আবরার হত্যা মামলায় নেই মূল অভিযুক্তরা, রিজভীর দাবি

বুয়েটছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে যে মামলা হয়েছে, তাতে ‘অন্যতম অভিযুক্তদের’ নাম নেই বলে দাবি করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Oct 2019, 10:03 AM
Updated : 8 Oct 2019, 11:45 AM

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় সোমবার রাতে চকবাজার থানায় যে মামলা হয়েছে সেখানে আসামি হিসেবে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। রহস্যজনকভাবে ১৯ জনের মধ্যে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্তদের নাম নেই।”

আবরার হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকতুল্লাহ সোমবার চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলার ১০ আসামিকে এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের পাঁচদিনের রিমান্ডেও পাঠিয়েছে আদালত।

রোববার রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরে বাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সহপাঠীদের বরাতে সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, শিবির সন্দেহে ছাত্রলীগেরকর্মীরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে।

অভিযোগ উঠেছে, শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে গিয়ে পেটানো হয়।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, “শেরে বাংলা হলের ২০১১ নম্বর রুম তথা টর্চার সেলটি কার? তাকে বাঁচাতে বুয়েট প্রশাসন উঠে পড়ে লেগেছে কেন?”

বুয়েট কর্তৃপক্ষের সমালোচনা করে তিনি বলেন, “নির্লজ্জ বুয়েট প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ডকে সামান্য অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু বলে বিবৃতি দিয়েছে। তারা খুনিদেরকে আড়াল করতে সিসিটিভিতে ধারণকৃত ২০ মিনিটের ভিডিও এডিট করে মাত্র দেড় মিনিটের একটি ক্লিপ দিয়েছে আন্দোলনরত ছাত্রদের।

“এই প্রশাসন কতখানি বিবেকহীন হয়ে পড়েছে, তারা এত বড় একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড, কাপুরুষোচিত হত্যাকাণ্ডকে হালকাভাবে দেখিয়ে বাঁচাতে চাচ্ছে অপরাধীদেরকে, বাঁচাতে চাচ্ছে হত্যাকারীদেরকে।”

রিজভী বলেন, “দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের অতীত ঐতিহ্যকে ম্লান করে দিয়ে এর ডাকনাম এখন হয়ে পড়েছে চাপাতি লীগ।

“ছাত্রলীগ নামক এই দানব জঙ্গি লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা না করলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরবে না, শিক্ষার্থীদের জীবনের নিরাপত্তা থাকবে না।”

গত ৫ অক্টোবর ফেইসবুকে দেওয়া সর্বশেষ পোস্টে আবরার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারসহ সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তির সমলোচনা করেন।

এর আগেও ফেইসবুকে তার বিভিন্ন পোস্টের কারণেই তাকে শিবির বলে সন্দেহ করা হয় এবং সে কারণেই তাকে ২০১১ নম্বর কক্ষে ডেকে নিয়ে ‘জিজ্ঞাসাবাদ’ করা হয় বলে ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য।

বিএনপি নেতা রিজভী তিনি ফেনী নদীর নাম ‘আবরার নদ’ রাখার দাবি জানান।

ভারতের সঙ্গে চুক্তির প্রতিবাদে বিরুদ্ধে ধাপে ধাপে কর্মসূচি পালন করা হবে জানান তিনি।

“আমরা এই চুক্তির প্রতিবাদ করছি, বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন প্রতিবাদ করছে। এই চুক্তির প্রতিবাদে গতকালও একটা বিশাল মিছিল হয়েছে। এটা চলতে থাকবে।”

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোসেন, সেলিমুজ্জামান সেলিম, খন্দকার আবু আশফাক, কাজী সাইদুল আলম বাবুল উপস্থিত ছিলেন।