ব্যক্তিগত ব্যাংক হিসাবের পাশাপাশি তার দুই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত করা হয়েছে। স্থগিত করা হয়েছে তার স্ত্রী ও তিন সন্তানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও।
অর্থাৎ এখন তারা তাদের ব্যাংক হিসাবে কোনো টাকা তুলতে কিংবা স্থানান্তর করতে পারবেন না।
যুবলীগের চেয়ারম্যানের পদ থেকে ওমর ফারুককে অব্যাহতি দেওয়ার পরদিনই তার ব্যাংক হিসাব লেনদেন বন্ধের বিষয়টি প্রকাশ পেল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চিঠির পরিপেক্ষিতে ব্যাংকগুলো ওমর ফারুকসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছে বলে জানিয়েছেন এনবিআরের চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।
তিনি সোমবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছিল। তার ধারাবাহিকতায় ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করতে বলা হয়েছে।”
ব্যাংকগুলোর কাছে পাঠানো চিঠিতে এনবিআর বলেছে, ওমর ফারুক চৌধুরী, তার স্ত্রী শেখ সুলতানা রেখা, ছেলে আবিদ চৌধুরী, মুক্তাদির আহমেদ চৌধুরী ও ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরীর ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো টাকা উত্তোলন বা স্থানান্তর করা যাবে না।
তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান লেক ভিউ প্রোপার্টিজ ও রাও কনস্ট্রাকশনের ব্যাংক হিসাবের লেনদেনও স্থগিত থাকবে।
এর আগে ৩ অক্টোবর ওমর ফারুকের ব্যাংক হিসাব তলব করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তার নামে থাকা সব হিসাবের লেনদেনের তথ্য পাঠাতে ব্যাংকগুলোকে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনটেলিজেন্স ইউনিট।
গত মাসে র্যাবের অভিযানে ঢাকার ক্রীড়া ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনো পরিচালনায় আওয়ামী লীগের যুব সংগঠনটির নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ্য হলে চাপের মুখে পড়েন ওমর ফারুক।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ভগ্নিপতি ওমর ফারুক শুরুতে র্যাবের অভিযানের কড়া সমালোচনা করলেও পরে চুপ মেরে যান।
তারপর থেকে যুবলীগের কোনো কার্যক্রমেও ওমর ফারুককে দেখা যাচ্ছিল না। রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে গণভবনে যুবলীগের বৈঠকে ওমর ফারুককে চেয়ারম্যানের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
এসব ঘটনায় আলোচনায় থাকা ওমর ফারুক সম্প্রতি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, তিনি বিদেশে যাবেন না।
“পালাবার কোনো কারণ তো নেই। আমি পালিয়ে যাবার লোক না। রাজনীতি করি। রাজনীতি করতে গেলে ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে। আমি কোনো অপরাধ করিনি যে আমাকে পালিয়ে যেতে হবে।”
গ্রেপ্তার হলে আদালতেই নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পারবেন বলে মনে করেন ওমর ফারুক।
ক্যাসিনোকাণ্ডে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট, সহসভাপতি এনামুল হক আরমান, সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে গ্রেপ্তার হয়ে এখন কারাগারে রয়েছেন। তারা যুবলীগ থেকেও বহিস্কৃত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয় যুবলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে আসা প্রভাবশালী ঠিকাদার জি কে শামীমকেও।
আরও খবর