‘নাম আসা’ নেতাদের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন কাদের

চলমান শুদ্ধি অভিযানে গ্রেপ্তারদের পৃষ্ঠপোষকতার অভিযোগ যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে উঠছে তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হবে কি না, সে বিষয়ে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলবেন ওবায়দুল কাদের।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Oct 2019, 12:58 PM
Updated : 20 Oct 2019, 01:01 PM

এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, “অনেক রকমের নিউজ অনেক সময় হয়। কিছু কিছু নিউজ… একজনের সাথে আরেকজনের শত্রুতা আছে। সময়টা খুব খারাপ তো, এ সময়ে এটা আসলে ভেবে দেখতে হবে। নেত্রীর সঙ্গে আলাপ করে জানাব।”

রোববার সচিবালয়ে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিবের সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের সম্পর্ক নিয়ে প্রশ্ন তোলেন সাংবাদিকরা।

মোহাম্মদপুরের বসিলা, বাঁশবাড়ী, মোহাম্মদ্দীয়া হাউজিং সোসাইটি, কাটাসুর ও আশপাশের এলাকা নিয়ে গঠিত ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা রাজীবকে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে শনিবার গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্বের অভিযোগে গ্রেপ্তার কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান রাজিব আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর কবির নানকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক গত দুই মেয়াদে ওই এলাকার সাংসদ ছিলেন। এলাকায় নানকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাজিবকে এই আওয়ামী লীগের ‘কথিত ছেলে’ লিখেছে বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম।

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কাদের বলেন, “নানক সাহেবের একটা মেয়ে আছে, একটা ছেলেটা এক্সিডেন্টে মারা গেছে। আর কোনো সন্তান আছে বলে আমার জানা নেই। এই ধরনের কোনো পাতানো সন্তান কি না, এটা নানক সাহেবকে জিজ্ঞেস করেন।”

২০১১ সালে কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় নানকের একমাত্র ছেলে সায়েম-উর রহমান সায়েম (২৮) মারা যান। তার সঙ্গে বন্ধুত্ব থেকেই নানকের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল সে সময়ের যুবলীগকর্মী রাজিবের। পরবর্তীতেও এলাকায় নানকের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাকে সক্রিয় দেখা যেত।

নানক মোহাম্মদপুর এলাকার সাংসদ থাকাকালেই ২০১৫ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী বজলুর রহমানকে হারিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজিব। ওই নির্বাচনে তিনি নানকের সমর্থন পেয়েছিলেন বলে এলাকাবাসীর ভাষ্য।

এ প্রসঙ্গ তুলে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদকের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, চলমান অভিযানে অনিয়ম, দুর্নীতি ও ক্যাসিনো সংশ্লিষ্টতায় গ্রেপ্তারদের সঙ্গে নাম চলে আসা জ্যেষ্ঠ নেতাদের বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হবে কি না।

তার জবাবে বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে কাদের বলেন, “যা কিছু হচ্ছে আপনারা তো মিডিয়ায় দেখছেন। যেখানে যে ব্যবস্থা অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছে, অনেকের ব্যাংক হিসাবের খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে, অনেকের বিদেশ যাওয়া বন্ধ হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা হয়েছে। এর বাইরে কোনো কিছু হলে সেটা যখন সময় হবে তখন জানতে পারবেন।”

‘বয়স যুবলীগই ঠিক করবে’

যুবলীগের নেতৃত্বে কারা আসবেন, বয়স কত হবে- সে প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, “আমার তো কোনো ধারণা এই মুহূর্তে নেই। এটা যুবলীগ ঠিক করবে। যুবলীগের বয়স, তারা আমাদের সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বসবেন।

“সেখানে যদি কোনো নির্দেশনা থাকে, সেটা এই মুহূর্তে আমি বলতে পারছি না। বসবে বিকাল বেলা, আমি এখন কী করে বলব? দেখা যাক কী হয়, আর কোনো পরিবর্তন বা কিছু করতে হলে যুবলীগের গঠনতন্ত্রেই করতে হবে। “আমার মনে হয় বয়সসীমা গঠনতন্ত্রে বেশি নেই, গঠনতন্ত্রে বেশি থাকে না। তো বাস্তবে কী হচ্ছে। যুবলীগ তো ছাত্র সংগঠন না, হতে পারে অস্বাভাবিক বেশি হলে সমস্যা…।”

তবে বিতর্কিতদের নেতৃত্বে আনা হবে না জানিয়ে কাদের বলেন, “নেতৃত্ব যদি বিতর্কিত হয়, বিতর্কিত নেতৃত্ব অবশ্যই নতুন কমিটিতে থাকবে না।”

‘বিএনপিকে আন্দোলন করতে বলুন’

বিএনপিকে পারলে আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে বললেন ওবায়দুল কাদের।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “তারা পরিষ্কার বলেছে, আন্দোলন ছাড়া খালেদা জিয়ার মুক্তির কোনো বিকল্প নেই। তাদেরকে বুলন আন্দোলন করতে।

“ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ফখরুল ইসলাম আলমগীর সবাই এক বাক্যে বলছেন যে, খালেদা জিয়ার মুক্তি আইনি পথে হবে না, অন্য কোনোভাবে হবে না, সরকার তাকে মুক্তি দেবে না। কাজেই আন্দোলনের ঝড় তুলতে হবে এবং বিস্ফোরণ ঘটাতে হবে, তারপরে তুমুল আন্দোলনের মাধ্যমে তাকে বের করতে হবে। আন্দোলনে তো কোনো বাধা নেই। জনগণ সায় দিলে আন্দোলন করবে।”