শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনতে স্বল্প সুদে ঋণ চান বিএনপির হারুন

শুল্ক ছাড়াই গাড়ি কেনার সুযোগ পান সংসদ সদস্যরা; সেই সুবিধায় গাড়ি কিনতে এবার স্বল্প সুদে ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা  করে দেওয়ার দাবি জানালেন বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 02:35 PM
Updated : 11 Nov 2019, 02:35 PM

সোমবার জাতীয় সংসদে অনির্ধারিত আলোচনায় দাঁড়িয়ে এ দাবি করেন হারুন, যিনি নিজে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন একাধিকবার, তার স্ত্রীও ছিলেন সংসদ সদস্য।

সংসদ সদস্য হিসেবে শুল্কমুক্ত গাড়ি কিনে তা হস্তান্তর করায় দুদকের মামলায় সম্প্রতি হারুনকে সাজা দেয় নিম্ন আদালত। উচ্চ আদালত থেকে জামিনে বেরিয়ে এসে এদিন সংসদে কথা বলার সুযোগ নেন তিনি।

হারুন বলেন, “ওয়ান ইলেভেনের সময় মামলা হয়েছে। আমার নামে দুর্নীতি মামলা না থাকায় শুল্কমুক্ত গাড়ি নিয়ে মামলা হয়। নিম্ন আদালত আমার সাজা হলে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছি।”

সংসদ সদস্য হিসেবে কেনা গুল্কমুক্ত গাড়ি হস্তান্তরে জেল-জরিমানার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সংসদ সদস্য হিসেবে আনা কোনো গাড়ি হস্তান্তর করা হলে সেক্ষেত্রে সমুদয় শুল্ক পরিশোধ করতে হবে।  এখানে জরিমানা বা জেলের সুযোগ নেই। আমি আশা করি, উচ্চ আদালত আমাকে এ বিষয়ে বিবেচনায় নিয়ে আসবে।”

সংসদ সদস্য হিসেবে চার মাস আগে গাড়ি কেনার অনুমতি পেলেও ‘টাকা না থাকায়’ কিনতে পারছেন না বলে দাবি করেন হারুন।

তিনি বলেন, “ইউরোপ আমেরিকার মতো উন্নত বিশ্বে এক কোটি টাকা নগদ দিয়ে গাড়ি কেনে না। তারা ব্যাংক ঋণের সুবিধা পায়। কারাগারে থাকা অবস্থায় দেখলাম সচিবদের গাড়ি কেনার সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। পত্রিকায় নিউজ হয়েছে সচিবরা গড়ি অপব্যবহার করছে।

“জাতীয় সংসদ সদস্যরা রিকশায় করে গণভবনে যাবে না। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রিকশায় করে যাবে না। তাই সংসদ নেতাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) অনুরোধ করব, এমপিদের গাড়ি কেনার জন্য ব্যাংক থেকে স্বল্প সুদে সহায়তা দেওয়া হোক, ৫ বছর ব্যবহার করার পর গাড়িটা বিক্রি করে যেন অন্তত মূলধনটা ফিরে পাবেন।”

শুল্ক ফাঁকির মামলায় পাঁচ বছরের সাজার রায়ের পর কারাগারে যেতে হয়েছিল হারুনুর রশীদকে (ফাইল ছবি)

চলমান অভিযানের প্রসঙ্গ টেনে হারুন বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ। তিনি অসাধারণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছেন, সারাদেশব্যাপী দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করেছেন। দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে তিনি কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছেন।

“ঠিক এরকম একটি মুহুর্তে আমার সাজা হল। ব্যাপকভাবে তা প্রচার হলো। সারা দেশে একটা পারসেপশন তৈরি হল, বিএনপির এমপি বলেই আজকে হারুনকে সাজা দেওয়া হয়েছে। উচ্চ আদালত অতি অল্প সময়ে জামিন পাই। আপিল বিভাগও সেই জামিন বহাল রেখেছে।”

তিনি বলেন, “রায়টি যখন হল, আমার এলাকায় দেখলাম কিছু ব্যক্তি আনন্দ-উৎসব করল, মিষ্টি বিতরণ করল। কিন্তু সারাদেশের মানুষ আমার জন্য দোয়া করেছে। মুক্ত হওয়ার পর আওয়ামী লীগের অনেক সিনিয়র নেতা আমার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।  আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।

“আমার নামে সাজা হয়েছে সাথে সাথে দোষ আসলো যে, হারুন বিএনপির এমপি। আমি যখন জামিনে মুক্তি পেলাম তখন দেখা গেলো আবার একটা শ্রেণী টেলিভিশনে টকশোতে বলছেন যে, হারুনকে প্রধানমন্ত্রী খুব ভালবাসেন দেখে ওকে ১০ দিনের মধ্যেই জামিন দিয়ে দিল। অর্থাৎ আমি এদিকেও করাতে কাটছি ওদিকেও করাতে কাটছি।”

বন্দি খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রক্রিয়া নিয়ে হারুনের তৎপরতায় সম্প্রতি হারুনের সমালোচনা করেছিলেন বিএনপিরই নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।