মানুষের জীবনের মূল্য পশু-পাখির চেয়েও কম: খন্দকার মোশাররফ

ভোলার বোরহানউদিবদনে এক হিন্দু তরুণের ফেইসবুক আইডি ‘হ্যাক’ করে বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য ছড়ানোর পর পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Oct 2019, 08:36 AM
Updated : 21 Oct 2019, 08:36 AM

নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সোমবার সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “কোনো ধর্ম নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করা এই দেশের আবহমানকালের ঐতিহ্যে নেই। আমরা মনে করি, ভোলার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত।”

“যে কারণে ভোলাকে রক্তে রঞ্জিত করা হয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত ও দায়ীদেরকে ‍দৃষ্টান্তমূলক সাজা দিতে হবে।”

ভোলার ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ অভিহিত করে তিনি বলেন, “আমরা সরকারের উদ্দেশে বলতে চাই, জনগণকে যারা অবজ্ঞা করে তাদের পরিণতি শুভ হয় না। গণমানুষের জানমাল নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলবেন না, যথেষ্ট হয়েছে।”

রোববার ভোলার বোরহানউদ্দিনে এক হিন্দু তরুণের ফেইসবুক আইডি ‘হ্যাক’ করে মহানবীকে নিয়ে ‘অবমাননাকর’ বক্তব্য ছড়ানোর পর ‘মুসলিম তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে সমাবেশ থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে এক মাদ্রাসার ছাত্রসহ চারজন নিহত ও ১০ পুলিশসহ শতাধিক আহত হয়।

এ ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় পাঁচ হাজার জনকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।

ভোলায় পুলিশের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “ভোলায় পুলিশের এমন মারমুখী আচরণ ও নিষ্ঠুরতা ক্ষমার অযোগ্য। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জবাবদিহিতা করতে হয় না বলেই সামান্য কিছুতেই নির্বিচারে গুলি করে মানুষ হত্যা যেন এখন নিত্যদিনের ঘটনা। এই ভোটারবিহীন সরকারের দুঃশাসনে মানুষের জীবনের মূল্য এখন পশু-পাখির চেয়ে কমে গেছে।”

ভোলার ঘটনা তুলে ধরে তিনি বলেন, “তারা (বিক্ষোভকারীরা) একটি অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য জড়ো হয়েছিল, এটি তো কোনো অপরাধ নয়। তারা কোনো ভাংচুর করেনি, কারও ক্ষতি করেনি। প্রতিবাদ করা কী অন্যায়? তারা কী কোনো দাঙ্গায় লিপ্ত হয়েছিল? যেকোনো ধর্ম সম্পর্কে অশালীন মন্তব্য করে মানুষের বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠা নতুন কিছু নয়। এটাই স্বাভাবিক।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা আশ্চর্যের সাথে লক্ষ্য করছি, স্থানীয় প্রশাসন সুকৌশলে ভোলার মানুষের প্রতিবাদটিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে। আপনারা ভোলার হত্যাকাণ্ডের পর সরকার ও প্রশাসনের বক্তব্য এবং মন্তব্য শুনলে অনুধাবন করতে পারবেন তারা দুঃখ প্রকাশ না করে হত্যাকাণ্ডের পক্ষে সাফাই গাইছে। আর প্রধানমন্ত্রী তার স্বভাবসুলভ ভাষায় প্রতিবাদকারীদের প্রতি হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আতাউর রহমান ঢালী, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা খায়রুল কবির খোকন, শ্যামা ওবায়েদ, নুরী আরা সাফা, মীর সরফত আলী সপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।