অপরাধী ধরতে কেন গ্রিন সিগন্যাল লাগে: রিজভী

অপরাধী ধরার জন্য কেন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সবুজ সংকেতের জন্য অপেক্ষা করতে হবে- সেই প্রশ্ন রেখেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Oct 2019, 12:55 PM
Updated : 2 Oct 2019, 12:55 PM

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “এই অভিযান বড় কোনো অপকর্মের পূর্বাভাস। এই অভিযান প্রতিহিংসা, ঈর্ষা, চাঁদাবাজি ও স্বজনপোষণের রাজনীতির জটিল সমীকরণের বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকে মনে করেন।”

যুবলীগ নেতা ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট এখনও কেন গ্রেপ্তার হয়নি, সেই প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, “ক্যাসিনো, টেন্ডারবাজি ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে সরকার তথাকথিত অভিযান চালাচ্ছে। সংবাদপত্রের খবর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতিকে গ্রেপ্তার করা হবে কি না- তা নিয়ে দোটানায় রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

“ক্যাসিনো সম্রাটের সুবিধাভোগীদের তালিকায় মন্ত্রী, সাংসদ, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক ব্যক্তিই আছেন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আইন তার নিজের গতিতেই চলবে। তাহলে কোন অপরাধীকে ধরার জন্য জাল ফেলে গ্রিন সিগন্যালের অপেক্ষা করতে হয়?”

গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকার মতিঝিলের ক্লাবপাড়ায় র‌্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো চলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকে আলোচনায় রয়েছে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক সম্রাটের নাম।

সেদিন যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়া গ্রেপ্তার হওয়ার পর সদলবলে কাকরাইলে সংগঠনের কার্যালয়ে অবস্থান নিয়ে রাতভর ছিলেন সম্রাট।

এরপর তাকে গ্রেপ্তারেও অভিযান চালানো হবে বলে খবর প্রকাশের মধ্যে নিরুদ্দেশ রয়েছেন এই যুবলীগ নেতা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, সম্রাটকে গ্রেপ্তারে তারা ‘শিগগিরই’ সফল হতে পারবেন বলে আশা করছেন।

রিজভী বলেন, “আসল কথা হল- সরকার কথিত অভিযানের নামে মাঠে নেমে এখন না পারছে উঠে আসতে, না পারছে রাঘব বোয়াল ধরতে। এখন বিএনপি ও তারেক রহমানের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এখন তাদের সুর বদলে গেছে।”

গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নেতা এনামুল হক ও তার ভাই রুপন ভুইয়ার বাড়িতে ক্যাসিনোর কোটি কোটি টাকাসহ সিন্দুক পাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রিজভী বলেন, “ক্ষমতাসীনদের ঘরে ঘরে এখন টাকা গোনার মেশিন, সিন্দুক, ভল্ট ভরা লুটপাটের অর্থ। বিদেশে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা পাচার করে দেশকে ফোকলা করে দিয়েছে।

“দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করা হয়েছে। সেজন্য তাদের দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ ও ক্যাসিনোবাজ বরপুত্রদের অঢেল টাকার লেনদেনে বিএনপি নেতাদের অলৌকিক যোগসূত্র খুঁজে পায়।”

কিছু সংবাদপত্রে ক্যাসিনোর কারবারের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে জড়িয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন ‘নির্জলা মিথ্যাচার ও কুসিত অপপ্রচার’ বলে অভিযোগ করেন রিজভী।

তিনি বলেন, “আমরা এতদিন বলে আসছিলাম দুর্নীতি ও ক্যাসিনোবিরোধী এই তথাকথিত অভিযানের অন্যতম লক্ষ্য বিএনপি এবং আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক ও জনগণের প্রাণপ্রিয় নেতা জনাব তারেক রহমান। সেই থলের বিড়ালটা এবার বের হয়ে এল।

নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জয়নুল আবদিন ফারুক, খায়রুল কবির খোকন, আবদুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, শফিউল বারী বাবু, মোশতাক মিয়া উপস্থিত ছিলেন।