দুর্নীতি সর্বকালের রেকর্ড ভঙ্গ করেছে: মওদুদ

দেশে ‘নির্বাচিত সরকার নেই’ মন্তব্য করে বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, এ কারণেই সর্বস্তরে দুর্নীতি ‘মহামারির’ আকার পেয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 04:05 PM
Updated : 18 Sept 2019, 04:05 PM

বুধবার এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, সরকারি, আধা সরকারি যে কোনো সংস্থায়, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়েও যে কোনো পদে চাকরির জন্য এখন ‘টাকা দিতে হয়’।

“একজন পিয়নের জন্য ৩ লাখ টাকা, একজন নার্সের ৫ লাখ টাকা, টিআইবির যে রিপোর্ট বেরিয়েছে শুনলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার নিয়োগের জন্য ব্রাউন ইনভেলপ, অর্থাৎ টাকার খাম লাগে। প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে নির্ধারণ হয়ে থাকে। অর্থাৎ এমন কোনো জায়গা নাই যেখানে বাণিজ্য নাই, ঘুষ ও অন্যায় অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ব্যবস্থা নাই।

‘‘দেশে নির্বাচিত সরকার নাই বলে দেশের সর্বস্তরে আজ দুর্নীতি ছড়িয়ে পড়েছে। আমি বলব, আজকে দুর্নীতি সর্বকালের সমস্ত রেকর্ড ভঙ্গ করেছে এই সরকারের সময়ে।”

প্রতি বছর দেশ থেকে ৭৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে- এমন খবর পত্রিকায় দেখেছেন মন্তব্য করে মওদুদ আহমদ বলেন, “এসব কাদের টাকা? জনগণের টাকা। কারা এটা ভোগ করছেন? যারা এসব লুট করছেন, যারা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন, যারা ব্ল্যাক মার্কেটিং করেছেন, স্মাগলিং করেছেন এবং অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করেছেন। তারাই টাকা বিদেশে পাঠিয়ে আইন লঙ্ঘন করছেন।”

চাঁদাবাজির অভিযোগে সম্প্রতি ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে সরিয়ে দেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মওদুদ বলেন, “আজকে তাদের মুখোশ খুলে গেছে। আজকে বিরোধী দল নাই। তবে এমন অবস্থা হয়েছে যে সরকার ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদককে অপসারণ করতে বাধ্য হয়েছে। কেন? টাকার জন্য, ঘুষের জন্য, দুর্নীতির জন্য।

“সরকার তাহলে কী বোঝাতে চাচ্ছে? তারা বাংলাদেশের মানুষকে বলছে যে, এই ছাত্রলীগ, এই যুবলীগ এরা টেন্ডারবাজি করে, চাঁদাবাজি করে, এরা মানুষের ওপর অত্যাচার করে, এরা জমি দখল করে, এরা দোকান দখল করে, এরা মানুষের ওপর অত্যাচার করে টাকা নেয়, মানুষকে গুম করে টাকা নেয়- এই ধরনের কথাই তো আজকে তারা প্রমাণ করেছে।”

আওয়ামী লীগ সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সমালোচনা করে বিএনপি আমলের আইনমন্ত্রী মওদুদ বলেন, “বর্তমান সরকার একটি নতজানু সরকার বলে কখনোই রোহিঙ্গা ও আসামের নাগরিকপঞ্জির বিষয়ে সফল হতে পারবে না। তার কারণ তারা (সরকার) দুর্বল, তাদের শক্তি নাই, জনগণের সমর্থন তাদের নাই।”

আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব কি না- সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে বিএনপি চেয়ারপারসনের অন্যতম আইনজীবী মওদুদ বলেন, “আমরা আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তির জন্য চেষ্টা করছি, করে যাবো। কিন্তু এর মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। তার মুক্তি হবে রাজপথে।”

“যদি রাজপথে আন্দোলন করতে পারি, তাহলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে এবং সেইদিনের অপেক্ষায় আমাদের থাকতে হবে। আমাদের ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে। আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি যখন দেওয়া হবে, তখন সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে সেই আন্দোলন সফল করতে হবে এবং বেগম জিয়াকে মুক্ত করতে হবে।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (এইবি) উদ্যোগে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন হয়।

এইবির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নেতা অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, কাদের গণি চৌধুরী, শামীমুর রহমান শামীম, ড্যাবের আবদুস সালাম, প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন মানববন্ধনে বক্তব্য দেন।