বিএনপির মুখ ছাড়া সব সরকারের নিয়ন্ত্রণে: কাদের

দেশের সার্বিক পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে দাবি করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুধু বিএনপির মিথ্যাচার ও অপপ্রচারে তাদের কোনো হাত নেই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Nov 2019, 11:15 AM
Updated : 22 Nov 2019, 11:15 AM

যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসের প্রস্তুতি পরিদর্শন করতে গিয়ে শুক্রবার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

ভারত রপ্তানি বন্ধ করার পর দেড় মাস ধরে পেঁয়াজের বাজারের অস্থিরতার পর লবণ নিয়ে গুজব ও চালের দাম বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে ১৯৭৪ সালের মতো অস্থিরতার আলামত দেখতে পাচ্ছেন বলে আগের দিন মন্তব্য করেন মওদুদ আহমদ।

এক দোয়া মাহফিলে এই বিএনপি নেতা বলে বলেন, “পেঁয়াজের সমস্যা নিয়ে আজকে বাংলাদেশের মানুষ ক্ষুব্ধ। একটা সরকার যে একটি সামান্য পণ্যের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে পারে না সেই সরকারের মনে হয় আর ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার থাকে না। পেঁয়াজের পরে আসলো লবণ, এখন চালের দাম একদিনে পাঁচ টাকা বেড়েছে।

“চুয়াত্তর সাল এখনও আমার চোখের সামনে ভাসছে। চুয়াত্তর সালের যে ঘটনা বাংলাদেশে, যে অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা বিরাজ করছিল, যে অস্থিরতা বিরাজ করছিল, আজকে সেই একই পদধ্বনি আমি শুনতে পাচ্ছি।”

এ মন্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়াম লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “আমাদের সবকিছুর ওপর এখন নিয়ন্ত্রণ আছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতির ওপর আমাদের নিয়ন্ত্রণ আছে।

“কিন্তু আমাদের নিয়ন্ত্রণ নেই এক জায়গায়, সেটা হচ্ছে বিএনপির মুখের ওপর। তাদের যে মুখের ভাষা, মিথ্যাচার-অপ্রপচার এর ওপর আমাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।”

দেশের বিভিন্ন জায়গায় গণপরিবহন ধর্মঘট ও দেশজুড়ে পণ্য পরিবহণ ধর্মঘটের প্রত্যাহার করা হলেও অনেক জায়গায় এখানও যান চলাচল স্বাভাবিক হয়নি।

এবিষয়ে জানতে চাইলে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “সড়ক পরিবহন নিয়ে যে সমস্যা ছিল, মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনার পর গভীর রাতে (পরশু রাতে) এটা সমঝোতা হয়েছে, সমাধান হয়েছে।

“গতকাল থেকে ঢাকাসহ আশপাশের এলাকায় সব ধরনের যান চলছে। কোথাও কোথাও বিঘ্ন ঘটেছে- এটা আজ থেকে স্বাভাবিক হয়ে যাবে।”

যুবলীগের কংগ্রেস

শনিবার কেন্দ্রীয় কংগ্রেসের দিন ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ যুবলীগের নেতৃত্ব ঘোষণা করা হবে কি না জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলন ছাড়া নতুন নেতৃত্ব ঘোষণার সুযোগ নেই।

“সম্মেলন ছাড়া উত্তর-দক্ষিণ কমিটি আমরা করবো কীভাবে? আমরা আশা করছি, আমাদের (দলের) জাতীয় কাউন্সিলের পর মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের আয়োজন করবে যুবলীগের নতুন কমিটি।”

যুবলীগের নতুন কমিটি কীভাবে গঠিত হবে সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “যুবলীগের নেতৃত্ব বাছাই কাউন্সিলররা ঠিক করবে। তাদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। তাদের সম্মতিতে পরবর্তী নেতৃত্ব আসবে।

“এখানে অবশ্যই আমাদের অভিভাবক সভাপতি রাষ্ট্রনায়ক দেশরত্ন শেখ হাসিনার মূল্যবান পরামর্শ আমরা নেব নেতৃত্বের দ্বার উন্মোচনে। এখানে কে নেতা হবেন তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।”

তিনি বলেন, যুবলীগের জাতীয় কংগ্রেসর কাউন্সিল অধিবেশনে চেয়ারম্যান-সাধারণ সম্পাদক পড়ে প্রার্থীদের নাম চাওয়া হয়েছে। একাধিক প্রার্থী হলে একজনকে বাছাইয়ের জন্য সময় দেওয়া হবে। তার মধ্যে কাউন্সিলররা সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ ও শেখ হাসিনার সঙ্গে আলাপ করে নতুন চেয়ারম্যান-সম্পাদকের নাম ঘোষণা করা হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, “যদি যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির রক্তের উত্তরাধিকারকে কাউকে এখানে চায় পরবর্তী নেতা হিসেবে, সেটা অবশ্যই যুবলীগের অধিকার আছে।”

যুবলীগের অনেকের বিরুদ্ধে কংগ্রেসে সংশ্লিষ্টতা না থাকার নির্দেশ রয়েছে, এক্ষেত্রে সম্মেলনে কারা থাকতে পারবে, কারা থাকতে পারবে না-এমন কোনো নির্দেশনা আছে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “যতক্ষণ না যুবলীগের সম্মেলন কাউন্সিল অধিবেশন এবং বিদায়ী কমিটি বিলুপ্ত হবে। আপনারা এর আগে লক্ষ্য করেছেন, বিদায়ী কমিটির বিলুপ্ত হওয়া পর্যন্ত তারা কিন্তু থাকবেন না। কিন্তু কাউন্সিল পর্যন্ত বর্তমান কমিটিতে যারা আছে তারা বয়সের ক্যাটাগরি এখানে কাজ করবে। কাজ করবেন পরবর্তী নেতৃত্ব নির্বাচনে। এখন যরা আছেন তারা নতুন কমিটি ঘোষনা পর্যন্ত সম্মেলনে থাকতে পারবেন।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংঘঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, যুবলীগের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক চয়ন ইসলাম উপস্থিথ ছিলেন।