বিএনপিকে সঙ্গে নিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া গণফোরামের সভাপতি কামাল বলছেন, ওই নির্বাচনে জনগণ ‘ভোট না দিলেও’ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী নিজেদের বিজয়ী ঘোষণা করেছেন।
“আপনি তো নাট্যকার, আপনি তো কোনো নেত্রী নন। এই যে আমি দেখলাম ৩০ তারিখ রাতে সবাইকে ধন্যবাদ-মোবারক বাদ দিয়ে বলছেন, আপনারা সবাই আমাকে আরও পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত করেছেন।
“স্বঘোষিত আপনি। এই মিথ্যা দিয়ে আপনি কতদিন ভুল পথে চলবেন? এই মিথ্যার শিকার যে হয়েছে তার ভয়াবহ পরিণতি হয়েছে। তৃতীয়বার আপনাকে কেউ নির্বাচিত করেনি। আমি সাক্ষী দেব, কেউ আপনাকে নির্বাচিত করে নাই।”
আওয়ামী লীগ ‘জোর-জুলুম, জবরদস্তি’ করে ক্ষমতা ধরে রেখেছে অভিযোগ করে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা কামাল হোসেন বলেন, “এগুলো করে পার পাওয়া যায় না, এবারও পার পাওয়া যাবে না। সময় থাকতে বোঝেন এগুলো। সময় থাকতে মাথা ঠাণ্ডা করে এদেশকে কুশাসন থেকে মুক্ত করেন।
“সভ্যভাবে আপনি দ্রুত সরে যান, নির্বাচন ঘোষণা করেন। অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন দায়িত্বে থাকুক। জনগণ মালিক তারাই ঠিক করবে কে ক্ষমতায় থাকবে।”
রোববার বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভার পরেই নেতাকর্মীদের নিয়ে আবরারের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ অভিমুখে শোকযাত্রা করতে গিয়ে বাধা পান কামাল হোসেন।
পুলিশের ওই বাধার আগেই সরকারের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ করতে ‘না দেয়ার’ অভিযোগ তুলে সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
কামাল হোসেন বলেন, “সমাবেশ করার অধিকার সংবিধানে আছে। সর্বোচ্চ আইন ভেঙে তারা যদি পার পেয়ে যায় তাহলে দেশে সভ্যতা থাকবে না, মৌলিক অধিকার থাকবে না। অর্থাৎ যারা এগুলো করছে জেনে রাখুন, এদেশের মাটি মানুষ এগুলোকে কোনো দিন মেনে নেয়নি।”
ক্ষমতাসীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, “সমাবেশ করার অধিকারগুলোকে ভোগ করতে যারা বাধা দিচ্ছে, এটা তারা দেশদ্রোহীর কাজ করছেন, দেশদ্রোহের শাস্তি তো হবে, কড়া শাস্তি হবে।
“আমরা এখন থেকে বলব- নাম, পিতার নাম তালিকা করা শুরু করুন। জনগণ ক্ষমতায় আসলে অবশ্যই এর বিচার হবে।”
“যারা মানুষকে অমানুষ বানাচ্ছে, পশু বানাচ্ছে আপনাদের কী শাস্তি হবে চিন্তা করুন। জনগণকে বলি, কারা ছেলেদের পশু বানাচ্ছে- আপনারা মহল্লায়-পাড়ায় এদেরকে চিহ্নিত করুন এবং আমরা ঐক্যমত আনব যে, এদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।”
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন গণফোরাম সভাপতি।
তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার শরীর সত্যিকারে আরও গুরুতরভাবে খারাপ হয়েছে, উনার বেঁচে থাকার ব্যাপারে সবাই এখন আশঙ্কা করছে সেকথা আমি একশ বার বলব।
“এটার কোনো যুক্তি নাই যে, বিরোধী দলের নেত্রী, তিনবার উনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন উনার অসুখ হওয়ার পরে উনাকে অবশ্যই মুক্ত করা হবে না, উনি চিকিৎসা পাবেন না- এটা কল্পনাই করা যায় না।”
প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার পরিচালনায় সমাবেশে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, শ্যামা ওবায়েদ, কাজী আবুল বাশার, নবী উল্লাহ নবী, গণফোরামের অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মোশতাক হোসেন, জেএসডির তানিয়া রব, আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের এসএম আকরাম, বিকল্পধারার অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।