এরশাদের আসনে ছেলে সাদের জয়

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের আসন রংপুর-৩ এ উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তার ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ।

রংপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Oct 2019, 01:36 PM
Updated : 5 Oct 2019, 04:55 PM

শনিবার দিনভর ভোটগ্রহণ শেষে সন্ধ্যার পর আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং কর্মকর্তা সাহতাব উদ্দিন নির্বাচনের ফল ঘোষণা করেন।

৫৮ হাজার ৮৭৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন সাদ এরশাদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছেন ১৬ হাজার ৯৭৪ ভোট।

প্রায় সাড়ে চার লাখ ভোটারের এই আসনে পুরো ভোটগ্রহণ হয় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম); যাতে ভোট গণনার পর ফল ঘোষণা দ্রুত সম্ভব হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা সাহতাব। 

গত ১৪ জুলাই বিরোধীদলীয় নেতা এরশাদের মৃত্যুতে আসনটি শূন্য হওয়ায় এই উপনির্বাচন হল।

লাঙল ও ধানের শীষের প্রার্থী বাদে এই উপনির্বাচনে প্রার্থী হন স্বতন্ত্র মকবুল শাহরিয়ার আসিফ (মোটরগাড়ি), এনপিপির শফিউল আলম (আম), খেলাফত মজলিসের তৌহিদুর রহমান মন্ডল (দেওয়াল ঘড়ি) এবং গণফ্রন্টের কাজী মো. শহীদুল্লাহ বায়েজীদ (মাছ)।

এই প্রার্থীদের মধে্যে এরশাদের ভাতিজা মকবুল শাহরিয়ার আসিফ ১৪ হাজার ৯৮৪ ভোট পেয়েছেন বলে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা সাহাতাব উদ্দিন।

নির্বাচনে ২১ দশমিক ৩১ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান তিনি।

রংপুর সদর উপজেলা ও সিটি করপোরেশন নিয়ে গঠিত এ আসনে মোট ভোটার চার লাখ ৪২ হাজার ৭২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার দুই লাখ ২১ হাজার ৩১০ জন এবং নারী ভোটার দুই লাখ ২০ হাজার ৭৬২ জন।

রিটা রহমানের অভিযোগ, ভোটে সবার সমান সুযোগ ছিল না

এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১ লাখ ৪২ হাজার ৯২৬ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি প্রার্থী রিটা রহমান পেয়েছিলেন ৫৩ হাজার ৮৯ ভোট। ভোট পড়েছিল ৫২ দশমিক ৩১ শতাংশ।

এরশাদ গত ১৪ জুলাই চিকৎসাধীন অবস্থায় রাজধানী ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। তারপর ১৬ জুলাই আসনটি শূন্য হওয়ার গেজেট প্রকাশিত হয়। ১ সেপ্টেম্বর উপ-নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে কমিশন।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভোটের প্রতি মানুষের অনাগ্রহের মধ্যে শনিবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলে।

গোলযোগহীনভাবে ভোটগ্রহণ হলেও প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতের অভিযোগ করেন বিএনপির প্রার্থী রিটা রহমান। অন্যদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাদ এরশাদ ভোট নিয়ে সন্তুষ্টির কথা জানান।

সাদ ও রিটা এই আসনে ভোটার না হওয়ায় তারা ভোট দিতে পারেননি।

সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর কয়েক ঘণ্টা পরও বিভিন্ন কেন্দ্র দেখা যায় ভোটারশূন্য; অলস সময় কাটাতে দেখা যায় পোলিং এজেন্টদের।

এর মধ্যেই রংপুর নগরীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনের সময় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগ তোলেন ধানের শীষের প্রার্থী রিটা।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “গতকাল রাতে সদর বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালিয়েছে প্রশাসন। ভোটের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি নিয়ে গেছে। ভোরবেলা আবার আমরা সেগুলো পাঠিয়েছি।”

এ বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রিটা বলেন, “আমরা দেশের অন্যতম বৃহৎ একটি দল। আমরা বারবার অনুরোধ করেছিলাম যে ভোটের মাঠ সুষ্ঠু রাখেন, নিরপেক্ষ আচরণ করেন। কিন্তু তারা পক্ষপাতিত্ব করছেন। ভোটের মাঠ সবার জন্য সমান করতে নির্বাচন কমিশন ব্যর্থ।”

রংপুর উপনির্বাচনে একটি কেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে বিএনপির প্রার্থী বলেন, “নির্বাচন ও ইভিএম নিয়ে মানুষ আশাহত, তাই এই নির্বাচনে জনসম্পৃক্ততা নেই। মানুষ ভোট দিতে আসছেন না।”