শোভন-রাব্বানীর পদচ্যুতি সর্বব্যাপী দুর্নীতির স্বীকৃতি: ফখরুল

চাঁদাবাজির অভিযোগে শোভন-রাব্বানীকে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়াটা ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতির স্বীকৃতি বলে দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Sept 2019, 04:14 PM
Updated : 15 Sept 2019, 04:14 PM

তিনি বলেছেন, “এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে, তাদের দল দুর্নীতি করছে এবং সবাই মিলে দুর্নীতি করছে। এটা তো রেকগনিশন অব করাপশন।”

চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পর শনিবার আওয়ামী লীগে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন ও গোলাম রাব্বানীকে সরিয়ে দেন শেখ হাসিনা।

আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস উপলক্ষে রোববার বিকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে কথা বলেন মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, “এটাই (ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতাকে সরিয়ে দেওয়া) প্রমাণ করেছে দেশে কী হারে দুর্নীতি চলছে, চাঁদাবাজি…। এটাতে শুধু একটা প্রকাশ পেয়েছে যে, এটাতে একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারি জড়িত তাদের আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দেশের প্রধানমন্ত্রীকে বহিষ্কার করতে হয়েছে। এ রকম সারা দেশে অনেক চলছে।

“এটা প্রমাণ করে দুর্নীতি কোন পর্যায়ে চলে গেছে। এটা (বহিঙ্কার) হচ্ছে স্বীকৃতি, রেকগনিশন। এটা প্রমাণ হয়ে গেছে যে, তারা দুর্নীতি করছে।”

ছাত্র দলের কাউন্সিল প্রসঙ্গে এক প্রশ্রের জবাবে ফখরুল বলেন, “আইন দিয়ে তো রাজনীতি হয় না। আমি সেদিনও বলেছি যে, এভাবে রাজনীতিকে আদালত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা- এখানেই আমাদের আপত্তি। এটা নজিরবিহীন ঘটনা। যে একটা রাজনৈতিক দলের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে চাচ্ছে আদালত এবং সেটা সরকারের উদ্যোগে, তারাই করাচ্ছে।

“এটাতে প্রমাণিত যে, এই সরকার গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না, বিরোধী দলে বিশ্বাস করে না। এটাই বাস্তবতা।”

সরকার বাংলাদেশে ‘নির্বাচনী স্বৈরতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠা করেছে বলেও অভিযোগ করেন ফখরুল।

তিনি বলেন, “সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে ধ্বংস করে ফেলেছে, তারা এসবকে ধ্বংস করে ফেলেছে স্বৈরতান্ত্রিক বা অটোক্রেটিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এখানে দুটি বিষয় আছে- একটা হচ্ছে পোশাক, পোশাক পরে ভাব দেখানো হয়-এটাই গণতন্ত্র, ভেতরে ভেতরে গণতন্ত্রের উল্টো।

“আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবসে জনগণের কাছে আমরা যে বক্তব্যটি দিতে চাই তা হচ্ছে, আসুন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি, গণতন্ত্রের মুক্তি, সুশাসন প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা- এক কথায় উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণে আমাদের দলমত নির্বিশেষে মুক্তিযুদ্ধে গণতন্ত্রের চেতনার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলাম, সেই চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে সেই লক্ষ্যে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাই এবং ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র নির্মাণ করতে বদ্ধপরিকর।”

বিগত ১০ বছরে বিরোধী দলের প্রায় ২৬ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে এক লাখের বেশি মামলা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব।

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।