বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে বিকালে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “দুর্ভাগ্য, তার সেই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমরা সংসদে শুনতে পারব না। তার মৃত্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করল। সময়ের সাথে সাথে সবাইকে চলেই যেতে হবে। মৃত্যু সত্য। এই সত্য মেনে নেওয়া কঠিন। কিন্তু মেনে নিতেই হয়।”
শেখ হাসিনা বলেন, “মইন উদ্দীন খান বাদল ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান রয়েছে। তিনি অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও শান্তি সম্প্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। সংসদে তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলতেন। তার ভাষণ সকলের মনে দাগ কেটে যেত।
“ভাবতেই পারিনি তিনি এভাবে চলে যাবেন। সংসদ শুরু হবে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে সংসদে আসবেন, কথা বলবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার সেই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমরা সংসদে শুনতে পারব না।”
প্রধানমন্ত্রী জানান, মইন উদ্দীন খান বাদলের লাশ নিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাদলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, “তার বক্তব্য আমরা মন দিয়ে শুনতাম। তার থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল, অনেক কিছু জানার ছিল। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা হয়েছে মনে হয় না ওই আসন থেকে পরবর্তীতে যিনি বিজয়ী হয়ে আসবেন তিনি পূরণ করতে পারবেন।”
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “পাকিস্তান বাহিনীর কাছে তিনি আতঙ্ক ছিলেন। সংসদে তার বাচনভঙ্গি ও দৃঢ়তা আমাদের মুগ্ধ করত।”
শোক প্রস্তাবেরও পর অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, আবুল কালাম আজাদ, মোহাম্মদ নাসিম, মহীউদ্দীন খান আলমগীর, আ স ম ফিরোজ, শাজাহান খান, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় পার্টির আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বক্তব্য রাখেন।
বৃহস্পতিবার এ সংক্ষিপ্ত আলোচনা শেষে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। এছাড়া ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকাসহ সংসদে আনা অন্যদের শোক প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়।
শোক প্রস্তাব শেষে মৃতদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে সংসদের অন্যান্য কার্যক্রম স্থগিত রেখে সংসদের বৈঠক মুলতবি ঘোষণা করা হয়। চলমান সংসদের কোনো সদস্য মারা গেলে রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের বৈঠক মুলতবি করা হয়।