ভারতের সঙ্গে চুক্তি প্রকাশের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে বিএনপির চিঠি

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় হওয়া চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের বিস্তারিত প্রকাশের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Nov 2019, 08:52 AM
Updated : 17 Nov 2019, 06:44 PM

রোববার বেলা ১২টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত চিঠি দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল ও খায়রুল কবির খোকন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছে দেন।

প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ও আওয়ামী লীগের উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া চিঠি গ্রহণ করে বিএনপি নেতাদের বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে আমি আপনাদের চিঠি গ্রহণ করলাম। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এখন সংযুক্ত আরব আমিরাতে সরকারি সফরে রয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরে আপনাদের চিঠিটি পৌঁছে দেব।”

এসময় প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-২ ওয়াহিদা আক্তার, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার এবং সহকারী প্রেস সচিব এম এম ইমরুল কায়েস উপস্থিত ছিলেন।

পরে সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, “দলের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বরাবর মহাসচিবের স্বাক্ষর করা চিঠিটি আমরা প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার কাছে দিয়ে এসেছি। চিঠিটি তারা গ্রহণ করেছেন।”

এই মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর এটি প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া বিএনপির মহাসচিবের এটাই প্রথম চিঠি।

তবে এই চিঠিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে কিছু বলা হয়‌নি বলে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের একজন কর্মকর্তা জানান।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিঠি হস্তান্তরের সময় বিএনপি নেতাদের পক্ষ থেকেও খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং চিকিৎসার বিষয়ে কোনো আলোচনা করা হয়নি।”

গত মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়া দিল্লি সফরের সময় ভারতের সঙ্গে সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা সই এবং তিনটি যৌথ প্রকল্প উদ্বোধন হয়। স্বাক্ষরিত চুক্তিতে ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার এবং এলপিজি রপ্তানির সুযোগ দেওয়া নিয়ে দেশে সমালোচনা হয়।

প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া বিএনপির এক পৃষ্ঠার চিঠিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদশের সংবিধানের আর্টিকেল ১৪৫ (ক) তে উল্লেখ আছে যে- বিদেশের সাথে সম্পাদিত সকল চুক্তি রাষ্ট্রপতির নিকট পেশ করা হবে এবং রাষ্ট্রপতি তা সংসদে পেশ করার ব্যবস্থা করবেন। তবে শর্ত হচ্ছে যে, জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট অনুরূপ কোনো চুক্তি কেবলমাত্র সংসদের গোপন বৈঠকে পেশ করা হবে।

“কিন্তু ভারতের সাথে যেসব চুক্তি স্বাক্ষর করা হলো তার কোনটি জনসমক্ষে কিংবা জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করা হয়নি। এর ফলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণই এই সকল চুক্তির খুঁটিনাটি এবং বিস্তারিত বিবরণ সম্পর্কে পুরোপুরি অন্ধকারে রয়েছে। অথচ এই সকল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ চুক্তির বিষয়ে অভিহিত থাকা জনগণের মৌলিক অধিকার, যে অধিকার থেকে জনগণকে বঞ্চিত রাখা স্পষ্টতই সংবিধানের লঙ্ঘন।”

“এমতাবস্থায় সংবিধানের আর্টিকেল ১৪৫ (ক) অনুযায়ী ভারতের সাথে এবং অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তির পূর্ণ বিবরণী অনতিবিলম্বে জাতীয় সংসদ ও জনসম্মুখে প্রকাশ করে জনমনে সৃষ্ট নানবিধ প্রশ্ন ও সন্দেহ দূর করার আহ্বান জানাচ্ছি,” বলা হয়েছে চিঠিতে।