থা আর দেশে ফিরে আসবে না।”

আওয়ামী লীগের এক সময়ের নেতা কামাল হোসেনকে নিয়ে কাদের বলেন, “প্রবীণ মানুষ, আমরা তাকে সন্মান করি। তার বক্তব্য আমরা দেখেও না দেখার ভান ধরি।

“রাজনীতিতে জনগণের কাছে তার অবস্থানটা কী, এটা তার একটু ভেবে দেখা উচিৎ। তার কাছ থেকে আমরা অশালীন, অমার্জিত বক্তব্য আশা করি না। যদি তার সে ধরনের সাহস থাকত নির্বাচনে অংশ নিতেন। নির্বাচন না করে আজকে তার ফ্রন্টের পরাজয়ের পর আবোল-তাবোল বকতে শুরু করেছেন।”