স্বচ্ছ নেতৃত্ব পেতে সম্মেলনে বসছে ঢাকা মহানগর উত্তর- দক্ষিণ আ. লীগ

স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে নতুন নেতৃত্বের আশায় সম্মেলনে বসছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দুই শাখা ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ।

কাজী মোবারক হোসেন নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2019, 07:17 PM
Updated : 29 Nov 2019, 07:17 PM

ক্যাসিনোকাণ্ডে খড়গ নেমে আসার পর যুবলীগের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আরও তিনটি সহযোগী সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ একসঙ্গে ঘোষণা করা হয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে। এর সঙ্গে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগেরও সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার সকাল ১১টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন।

এরপর বিকাল ৩টায় রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে কাউন্সিল অধিবেশনে বসবেন কাউন্সিলররা। কাউন্সিল অধিবেশনে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।

সর্বশেষ ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তর-দক্ষিণ, ৪৫টি থানা এবং ১০০টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম।

তখন ঢাকা মহানগর উত্তরে আওয়ামী লীগের সভাপতি করা হয় এ কে এম রহমতুল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক করা হয় সাদেক খানকে। দক্ষিণের সভাপতি হন আবুল হাসনাত ও সাধারণ সম্পাদক হন শাহে আলম মুরাদ।

তিন বছর পর সম্মেলনকে ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের মহানগরের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে। নানা কারণে যারা দুর্নাম কুড়িয়েছেন, এমন নেতারা এবার বাদ পড়বেন বলেও তাদের আশা।

এবারের নেতৃত্ব কেমন হতে পারে জানতে চাইলে সম্মেলনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফারুক খান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আওয়ামী লীগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সবগুলো কমিটিতেই নবীন প্রবীণের সমন্বয় থাকে, এই দুই ইউনিটের নেতৃত্বেও তা হবে।

“দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, বিতর্কিত কর্মকাণ্ড, ভাবমূর্তি খারাপ এমন কেউ নেতৃত্বে আসতে পারবে না।”

যারা নেতৃত্বে আসবে, তাদের অবশ্যই তিনটি গুণ থাকতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “যাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে তার দলের সাথে সম্পৃক্ততা, কর্মীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা ও দায়িত্ব পালনে সক্ষমতা থাকতে হবে। কোনো অনিয়মের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকলে এই সব ক্রাইটেরিয়া থাকলেও বাদ পড়বেন।”

আওয়ামী লীগের ঢাকার দুই শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে লড়াইয়ে অন্তত এক ডজনেরও বেশি নেতা রয়েছেন।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে শুক্রবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পরিদর্শন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাইদ খোকন।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি কাজী মো. নজিবুল্লা হিরু, আওয়ামী লীগের সাবেক স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কেন্দ্রীয় সদস্য কামরুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণের সহ-সভাপতি মো. আবুল বাশার, হুমায়ুন কবির, আবু আহমেদ মান্নাফি।

সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বাবু, মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম আশরাফ তালুকদার, মোর্শেদ কামাল, সূত্রাপুর থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গাজী আবু সাঈদ, ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মামুন রশিদ শুভ্র ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রয়াত এম এ আজিজের ছেলে তামিম আজিজ।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে আলোচনায় আছেন উত্তরের সহ- সভাপতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এম এ কাদের খান, আসলামুল হক ও বজলুর রহমান।

সাধারণ সম্পাদকের আলোচনায় আছেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, হাবিব হাসান, দপ্তর সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফুল, কোষাধ্যক্ষ ওয়াকিল উদ্দিন, সহ-প্রচার সম্পাদক আজিজুল হক রানা।

এছাড়া ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান এবং দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ আবারও মহানগরের কমিটিতে থাকতে আগ্রহের কথা জানিয়েছেন।

মুরাদ বলেন, “নেত্রী আমাকে আবার দায়িত্ব দিলে পালন করব।”একই কথা বলেন সাদেক খান: “নেত্রী যেখানে যে দায়িত্ব দেবেন, সেটাই যথাযথভাবে পালন করব।”

সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার কথা জানিয়েছেন মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।

কত জন কাউন্সিলর জানতে চাইলে মাহনগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান বলেন, “আমাদের উত্তরে প্রায় এক হাজার কাউন্সিলর।”

দক্ষিণেও হাজারখানেক কাউন্সিলর থাকবেন বলে নেতারা জানিয়েছেন।