সরকারের ‘কারসাজিতেই’ এই স্থগিতাদেশ এসেছে বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিএনপি।
ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির বিদায়ী ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক আমান উল্লাহর একটি আবেদনে বৃহস্পতিবার ঢাকার জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ নুসরাত জাহান কাউন্সিলে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেন।
ছাত্রদলের নতুন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনে আগামী শনিবার কাউন্সিলের আয়োজন হয়েছিল। ফলে তা এখন আটকে গেল।
আদালত এই কাউন্সিলে অস্থায়ী স্থগিতাদেশ দেওয়ার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সম্মেলন করার প্রশ্নে কারণ দর্শানোর নোটিস দিয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকনসহ ১০ বিবাদীকে ১০ দিনের নোটিসের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বিএনপির সিদ্ধান্তে রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটি ভেঙে দিয়ে এই কাউন্সিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই নির্বাচন পরিচালনা কমিটির চেয়ারম্যান হলেন ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন।
জজ আদালতের জারিকারক মো. মামুনুর রশিদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সন্ধ্যায় জরুরি ভিত্তিতে আদালতের নোটিসটি নেজারত শাখায় দেওয়া হলে আমি নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নিয়ে যাই। সেখানে মো. রেজাউল করিম নামে একজন নোটিসটি রিসিভ করেছেন।”
কী বিষয় চ্যালেঞ্জ করে আমান আদালতে গেছেন, তা স্পষ্ট হওয়া যায়নি। তার কোনো ভাষ্যও পাওয়া যায়নি।
সরকারের ‘চক্রান্ত’
আদালতের নোটিস পাওয়ার পর ছাত্রদলের কাউন্সিল আয়োজনে যুক্ত বিএনপি নেতারা রাতে গুলশানে দলীয় চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বৈঠকে বসেন। পরে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন তারা।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “ছাত্রদলের কাউন্সিলে স্থগিতাদেশ দেওয়া গভীর চক্রান্তমূলক। সরকারের কারসাজিতেই এহেন আদেশ প্রদান করা হয়েছে।
“আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর ছাত্রদলের কাউন্সিলকে কেন্দ্র করে কাউন্সিলরদের মধ্যে যে উৎসাহ ও স্বতঃস্ফূর্তা স্ফূরণ সৃষ্টি হয়েছিল, সেটিকে বানচাল করার জন্যই এই আদেশ সরকারের মাস্টার প্ল্যানের অংশ বলে আমরা মনে করি। এটি আওয়ামী লীগ সরকারের প্রতিহিংসাপরায়ণ রাজনীতির আরেকটি অধ্যায় হয়ে থাকবে।”
আমান উল্লাহর আবেদন সম্পর্কে রিজভী বলেন, “যে ছেলেটি নিজে এই কাউন্সিলে কোনো পদে প্রার্থী নয় এবং সে নিজে কাউন্সিলরও নয়, অথচ তার করা মামলায় ছাত্রদলের কাউন্সিলের উপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হল। কোনো বিচার বিশ্লেষণ ও যুক্তি ছাড়া এই আদেশ দেওয়া আমরা মনে করি গভীর চক্রান্তমূলক।”
তিনি আরও বলেন, “আজকে বিকালে আমি একটু বাইরে বেরিয়েছি। এই সময়ে শুনলাম যে আদালত থেকে একজন লোক একটি কাগজ নিয়ে এসেছেন। একই সাথে ঢুকছেন একটি বিশেষ চ্যানেলের ক্যামেরাম্যান ও সাংবাদিক। এটা নিশ্চয়ই কাকতালীয় নয়? বরং সমান্তরালভাবে কাজটি হচ্ছে। এই কারণে আমরা বলছি যে, এটা গভীর চক্রান্ত।”
কাউন্সিলের বিষয়ে এখন কী সিদ্ধান্ত হবে- জানতে চাইলে রিজভী বলেন, “কালকে সিনিয়র নেতারা বৈঠক করবেন, তারপরে পরবর্তী সিদ্ধান্ত আপনারা জানতে পারবেন।”
ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভীর সঙ্গে সংবাদ সম্মেলনে ছিলেন ছাত্রদলের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক খায়রুল কবির খোকন, সদস্য ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, আজিজুল বারী হেলাল, শফিউল বারী বাবু, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, আবদুল কাদের ভুঁইয়া জুয়েল, রাজীব আহসান, আকরামুল হাসান, হাবিবুর রশীদ হাবিব প্রমুখ।
পুরনো খবর