যার আবেদনে কাউন্সিলে নিষেধাজ্ঞা এসেছিল, ছাত্রদলেরই নেতা আমানউল্লাহর একটি আবেদনে সোমবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ চতুর্থ সহকারী জেলা জজ নুসরাত সাহারা বিথী কমিটির কাজের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন।
আমানউল্লাহর এক আবেদনে গত ১২ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিলের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন একই বিচারক।
কাউন্সিলের দুদিন আগে আদালতের ওই নিষেধাজ্ঞায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখান বিএনপি নেতারা। এর পেছনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্র ছিল বলেও দাবি করেন তারা।
তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করেই গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাড়িতে ছাত্রদল কাউন্সিল করে, যাতে ফজলুর রহমান খোকন সভাপতি এবং ইকবাল হোসেন শ্যামল সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
কাউন্সিল হয়ে যাওয়ার পর সোমবার নতুন আবেদন নিয়ে আদালতে যান আমানউল্লাহ, যিনি ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি ছাত্রদলের ষষ্ঠ কাউন্সিল কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে সাত দিনের মধ্যে বিএনপির মহাসচিবসহ দলটির ১০ নেতাকে জবাব দিতে বলেছে আদালত।
আদালতের পেশকার কল্যাণ কুমার সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাদীর আবেদনে আদালত ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে এ মামলায় পক্ষভুক্ত করে তাদের কার্যক্রমের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একই সঙ্গে সাত দিনের মধ্যে এ বিষয় জবাব দেওয়ার জন্য নোটিস জারি করেন।”
এদিকে ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি, বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের নেতা বোরহান উদ্দিন বলেন, “গত রোববার আমরা এই মামলায় পক্ষ হয়ে জবাব দাখিলের জন্য সময় চেয়ে আবেদন করি। বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে ১৪ অক্টোবর জবাব দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেন।
“আজ তারা নতুন করে একটি আবেদন করেন। আবেদনে তারা নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে পক্ষ করেন। এছাড়া বর্তমান কমিটির কার্যক্রম স্থগিত চান। আদালত তাদের আবেদন মঞ্জুর করেন।”
এপ্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, “নিয়ম হচ্ছে, ধার্য তারিখে শুনানি করতে হয়। তারা ধার্য তারিখে শুনানি করেননি, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। আগামীকাল আমরা এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে আদালতে পদক্ষেপ গ্রহণ করব।”
এই মামলাটির আরজিতে আমানউল্লাহ দাবি করছেন, ছাত্রদলে তাদের কমিটি বেআইনিভাবে ভেঙে নতুন কমিটি গড়তে কাউন্সিলের আয়োজন করা হয়।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী ছাত্র সংগঠন কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন হিসেবে থাকতে পারে না- এই বিধান উল্লেখ করে তিনি বলেন, অথচ গত ৩ জুন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদলের কমিটি ভেঙে দেন। এরপর ৯ জুন মির্জা ফখরুল নির্বাচন চালানোর জন্য তিনটি কমিটি গঠন করেন। আবার ছাত্রদলের ১২ জনকে বহিষ্কার করেন, যা সম্পূর্ণ বেআইনি।