জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট: খালেদার জামিন শুনানি ২৫ নভেম্বর

জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছে চেম্বার আদালত।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 03:58 PM
Updated : 17 Nov 2019, 03:58 PM

আগামী ২৫ নভেম্বর শুনানির জন্য রেখে রোববার এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি মো.নুরুজ্জামান।

এদিন খালেদা জিয়ার আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “স্বাভাবিকভাবে পাঁচ থেকে দশ বছরের সাজা হলে হাই কোর্ট থেকে জামিন হয়। কিন্তু বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে বহু চেষ্টা করেও জামিন পাওয়া যায়নি।

“শেষ পর্যন্ত জামিন খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করতে বাধ্য হয়েছি। আবেদনটি নিয়ে চেম্বার আদালতে গিয়েছিলাম, সেখানে জামিন চেয়েছিলাম। আদালত আগামী ২৫ নভেম্বর আপিলের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়েছেন। সেখানে আমরা ন্যায়বিচার পাব বলে আশা করি।”

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।

খুরশীদ আলম খান পরে সাংবাদিকদের বলেন, “আইনগত দিক পর্যালোচনা করে, আইনগত ব্যাখ্যা দিয়ে আমরা এর বিরোধিতা করব।”

হাই কোর্ট বেঞ্চে গত ৩১ জুলাই খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদনটি খারিজ করে দিলে গত বৃহস্পতিবার আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের আইনজীবী কায়সার কামাল।

খালেদা জিয়ার জামিন সরকার ‘আটকে রেখেছে’ বলে বিএনপি বরাবর অভিযোগ করে এলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, জামিনের বিষয়টি পুরোপুরি আদালতের এখতিয়ার, এক্ষেত্রে সরকারের কিছু করার নেই।

দেড় বছরের বেশি সময় ধরে কারাবন্দি খালেদা জিয়া জামিন পেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাবেন বলেও জানিয়েছিলেন বিএনপি নেতারা।

জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা প্রায় সোয়া ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের দায়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চার আসামির সবাইকে সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে গত বছর ২৯ অক্টোবর রায় দেয় বিচারিক আদালত।

পাশাপাশি তাদের ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আর ট্রাস্টের নামে কেনা কাকরাইলের ৪২ কাঠা জমি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত ঘোষণা করা হয়।

ঢাকার পঞ্চম বিশেষ জজ আখতারুজ্জামান এ মামলার রায় ঘোষণা করেছিলেন। রায়ের সত্যায়িত অনুলিপি হাতে পাওয়ার চার দিন পর গত বছর ১৮ নভেম্বর খালেদার দণ্ড বাতিল ও খালাস চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন তার আইনজীবীরা।

৬৩৮ পৃষ্ঠার মূল রায়সহ প্রায় ৭০০ পৃষ্ঠার এই আপিলের সঙ্গে হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় খালেদার জামিন আবেদনও করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল ওই আপিল আবেদন শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট।

সেদিন বিচারিক আদালতের রায়ে দেওয়া অর্থদণ্ড স্থগিত এবং সম্পত্তি জব্দের আদেশে স্থিতাবস্থা দেওয়ার পাশাপাশি খালেদার জামিন আবেদনটি নথিভুক্ত করে মামলার নথি তলব করেছিল হাই কোর্ট।

তলবের দুই মাসের মধ্যে গত ২০ জুন এ মামলার রেকর্ড (মূল নথি) হাই কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় জমা পড়লে গত ২৩ জুন নথিভুক্ত জামিন আবেদনটি উপস্থাপন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। এরপর খালেদা জিয়া ও দুদকের আইনজীবীর বক্তব্য শোনে আদালত।

অপরাধের গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট আইনের সর্বোচ্চ সাজা এবং বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদাসহ অন্য আসামিদের করা আপিল শুনানির জন্য প্রস্তুত- এ তিন বিবেচনায় বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ গত ৩১ জুলাই খালেদা জিয়ার জামিন আবেদনটি খারিজ করে দেয়।