ঐক্যফ্রন্ট এখন ‘বিগতযৌবনা’

কামাল হোসেন নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট এখন ‘রাজনৈতিক গুরুত্ব হারিয়েছে’ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 Oct 2019, 01:39 PM
Updated : 20 Oct 2019, 10:01 AM

শনিবার বিকেলে নগরীর জে এম সেন হল মাঠে বাংলাদেশ তাঁতী লীগ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার বিচার দাবিতে রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত শোকসভায় গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেন।

আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান বলেন, “ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের প্রতি সম্মান রেখে বলছি, রাজনীতির মাঠে উনারা এখন বিগতযৌবনা। এখন তাদের ডাকে কেউ সাড়া দিচ্ছে না।

“রাজনীতিতে যে যশ-প্রতিপত্তি ছিল, সেটা হারিয়ে গেছে। তারা এখন যে কথাগুলো বলছেন, সেগুলো মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছে না।”

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে গত বছর ১৩ অক্টোবর গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের নেতৃত্বে পাঁচটি রাজনৈতিক দল নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়, যেখানে সবচেয়ে বড় বিরোধী দল বিএনপিও অন্তর্ভুক্ত হয়।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার দাবিতে পাঁচ বছর আগে জাতীয় নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি এবার এই ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে নির্বাচনে অংশ নেয়। তবে নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়, গণফোরামের দুটিসহ মোট আটটি আসনে জয়ী হন তাদের প্রার্থীরা।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচনের নামে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তুলে নির্বাচনী ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছিলেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন। তাদের জোট থেকে বিজয়ীরা সংসদে যাবেন না বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও প্রথমেই গণফোরাম থেকে বিজয়ী দুজন শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেন। পরে তাদের পথ ধরে সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন বিএনপির সাতজনও।

এ নিয়ে বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতা বিভিন্ন সময় বিষোদগার করলেও ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে এখনও যাচ্ছেন দলটির নেতারা।

সর্বশেষ গত ১৩ অক্টোবর বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদের স্মরণে জাতীয় প্রেস ক্লাবে স্মরণ সভা শেষে শোকর‌্যালি করতে গেলে তাদের আটকে দেয় পুলিশ। কামাল হোসেন, জেএসডির আ স ম আব্দুর রব ও নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্নার সঙ্গে বিএনপির ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও শ্যামা ওবায়েদরা ছিলেন কর্মসূচিতে।

সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত আবরার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রব।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, “ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করা হচ্ছে, তারা মাঠে নেমেছে। গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য আমাদের শক্তিশালী বিরোধী দল প্রয়োজন। কিন্তু সভা-সমাবেশে গিয়ে তারা ইস্যু খুঁজে পাচ্ছেন না।

“সেই জন্য খড়কুটো ধরে ইস্যু তৈরি করার চেষ্টা করছেন। তারা কতক্ষণ কোটা আন্দোলন নিয়ে, কখনও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ঘিরে, কখনও আবরার হত্যাকাণ্ডকে ইস্যু করার চেষ্টা করেন। কিন্তু এসব চেষ্টার কোনোটাই হালে পানি পাচ্ছে না।”

সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, “অবশ্যই আপনারা সরকারের সমালোচনা করবেন। আমরা সমালোচনাকে সমাদৃত করার সংস্কৃতি লালন করি। শক্তিশালী বিরোধী দল সংসদে ও রাজপথে আমাদের বস্তুনিষ্ঠু সমালোচনা করুক আমরা সেটা চাই।

“এই সমালোচনা যাতে আমাদের পথচলাকে শাণিত করে। কিন্তু তারা যে অহেতুক সমালোচনা করে, সেটা রাজনীতি, দেশ ও মানুষের জন্য শুভ নয়।”

চট্টগ্রাম মহানগর তাঁতী লীগের আহ্বায়ক নুরুল আমিন মানিকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী সদর আসনের এমপি নিজাম উদ্দিন হাজারী ও নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী।

সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন তাঁতী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মো. শওকত আলী।

বক্তব্য রাখেন তাঁতী লীগের সাধারণ সম্পাদক খগেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথ, কার্যকরী সভাপতি সাধনা দাশ গুপ্ত, মহানগর তাঁতী লীগৈর সদস্য সচিব রত্নাঙ্কর দাশ টুনু প্রমুখ।