ভারতের কাছে কূটনৈতিক পরাজয় হয়েছে: অলি আহমদ

অসম চুক্তি করে সরকার ভারতের কাছে কুটনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মুক্তিমঞ্চের আহবায়ক লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি(এলডিপি) সভাপতি অলি আহমদ।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Oct 2019, 12:26 PM
Updated : 10 Oct 2019, 12:26 PM

জাতীয় প্রেস ক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে বৃহস্পতিবার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচিত নয়। গত ১০ বছর তারা ক্ষমতায়, এই ১০ বছরে কোনো নদীর পানি তারা আনতে পারে নাই। ভারত জানে, আওয়ামী লীগ হল একটা দুর্বল সরকার, নতজানু সরকার। সুতরাং যেকোনো জিনিস তাদের কাছ থেকে আদায় করে নেওয়া সম্ভব।”

গত শনিবার দিল্লিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর সাতটি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহার, বন্দর ব্যবহার ও গ্যাস বিক্রি নিয়ে এসব চুক্তি ভারতের পক্ষে গেছে বলে অভিযোগ করে আসছে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল।

অলি আহমদ বলেন, “বর্তমান সরকার বার বার ভারতের কাছে কূটনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। ভারতের যা প্রয়োজন এই সরকার সবকিছু দিয়েছে। টাকা ও ক্ষমতার লোভে বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।”

আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডসহ দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জাতীয় মুক্তিমঞ্চ এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।

প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যার প্রকৃত অপরাধী এখনও গ্রেপ্তার হয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, “ছাত্রদেরকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো শায়েস্তা করার জন্য তারা (সরকার) অস্ত্র হাতে দিয়েছে, অবৈধ টাকা দিয়েছে, চাঁদাবাজি ও গুণ্ডামি করার পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে। অবুঝ ছেলেমেয়েরা রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

“একশ্রেণির শিক্ষকও তাদেরকে সঠিক পথে রাখার পরিবর্তে বিপথগামী করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। নতুন প্রজন্মকে অর্থাৎ আমাদের ছেলেমেয়েদেরকে, যারা আগামীদিন সরকার পরিচালনা করবে, তাদেরকে ধ্বংস করার একটি নীলনকশা, একটি জাতিকে মেধা শূন্য করার সরকারের একটা নীলনকশা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের অদক্ষ শিক্ষকদের চাকরি থেকে বের করে দেওয়া ও দুর্নীতিবাজ ভিসিদের অপসারণের দাবি জানান অলি।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতি’ বন্ধের দাবিও জানান জাতীয় মুক্তিমঞ্চের প্রধান।

ক্যাসিনো ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, “এখনও তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয় নাই। গ্রেপ্তারকৃত যুবলীগের নেতারা বলেছে, তারা মন্ত্রীদেরকে মার্সিডিজ গাড়ি দিয়েছে, বস্তায় বস্তায় টাকা দিয়েছে। অনেক মন্ত্রী-এমপি ও বড় বড় নেতা শামীমের টাকার ভাগ পেয়েছে এবং ক্যাসিনোর টাকার ভাগ পেয়েছে। এখনও তারা কেন গ্রেপ্তার হচ্ছে না?”

“আপনারা নিশ্চয় শুনেছেন, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বি্ভিন্ন হলে রেইড করা হবে। অর্থাৎ ছেলেদেরকে বলা হয়েছে তোমাদের কাছে যদি মালামাল থাকে তা দ্রুত সরিয়ে ফেল। কারণ পুলিশ যাচ্ছে। ক্যাসিনোর ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। এক জায়গায় রেইড হয়েছে অন্য জায়গাকে ওয়ার্নিং দিয়ে দিল তোমরা পালিয়ে যাও। কেউ ভারতে পালিয়ে গেছে। তারিখটা আমার স্মরণ নাই- একদিনে ৫৯ জন এমপি সাধারণ পাসপোর্টে ভারতের ভিসা গ্রহণ করেছে। এটা সরকারের খতিয়ে দেখা দরকার। লাল পাসপোর্ট থাকা অবস্থায় সাধারণ পাসপোর্টে কি করে তারা ভারতের ভিসা নিল।”

সংবাদ সম্মেলনে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির মিয়া গোলাম পারোয়ার, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির চেয়ারম্যান কাজী আবু তাহের, জাগপার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান খান, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মনির হোসেন কাশেমী, এলডিপির স্থায়ী কমিটির সদস্য কামাল উদ্দিন, ইসমাইল হোসেন বেঙ্গল উপস্থিত ছিলেন।