ক্ষুব্ধ যুবলীগ চেয়ারম্যান দেখছেন ‘ষড়যন্ত্র’

সংগঠনের ঢাকা মহানগরের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো চালানোর অভিযোগ তোলার পেছনে ‘ষড়যন্ত্র’ দেখেছেন যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 05:21 PM
Updated : 18 Sept 2019, 07:16 PM

যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে বুধবার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তারের আগে র‌্যাবের অভিযানের তোড়জোড়ের মধ্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলের এক বৈঠকে সহযোগী সংগঠন যুবলীগের নেতাদের নানা কাণ্ডের সমালোচনা করেন।

এরপর যুবলীগ নেতাদের ৬০টি জুয়ার আখড়া বা ক্যাসিনো চালানোর খবর আসে কয়েকটি সংবাদপত্রে। বুধবার তা প্রকাশিত হওয়ার পর এসব স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের প্রস্তুতির খবরও আসতে থাকে। 

এর মধ্যে বিকালে মিরপুরে এক অনুষ্ঠানে ওমর ফারুক বলেন,“এটা কি বিরাজনীতিকরণের নীতি নিয়ে আসছেন? দলকে পঙ্গু করার কোনো ষড়যন্ত্রে আসছেন? নিষ্ক্রিয় করার ষড়যন্ত্রে আসছেন?”

আওয়ামী লীগের নানা কর্মসূচিতে এখন যুবলীগের সক্রিয়তা লক্ষ্যণীয়। যুবলীগ নেতারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনগুলোর মধ্যে তারাই সবচেয়ে সক্রিয়।

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক (ফাইল ছবি)

যুবলীগের চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “আপনারা বলছেন, ৬০টি ক্যাসিনো আছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৬০ জন কি আঙ্গুল চুষছিলেন? আপনারা কি আঙ্গুল চুষছিলেন?

“যেই ৬০ জায়গায় ক্যাসিনো; সেই ৬০ জায়গার থানাকে অ্যারেস্ট করা হোক। সেই ৬০ জায়গায় যারা র‌্যাব ছিল; তাদের অ্যারেস্ট করা হোক।”

প্রধানমন্ত্রীর ফুফাত বোনের জামাই ওমর ফারুক বলেন, “আমাকে অ্যারেস্ট করবেন? করেন। আমি রাজনীতি করি। আমি একশ বার অ্যারেস্ট হব। আমি অন্যায় করেছি। আপনারা কী করেছেন?

“আপনারা অ্যারেস্ট করবেন। আমি বসে থাকব না। আপনাকেও অ্যারেস্ট হতে হবে। কারণ, আপনি প্রশ্রয় দিয়েছেন।”

উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশে ওমর ফারুক বলেন, “পাঁচশ জায়গা নির্ধারণ করলেন ক্যাসিনো চলে, যুবলীগ চালায়। আপনি সাংবাদিক, আপনাকে বলতে হবে, সেই ক্যাসিনোগুলো কোথায়? কারা কারা জড়িত?”

ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে ক্যাসিনো

যুবলীগ চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ঢাকার ফকিরাপুল ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে ক্যাসিনো চালানোর প্রমাণ পাওয়ার কথা জানায় র‌্যাব; একই ক্লাবটির সঙ্গে যুক্ত যুবলীগ নেতা খালেদকে গ্রেপ্তার করা হয় তার গুলশানের বাড়ি থেকে। একই রাতে আরও অন্তত তিনটি ক্লাবেও অভিযান চালায় র‌্যাব।

যুবলীগে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তৃণমূল থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও বহিষ্কারের কথা বলেন ওমর ফারুক।

তিনি বলেন, “প্রেসিডিয়াম পর্যন্ত বহিষ্কার করেছি। কাজ করতে গেলে ত্রুটি থাকবে।

“যেই সংগঠনটি সবচেয়ে সংগঠিত.. শৃঙ্খলা কাকে বলে; এই সংগঠনটি দেখিয়েছে।”

গোয়েন্দা তথ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে ওমর ফারুক বলেন,“গোয়েন্দারা এতই যদি তৎপর হয়, তাহলে এতদিন কী করেছিলেন? পত্রপত্রিকা যদি এতই তথ্য জানেন; তাহলে এতদিন তথ্যগুলো তুলে আনেননি কেন? আমি কেন জানলাম না? আমরা কেন জানলাম না? আপনি অতীতে জানতেন। লুকিয়ে রেখেছিলেন। কেন?”

নিজের ব্যর্থতার কথাও স্বীকার করে ওমর ফারুক বলেন, “আমার ব্যর্থতা আছে, অস্বীকার করছি না।

“আমি প্রতিটি কাজের জন্য হাততালি পাব,আর অপকর্মের জন্য নিগৃহীত হব না, সেটা তো হয় না।

“প্রশ্ন আমার এখানে-  হঠাৎ কেন জেগে উঠলেন?”