জাবি উপাচার্যের অপসারণ দাবি মির্জা ফখরুলের

দরপত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতাদের সঙ্গে ‘ঘুষ লেনদেনের’ অভিযোগ ওঠায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণ চেয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Sept 2019, 10:28 AM
Updated : 16 Sept 2019, 04:21 PM

রোববার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে তিনি দাবি তোলেন।

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়।

সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি ঘটনায় চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার প্রেক্ষাপটে শেখ হাসিনা ক্ষুব্ধ হলে ক্ষমতাসীন দলের ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

অভিযোগ রয়েছে, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দরপত্রের কাজ থেকে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুই কোটি টাকা চাঁদা দাবি করলেও পরে এক কোটি টাকা দেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত হয়েছিল।

তবে শোভন এবং রাব্বানী উপাচার্য ফারজানা ইসলামের কাছে চাঁদা দাবি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আজকে একটা খুব ইন্টারেস্টিং খবর আছে- জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ঘুষ চাওয়ার অপরাধে- ওটার আবার নতুন নাম দিয়েছে ‘ফেয়ার শেয়ার’ অর্থাৎ ঘুষটা যে ওরা নেবে ৫%, ১৯%- এটা ফেয়ার শেয়ার। এই ফেয়ার শেয়ারের মধ্যে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের নাম চলে এসেছে। উনি নাকি ইতিমধ্যে এক কোটি টাকা দিয়েছেন।

“তাহলে শুধুমাত্র এই দুই ছাত্র (ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক) কেন বাবা। ভাইস চ্যান্সেলরের কী হবে? ইমিডিয়েটলি দ্য ভাইস চ্যান্সেলর শুড রিজাইন অর শি শুড বি স্যাকড।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও ডিন- তারা গোপনে ছাত্র ভর্তি করছে রাত্রিবেলা। কোথায় আছে! কোথায় আপনার দুর্নীতিমুক্ত জায়গা? স্বাস্থ্য ব্যবস্থা, শিক্ষা ব্যবস্থা, বিচারালয়- কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই।”

ডিএমপি কমিশনারের প্রশংসা ও ‘থলের বেড়াল’

মির্জা ফখরুল বলেন, “কালকে নতুন পুলিশ কমিশনার সাহেব জয়েন করেছেন। ভালো ভালো কথা বলেছেন। একটা কথা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং মনে হয়েছে- ‘যদি ওসি কাজ না করে এবং সেবার বিনিময়ে অর্থ দাবি করে তাহলে সেখানে আমাদেরকে জানাবেন, আমরাই গিয়ে সেখানে বসব’।

“ইটস এ রিকগনেশন অব দ্য করাপশন। দুই (ছাত্রলীগ) নেতাকে বের করে দিয়ে তারা স্বীকার করে নিয়েছেন যে, করাপশন চলছে। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে, হাজার চেষ্টা করেও আর ঢেকে রাখা যাচ্ছে না। বেরিয়ে আসছে থলের বেড়াল, ওই কালো বেড়ালের মতো এবং এটা এখন জনগণের কাছে পুরোপুরি চলে গেছে।”

‘রাজনীতিবিদরা রাষ্ট্র চালাচ্ছেন না’

ফখরুল বলেন, “এখন এই দেশে কোনো গণতন্ত্র নেই। কারো কোনো স্বাধীনতা নেই। কী করেছে এই সরকার? এখন রাজনীতিবিদরা রাষ্ট্র পরিচালনা করছেন না, রাষ্ট্রই আজকে রাজনীতিবিদদেরকে পরিচালনা করছে। সেলিম সাহেব (মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম) বলেছেন সেদিন। এই কথাটা অত্যন্ত সত্য কথা। না, পলিটিক্স এখন পলিটিশিয়ানরা চালান না, রাজনৈতিক দল চালায় না, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সংগঠন-সংস্থা তারাই এখন রাজনীতিবিদ পরিচালনা করে। এটাই বাস্তবতা, এটাই সত্য। এই সত্যকে উপলব্ধি করে জনগণকে তাদের অধিকার রক্ষার জন্য দাঁড়াতে হবে।”

সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, “এত ভয় পান কেন? ছাত্রদলের কাউন্সিল বন্ধ করতে কী বিভিন্ন নাটক আপনারা দেখলেন, কেন? তাহলে গণতন্ত্রকে আপনারা চলতে দিতে চান না। যারা গণতান্ত্রিকভাবে কাজ করতে চায় তাদেরকে আপনারা বাধা দিতে চান, তাদেরকে পথকে বন্ধ করে দিতে চান।”

মানববন্ধনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা জয়নাল আবেদীন, শিরিন সুলতানা প্রমুখ বক্তব্য দেন।