নেতা হলেই গাড়ি-বাড়ির অভাব হয় না: রাষ্ট্রপতি

একটি শ্রেণি রাজনীতিকে ‘ব্যবসা আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে মন্তব্য করে তাদের হুঁশিয়ার করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 02:54 PM
Updated : 11 Nov 2019, 02:54 PM

তিনি বলেছেন, “রাজনীতিতে এ সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে, অন্যথায় রাজনীতি ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা ও আগ্রহ কমে যাবে। সৎ ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে ওঠার পথ রুদ্ধ হবে। রাজনীতি তখন আর রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়।”

সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধানের এমন বক্তব্য আসে।

তিনি বলেন, রাজনীতিবিদের জন্য নীতি ও আদর্শ মেনে চলা জরুরি। দেশ, জাতি ও দল পরিচালনায় নেতৃত্বের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

“নেতৃত্ব সঠিক পথে পরিচালিত হলে দেশ, জাতি এবং দলও সঠিক পথে এগিয়ে যায়। দেশের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হয়। দলের প্রতি জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস বাড়ে। মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব কেউ কাউকে দেয় না। এটা ধারাবাহিক অনুশীলনের মাধ্যমে অর্জন করতে হয়।”

টানা দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করে চলা আবদুল হামিদ বলেন, হঠাৎ করে টাকা বা ক্ষমতার জোরে নেতা হওয়া যায়, কিন্তু জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা যায় না। রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলের জন্য জনগণের আস্থা ও সমর্থন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।

“রাজনীতি কোনো পেশা নয় যার বিনিময়ে গাড়ি-বাড়ি করা যায়। কিন্তু আজকাল দেখা যায় ছোটোখাটো নেতা হলেই টাকা, গাড়ি আর বাড়ির অভাব হয় না।”

মানুষের কল্যাণ করাই যেখানে রাজনীতির ‘মূল লক্ষ্য’, সেখানে “একটা শ্রেণি রাজনীতিকে ব্যবসা আর অবৈধ সম্পদ অর্জনের হাতিয়ারে পরিণত করেছে” বলে মন্তব্য করেন রাষ্ট্রপতি।

দেশে সুষ্ঠু ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলতে রাজনীতিবিদদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, “দেশে সুষ্ঠু ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলার দায়িত্ব রাজনীতিবিদদেরই নিতে হবে। রাজনীতি যাতে রাজনৈতিক পরিবেশে অর্থাৎ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে জনগণের কল্যাণে পরিচালিত হতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে।

“আমি আশা করি দেশের সকল রাজনৈতিক দল ও রাজনীতিবিদগণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সঠিক ও যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে উদ্যোগী হবেন। তাহলে সৎ, যোগ্য ও মেধাবী তরুণরা রাজনীতিতে আগ্রহী হবে এবং সাধারণ মানুষ রাজনীতিবিদদের সম্মানের চোখে দেখবে।”

সাবেক স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর জীবনের বিভিন্ন ঘটনার কথাও এ অনুষ্ঠানে স্মরণ করেন আবদুল হামিদ।

হুমায়ুন রশীদ যখন সপ্তম জাতীয় সংসদে স্পিকারের দায়িত্বে ছিলেন, ডেপুটি স্পিকার ছিলেন আবদুল হামিদ। হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর আবদুল হামিদ স্পিকার হন, পরে হন রাষ্ট্রপতি।

স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী স্মৃতি পরিষদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিব নজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, সংসদ সদস্য আলী আশরাফ, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইনাম আহমেদ চৌধুরী, হুমায়ুন রশীদ চৌধুরীর বোন জেবা রশিদ চৌধুরী এবং ডা. সামন্ত লাল সেন বক্তব্য দেন।