অস্ত্র মামলায় সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র

ক্যাসিনোকাণ্ডে আলোচিত যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 05:50 AM
Updated : 6 Nov 2019, 07:17 AM

র‌্যাব সদর দপ্তরের সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া বুধবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রমনা থানার এই মামলায় আজ সকালে আদালতে চার্জশিট দিয়েছি আমরা। সেখানে অবৈধ অস্ত্র রাখার দায়ে তাকে আসামি করা হয়েছে।”

আদালত পুলিশের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা এসআই নিজামউদ্দিন জানান, অভিযোগপত্র আদালতে জমা পড়েছে। তবে এখনও বিচারকের কাছে তোলা হয়নি। 

এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের আদালত প্রতিবেদককে বলেছেন, সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) এবং ১৯ (এফ) ধারায়। অপরাধ প্রমাণিত হলে এ ধারায় সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান আছে।

গত সেপ্টেম্বরে ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর আত্মগোপনে চলে যান যুবলীগের প্রভাবশালী নেতা সম্রাট। ৭ অগাস্ট কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে সম্রাট ও তার সহযোগী এনামুল হক আরমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব।

সেদিন বিকালে সম্রাটকে সঙ্গে নিয়ে কাকরাইলের ভূইয়া ট্রেড সেন্টারে তার কার্যালয়ে অভিযান চালানো হয়। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অভিযান শেষে গুলিসহ একটি বিদেশি পিস্তল, ১১৬০টি ইয়াবা, ১৯ বোতল বিদেশি মদ, দুটি ক্যাঙ্গারুর চামড়া এবং ‘নির্যাতন করার’ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম পাওয়ার কথা জানানো হয় র্যাবের পক্ষ থেকে।

ক্যাঙ্গারুর চামড়া পাওয়ার কারণে সম্রাটকে তাৎক্ষণিকভাবে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ) আইনে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেদিনই তাকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় কেরানীগঞ্জের কারাগারে।

পাশাপাশি রমনা থানায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র আইনে দুটি মামলা হয় সম্রাটের বিরুদ্ধে। দুই মামলায় তাকে পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়।

সম্রাটের আইনজীবীরা আদালতে বলেছিলেন, মাদক ও অস্ত্রের বিষয়ে সম্রাটের নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তাকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তারের সময় ঢাকায় তার কার্যালয়ে কী ছিল, তিনি তা জানতেন না।

অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, যেহেতু সম্রাটের কার্যালয় থেকে মদ ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে, সেহেতু এর মালিক তিনি নিজে। তিনি এগুলো ব্যবহার করতেন।

সম্রাট যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ছিলেন। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার আরেক যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার বিরুদ্ধেও ইতোমধ্যে অস্ত্র মামলায় অভিযোগপত্র দিয়েছে র‌্যাব। সেখানে বলা হয়েছে, আগ্নেয়াস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ঢাকার বড় একটি এলাকায় ‘সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম’করেছিলেন খালেদ।

এছাড়া যুবলীগ পরিচয় দিয়ে ঠিকাদারি ব্যবসা চালিয়ে আসা জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধেও অস্ত্র মামলার অভিযোগপত্র জমা পড়েছে আদালতে।

সেখানে বলা হয়েছে, শামীম জনমনে ভীতি সৃষ্টি করে বিভিন্ন টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, স্থানীয় বাস টার্মিনাল ও ঈদে গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে আসছিলেন। আর তার দেহরক্ষীরা উচ্চ বেতনভোগী দুষ্কর্মের সহযোগী।