ঢাবির ঘটনা কেউ কল্পনা করতে পারেনি: খন্দকার মোশাররফ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা ছাড়াই ছাত্রলীগ নেতাদের সান্ধ্যকালীন মাস্টার্সে ভর্তি হওয়াকে ‘বড় দুর্নীতি’ বলে আখ্যায়িত করেছেন বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Sept 2019, 02:12 PM
Updated : 18 Sept 2019, 02:12 PM

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী নবীন দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি।

দেশের ‘সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলোতে দুর্নীতি হচ্ছে’ উল্লেখ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক খন্দকার মোশাররফ বলেন, “সবচেয়ে দুর্ভাগ্য আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এদেশের শিক্ষিত দেশপ্রেমিক জনশক্তি তৈরি করার জন্য সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ।

“এই বিদ্যাপীঠে কী পরিমাণ দুর্নীতি হচ্ছে সরকারের কর্তৃত্বে এবং তাদের দলের নেতাকর্মীদের দ্বারা কী পরিমাণ যে লুটপাট-অনিয়ম হচ্ছে, আপনারা ইদানিংকালের পত্রপত্রিকায় তা দেখতে পারছেন।”

তিনি বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় ভর্তি পরীক্ষা ছাড়া ভর্তি হতে পারে এটা কোনোদিন কেউ কল্পনা করতে পারেনি। কত বড় অন্যায়, কত বড় দুর্নীতি!

“আপনারা দেখেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে ৮৬ কোটি টাকা চাঁদাবাজি করার দায়ে আজকে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বহিস্কৃত। এটাও বাংলাদেশের ইতিহাসে অস্বাভাবিক বিষয়।”

পরিস্থিতি ‘খারাপের দিকে যাচ্ছে’ মন্তব্য করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, “আজকে বাংলাদেশের সকল প্রতিষ্ঠান সরকারের নিয়ন্ত্রণহীন, লাগামহীন। গণতন্ত্রহীনতার কারণে সর্বত্র নৈরাজ্য বিরাজ করছে। এই অবস্থায় দেশ একটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে, দেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছে। সর্বক্ষেত্রে সর্বগ্রাসী অবক্ষয় ঘটেছে।”

তিনি বলেন, “উচ্চ আদালত মানুষের সর্বশেষ যে জায়গা হাই কোর্ট সেখানে তিনজন বিচারপতিকে এই সরকারের সময়ে চিহ্নিত করা হয়েছে তারা দুর্নীতিবাজ। আজকে আপনি তাকান পুলিশ ডিপার্টমেন্টের দিকে- ডিআইজি, এসপি, পুলিশের ডিসি- আজকে দুর্নীতির দায়ে এই সরকারের হাতেই ধরা খেয়েছে।

“আপনি তাকান সরকারি সিভিল সার্ভিসের দিকে। আপনারা দেখেছেন, একজন জেলা প্রশাসককে অপকর্মের জন্য প্রত্যাহার করা হয়েছে, তার বিচার চলছে। দুদকের দিকে তাকান সেখানে একজন পরিচালক দুর্নীতির দায়ে কারাগারে। কারাগারের ডিআইজি আজকে কারাগারে। প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে দেখেন, এতো করছে তারা, কেউ কেউ না কেউ ধরা পড়ে যাচ্ছে।”

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আয়োজিত এই সভায় মোশাররফ বলেন, সরকার ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’ চরিতার্থ করতে দেশনেত্রীকে কারাগারে আটকে রেখেছে।

“দেশনেত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। আমরা চাই অবিলম্বে তার মুক্তি দেওয়া হোক। তিনি মুক্তি না পেলে গণতন্ত্র মুক্তি পাবে না। আমরা গণতান্ত্রিক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে তার মুক্তির জন্য কাজ করছি। একই সঙ্গে আদালতের মাধ্যমে জামিনের চেষ্টা করছি। যদিও আমরা জানি, এই আদালত সরকারের হস্তক্ষেপের কারণে দেশনেত্রীকে মুক্তি দেবে না।”

সংগঠনের সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ তালুকদারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, কেন্দ্রীয় নেতা এবিএম মোশাররফ হোসেন, আবদুস সালাম আজাদ, শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।