রোহিঙ্গা ইস্যুতে দলবাজি নয়, সহযোগিতা করুন: নাসিম

রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে  ‘দলবাজি’ না করে ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানালেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 Sept 2019, 05:52 PM
Updated : 2 Sept 2019, 05:52 PM

সোমবার কাকরাইলের ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে ন্যাপ নেতা প্রয়াত মোজাফ্ফর আহমদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি এই আহ্বান জানান।

নাসিম বলেন, “শেখ হাসিনা মায়ের মমতা দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য সারা বিশ্ব প্রশংসা করেছে। আজকে কী দেখি আমরা? এই রোহিঙ্গাদের কেন্দ্র করে অশুভ শক্তির চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে।

“সারা দুনিয়াকে আমরা বলব মিয়ানমারের উপরে চাপ সৃষ্টি করুন। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার ব্যবস্থা করুন।”

রোহিঙ্গা সঙ্কট সবাইকে ‘ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলা’ করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন,  “এই প্রশ্নে কোনো রাজনীতি নয়, এই প্রশ্নে কোনো দলবাজি নয়।

“সরকারকে সবাই সাহায্য করুন। রোহিঙ্গা ফেরত নেওয়ার ব্যাপারে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে অনুরোধ করবো ঐক্যবদ্ধভাবে আপনারা আমাদের সহযোগিতা করুন। এখানে আমরা দলবাজি করতে চাই না।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত সিপিবির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনজুরুল আহসান খানকে উদ্দেশ করে নাসিম বলেন, “সরকার যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হয়, তাহলে বিরোধী দলও হবে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির, এটাই আমরা আশা করি।

“কমিউনিস্ট পার্টি, ন্যাপ আরও শক্তিশালী হোক, এটা আমরা আশা করি। আমি কমিউনিস্ট পার্টি ও ন্যাপকে বলব, আপনারা আরও শক্তিশালী  হয়ে আমাদের বিরোধিতা করুন। বিএনপি-জামায়াত কেন এই দেশে শক্তিশালী দল হবে? আপনারা শক্তি অর্জন করে তাদের স্থান দখল করুন।”

আওয়ামী লীগের এক সময়ের জোটসঙ্গী সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, “একটি ট্যাজেডি হল স্বাধীনতার পর কমিউনিস্ট পার্টি আর ন্যাপ যদি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে বিরোধী দলে থাকত, তবে বিএনপি-জামায়াতের যে বিপদ তা থাকত না।”

অনুষ্ঠানে রাজনীতিক নেতারা প্রয়াত মোজাফফর আহমদের জীবনের নানা দিক তুলে ধরেন।

গত ২৩ অগাস্ট মারা যান বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর আহমদ।

নাসিম বলেন, “আজকের এই ঐক্যবদ্ধ ১৪ দল গঠনের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন মোজাফ্ফর আহমদ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও অনেক সময় উনার কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে কাজ করতেন। তিনি ছিলেন বাংলাদেশে একজন আদর্শবান রাজনৈতিক নেতা।”

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, “মোজাফ্ফর আহমদ ছিলেন আদর্শবান রাজনীতির মূর্ত প্রতীক।  আমরা জাতীয়ভাবে তাকে স্মরণ করতে চাই।”

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, “তিনি বিশ্বাস নিয়ে, আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করেছেন। তার মধ্যে ছিল আদর্শ ও নিষ্ঠা, যা একজন রাজনীতিকের জীবনে বড় অর্জন।“

মনজরুল আহসান খান বলেন, “মওলানা ভাসানী এ দেশের অনেক বড় নেতা ছিলেন। মাওলানা ভাসানী একবার চীন, একবার মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়ে মূল ধারা থেকে বের হয়ে গেলেও মোজাফ্ফর আহমদ কিন্তু এর সঙ্গে আপস করেননি।”

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, ঐক্য ন্যাপের নেতা পংকজ ভট্টাচার্য, জাসদ সভাপতি নুরুল শরিফ আম্বিয়া, ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য আনিসুর রহমান মল্লিক, কলামনিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ সভায় বক্তব্য রাখেন।