বুধবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভায় ছাত্রদলের দুই সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন ও শফিউল বারী বাবুর সঙ্গে বিশেষ অতিথি ছিলেন নূর।
আয়োজক সংগঠন বাংলাদেশ মহিলা বিজ্ঞান সমিতির সভাপতি অধ্যাপক শাহিদা রফিকের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব। ডাকসুর আরেক সাবেক ভিপি ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাও ছিলেন বিশেষ অতিথি।
গত ১১ মার্চের ডাকসু নির্বাচনে নূর ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর বিএনপি ও রব-মান্নাদের জোটের নেতৃত্ব দেওয়া কামাল হোসেনের দল গণফোরামের ইফতার মাহফিল ও অন্য একটি কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন নূর।
‘ছাত্র রাজনীতি: অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ’ শিরোনামের এই আলোচনা সভায় সরকার হটাতে ছাত্রদের ভূমিকা প্রত্যাশা করেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
তিনি বলেন, “আমাদের দেশের ছাত্ররাই হচ্ছে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ‘ভ্যানগার্ড’। সেটা বাহান্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত তাই চলেছে।
“যতদিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের সংকট থাকবে ততদিন পর্যন্ত গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড ছাত্ররাই হবে। আমরা ছাত্রদেরকে সত্যের ধারক-বাহক দেখতে চাই।”
গণভবনে রাজনৈতিক দলের বৈঠক ‘অবৈধ’ বলে মন্তব্য করেন জেএসডি সভাপতি রব।
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনি গণভবনে বইসা কমিটি করেন, কমিটি বাতিল করেন। এখানে আগেরটা (ছাত্রলীগ) প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারিকে বাতিল করছেন। আপনি শ্রমিক লীগের কমিটি, যুব লীগের কমিটি করেন।
“গণভবন আমাদের জনগণের টাকায়, রাষ্ট্রীয় টাকায় চলে। আপনার কোনো অধিকার নেই আপনার দলের কোনো মিটিং করার এখানে। এটা অবৈধ, অন্যায়।”
“শান্তিপূর্ণভাবে যাবেন, সুন্দরভাবে যাবেন? রাষ্ট্রটাকে অকার্যকর করে দিয়েছেন আপনারা। আপনাদের ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। ভদ্রভাবে চলে যান। না গেলে কীভাবে যেতে বাধ্য করা হয়, সেটা এদেশের যুব ও ছাত্রসমাজ জানে।”
‘ওরা ভিসি না, ওসি’
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উপাচার্যদের সমালোচনা করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মান্না বলেন, “এগুলো ভিসি না, ওসি- বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যারা আছেন। একেকজন ভিসি মনে হয় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সর্বকনিষ্ঠ সদস্য। এমনভাবে কথা-বার্তা বলেন যে, ওরা কেবল অনুগ্রহ পাওয়ার বাইরে কিছু করেন বলে মনে হয় না।”
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নিয়ে তিনি বলেন, “একজন ভিসিকে রক্ষা করার জন্য এত চেষ্টা করছে কেন? খোদ প্রধানমন্ত্রী কেন তার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন? মাথার মধ্যে চিন্তা ঢুকেছে বরিশাল রাখতে পারলাম না, গোপালগঞ্জ রাখতে পারলাম না, জাহাঙ্গীনগর তাও আবার ছোট বোনের বান্ধবী তাকেও যদি রাখতে না পারি তাহলে তো কিছুই রাখতে পারব ন।
“অ্যান্ড ইট ইজ দ্যা ফ্যাক্ট। অবস্থা সেদিকে যাচ্ছে। মৃত্যুঘণ্টা বাজছে। উনারা টের পাচ্ছেন, আমরা এখনও অনেকে টের পাচ্ছি না। আমাদের এখন সাহস করে বলা দরকার- এনাফ ইজ এনাফ, ১০ বছর জবর দখল করে রেখেছেন, এবার ভালোয় ভালোয় চলে যান।
“যদি চলে না যান এই ছাত্র সমাজ তাদের বিদায়ের ঘণ্টা বাজিয়ে দেবে।”
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “ছাত্ররা রাজনীতি করবে, জাতীয় রাজনীতি করবে। যদি পেঁয়াজের দামের কথা বলে, যদি চালের দামের কথা বলে, যদি অন্য যে কোনো জিনিসের মূল্য যেভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে তার ব্যাপারে কথা বলে তাহলে বেগম জিয়ার (খালেদা জিয়া) মুক্তির দাবি করতে পারে তারা (ছাত্ররা)।
“এটা তো দলীয় লেজুড়বৃত্তি করা হয়ে গেল। তখন আপনারাই বলবেন দলীয় লেজুড়বৃত্তি চলবে না। তাহলে বেগম জিয়া জেল খাটতে খাটতে মারা যাবেন, ছাত্ররা তাকিয়ে তাকিয়ে দেখবেন। ওই রকম ছাত্র রাজনীতি আমাদের দেশে কখনও হয়নি।”