‘পকেট কমিটি’র বৃত্ত ভাঙার আশায় ছাত্রদলের পদপ্রত্যাশীরা

শীর্ষ নেতা নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের আসন্ন কাউন্সিলে ‘পকেট’ বা ‘সাজানো’ কমিটির বৃত্ত ভাঙবে বলে আশায় আছেন সংগঠনটির পদপ্রত্যাশীরা।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2019, 07:33 PM
Updated : 25 August 2019, 07:35 PM

২৭ বছর পর আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর বিএনপির ছাত্র সংগঠনটির কাউন্সিল হতে যাচ্ছে, যাতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হবে।

কারাগারে থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার এবং লন্ডনে থাকায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে ছাত্রদলের কাউন্সিল আয়োজন এবং ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বচনের প্রক্রিয়াকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন সংগঠনটির নবীন-প্রবীণ নেতারা।

তবে ষষ্ঠ এই কাউন্সিলকে ঘিরে ছাত্রদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরাও চষে বেড়াচ্ছেন কাউন্সিলরদের দুয়ারে দুয়ারে।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, প্রার্থীদের প্রচার শুরু হবে ৩ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ সেপ্টেম্ববর ১০দিন। তবে এর আগেই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থীরা অনানুষ্ঠানিক প্রচার করছে কিছুটা আড়ালে-অগোচরে।

সাবেক ছাত্র নেতাদের মতে, ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচনের সাহসী সিদ্ধান্ত ছাত্রদলের নেতৃত্বকে ছাত্রদের মধ্যে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা রাখবে, এটি সংগঠনটির জন্য মাইলফলক হয়ে থাকবে।

দীর্ঘদিন ধরেই অছাত্রদের নেতৃত্বে চলছে ছাত্রদল, যা নিয়ে সংগঠনের মধ্যেও সমালোচনা রয়েছে।

প্রার্থীদের মতে, কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নেতা নির্বাচন ছাত্রদলের জন্য মাইলফলক হবে।

এর আগে কমিটিগুলো  যে ধারায় হয়েছে, তা নিয়ে দুচিন্তাও রয়েছে প্রার্থীদের মধ্যে। তারপরও তাদের আশা, ‘সিন্ডিকেটের পকেট’ কমিটির’ ধারা থেকে বেরিয়ে আসবে ছাত্রদল।

এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হতে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ৭৬টি। এর মধ্যে সভাপতি পদে ২৭ জন এবং সাধারণ সম্পাদক ৪৯ জন। বাছাই-যাছাই প্রক্রিয়া শেষ হবে ২৬ আগস্ট, চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করবে ২ সেপ্টেম্বর।

দুই শীর্ষ পদে নেতা নির্বাচনে সারাদেশে ১১৭টি সাংগঠনিক ইউনিটের ৫৮০ জন কাউন্সিলর ভোট দেবেন।

কাউন্সিল: ফিরে দেখা

বিএনপি প্রতিষ্ঠার এক বছর পর ১৯৭৯ সালের ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল। এই দীর্ঘ সময়ে ২২টি কমিটি হলেও কাউন্সিল হয়েছে মাত্র ৫টি।

প্রথম কাউন্সিল হয় ১৯৭৯ সালের ১৫ নভেম্বর; তাতে এনামুল করিম শহীদ সভাপতি এবংআকম গোলাম হোসেন (প্রয়াত) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

সর্বশেষ কাউন্সিল হয়েছিল ১৯৯২ সালেরর ১৬ জুন। ওই কাউন্সিলে রুহুল কবির রিজভী সভাপতি এবং এম ইলিয়াস আলী (নিখোঁজ) সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।  একমিটি মাত্র তিন মাস কার্যকর ছিল, পরে তা ভেঙে দেওয়া হয়।

# প্রথম কাউন্সিল : সভাপতি - এনামুল করিম শহীদ, সাধারণ সম্পাদক – আকম গোলাম হোসেন।

# দ্বিতীয় কাউন্সিল : সভাপতি – গোলাম সারোয়ার মিলন, সাধারণ সম্পাদক- আবুল কাশেম চৌধুরী।

# তৃতীয় কাউন্সিল : সভাপতি – আবুল কাশেম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক – জালাল আহমেদ।

# চতুর্থ কাউন্সিল : সভাপতি –জালাল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক – মাহবুবুল হক বাবলু।

# পঞ্চম কাউন্সিল : সভাপতি – রুহুল কবির রিজভী, সাধারণ সম্পাদক – এম ইলিয়াস আলী।

ছাত্রদলের বাকি কমিটিগুলো বিএনপির শীর্ষনেতার হাত দিয়েই হয়েছিল; তবে এক্ষেত্রে সাবেক নেতাদের ‘সিন্ডিকেট’ প্রভাব খাটিয়েছে বলে সংগঠনটির মধ্যেই অভিযোগ রয়েছে।

‘ভোটেই ঠিক হবে নেতা’

ছাত্রদলের কাউন্সিল উপলক্ষে নির্বাচন পরিচালনায় সাবেক নেতাদের সমন্বয়ে তিনটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।এগুলো হল- নির্বাচন পরিচালনা কমিটি, বাছাই কমিটি ও আপিল কমিটি।

কাউন্সিলর আয়োজনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা

১৯৮৩-৮৬ সালের ছাত্রদলের সভাপতি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তারেক রহমানের পরামর্শেই তারা উদ্যোগী হয়ে কাউন্সিলের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন।

“এই নির্বাচনের উদ্দেশ্যই হচ্ছে মেধাবী ও পরীক্ষিত নেতৃত্ব গড়ে তোলা। ভোটই ঠিক করবে, ছাত্রদলের আগামী নেতা কে হবে।”

সর্বশেষ কাউন্সিলে নির্বাচিত সভাপতি ও বর্তমানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “অনেকে বলেন যে, ছাত্রদলের কাউন্সিল হঠাৎ করে। আমি বলতে চাই, হঠাৎ করে নয়, ছাত্রদল জন্মলগ্ন থেকেই তার কাউন্সিল ও সম্মেলনের মধ্য দিয়ে তারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। এই কার্যক্রম হয়ত যথাসময়ে  নির্দিষ্ট মেয়াদের মধ্যে সব সময় করা যায়নি, অন্যান্য গুরুদায়িত্বওছাত্র দল পালন করেছে।”

‘টেনশনে’ প্রার্থীরা

ছাত্রদলের নেতৃত্বে আসার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা রয়েছেন, তারা সবাই ‘টেনশনে’ থাকার কথাই জানিয়েছেন। এই ‘টেনশনের’ কারণে সাবেক নেতা ও বিভিন্ন আঞ্চলিক ‘সিন্ডিকেটের’ প্রভাব।

আল মেহেদী তালুকদার

সভাপতি প্রার্থীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আল মেহেদী তালুকদারকে ঘিরে রয়েছে অনেক জল্পনা-কল্পনা। নরসিংদী জেলার এই ছাত্রনেতা বিয়ে করেছেন এবং তার সন্তানও জন্মেছে বলে নেতাকর্মীদের ভাষ্য। সে কারণে বাছাইয়ে তার বাদ পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।

তবে মেহেদী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বীরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার বিয়ের বিষয়টি ছড়াচ্ছে।

“কারও সঙ্গে সম্পর্ক থাকা মানেই বিয়ে নয়। আমার সন্তান আছে বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা একেবারেই অবান্তর।”

নিজেকে পুরান ঢাকার বাসিন্দা দাবি করে তিনি বলেন, “দাদার বাড়ি নরসিংদীতে হলেও আমার জন্ম ঢাকায়। আর কাউন্সিলররা এলাকা দেখে ভোট দেবেন না; তারা প্রার্থীর যোগ্যতা এবং দলের জন্য অবদানের কথা বিবেচনায় রেখেই ভোট দেবেন।”

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিলুপ্ত কমিটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমানও সভাপতি প্রার্থী।

তিনি বলেন, “নির্দিষ্ট কোনো অঞ্চল কিংবা কোনো বলয়ে নয়, খাগড়াছড়ি থেকে রংপুর-রাজশাহী সর্বত্রই আমার বিচরণ ছিল। এবার নেতৃত্ব নির্বাচন হবে কাউন্সিলরদের ভোটে। তাই আমি জয়ের বিষয়ে খুবই আশাবাদী।”

আজিম উদ্দিন মেরাজ

নোয়াখালী অঞ্চল থেকে সভাপতি প্রার্থী আজিম উদ্দিন মেরাজ বলেন, “দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে সংগঠনের জন্য যেসব অবদান রেখেছি, আগামী কাউন্সিলে কর্মীদের কাছে তার মূল্যায়ন পাব বলে আমি আশাবাদী।”

সভাপতি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বীতাকারীদের মধ্যে মিরাজ জ্যেষ্ঠদের একজন। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও দুর্যোগবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হল শাখার আইন সম্পাদক ছিলেন তিনি।

সভাপতি পদে বৃহত্তর বরিশাল অঞ্চলের প্রার্থী ঝালকাঠির মামুন খান।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি কোনো ব্যক্তি কিংবা অঞ্চলের ক্যান্ডিডেট না। ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।”

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত দুই কমিটিতে সংগঠনের সাবেক সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ‘ভালো সুবিধা’ করতে না পারলেও ভোটের রাজনীতিতে তার অনুসারীরা এবার শক্ত অবস্থানে থাকবে। তবে টুকুর অনুসারী হিসাবে পরিচিত একাধিক প্রার্থী এবার সভাপতি পদে প্রার্থী হওয়ায় তাও তাদের দুশ্চিন্তার কারণ।

কাউন্সিলে টুকুর সমর্থন পাওয়ার আশা করছেন যশোরের কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, বগুড়ার মো. ফজলুর রহমান (খোকন) ও ময়মনসিংহের আশরাফুল আলম ফকির লিংকন।

শ্রাবণ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, বিগত দিনে সরকারিবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে তার নির্যাতিত হওয়া, কারাবরণ করার বিষয়গুলো নেতা-কর্মীরা অবশ্যই বিবেচনায় নেবেন।

কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ

সভাপতি পদে বৃহত্তর চট্টগ্রাম থেকে রয়েছেন কক্সবাজারের চকরিয়ার বাসিন্দা আসাদুল আলম টিটু। তারও রয়েছে বিয়ের গুঞ্জন।

সাধারণ সম্পাদক পদে নরসিংদী জেলা থেকে এবার প্রার্থী হয়েছেন রাশেদ ইকবাল খান ও ইমরান হোসেন শ্যামল।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের একজন কর্মী বলেন, “সভাপতি পদে আল মেহেদী তালুকদার টিকতে না পারলে নরসিংদীর নেতারা রাশেদকে সমর্থন দিতে পারেন। বিশেষ করে সাবেক সভাপতি আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েলের আস্থায় আছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক রাশেদ।”

এই জেলারই আরেক প্রার্থী আছেন ইকবাল হাসান শ্যামল। সদ্য সাবেক সভাপতি আকরামুল হাসানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত তিনি।

শ্যামল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “যারা প্রত্যক্ষভাবে ভোটারদের মন জয় করতে পারবে, তারাই ভোট পাবে। সিন্ডিকেট এখানে কাজ করবে বলে মনে হয় না।

“কারণ ভোটারদের সবাই রাজনৈতিকভাবে সচেতন। সুপরিচিত, যোগ্য এবং আগামী দিনে প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে সক্ষমদেরই বেছে নেবে কাউন্সিলররা।”

যশোরের ছেলে মহিউদ্দিন রাজু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল বাশারও টুকুর আস্থাভাজন বলে কর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন আছে।

সাধারণ সম্পাদক পদে আরেকজন প্রতিদ্বন্দ্বী এ এফ রহমান হলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল হাওলাদার। বরিশালের ছেলে জুয়েল ওই অঞ্চলের সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম নয়নের আস্থাভাজন।

বরিশাল অঞ্চল থেকে আরেকজন প্রার্থী রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও পটুয়াখালীর মোহাম্মদ হাসান (তানজিল হাসান)। সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুল আহসান ও ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসান মামুনের অনুসারী হিসাবে পরিচিত তানজিল।

মনোনয়নপত্র জমা দিচ্ছেন এক প্রার্থী

নোয়াখালী অঞ্চল থেকেও সাধারণ সম্পাদক পদে বেশ কয়েকজন প্রার্থী রয়েছেন। সংখ্যায় বেশি হওয়ায় তারা কতটুকু সুবিধা করতে পারবেন, তা নিয়ে কর্মীদের রয়েছে সংশয়।

লক্ষ্মীপুর থেকে রিয়াজ মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন ও ওমর ফারুক শাকিল চৌধুরী, নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে শাহনেওয়াজ ও মোহাম্মদ কারীমুল হাই নাঈম রয়েছেন প্রার্থী তালিকায়।

নাঈম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থীদের মধ্যে আমিই জ্যেষ্ঠ। নোয়াখালী অঞ্চল থেকে অনেকেই প্রার্থীহয়েছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাদের কেউ কেউ প্রত্যাহার করবেন বলে আশা রাখি।”

তবে নিজ এলাকার সাবেক ও বর্তমান নেতাকর্মীদের সমর্থন পাওয়ার বিষয়ে আশাবাদী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের নেতা শাহনেওয়াজ।

সাধারণ সম্পাদক পদে তিন নারী প্রার্থীর একজন ঢাকার বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাদিয়া পাঠান পাপন।

নাদিয়া পাঠান পাপন

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দলের পক্ষ আন্দোলন-সংগ্রামে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে মাঠে পড়ে আছি। শেষ মুহূর্তে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। শীর্ষপদে একজন নারী নির্বাচিত হলে তা রাজনীতিতে মেয়েদের এগিয়ে আসার পথকে সুগম করবে।”

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা আশা করছেন, নতুন কমিটির নেতৃত্বে জোরাল হবে খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দাবির আন্দোলন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ সাংগঠনিক সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, “গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সরকারের হামলা-মামলার পরও কাউন্সিল ঘিরে সারা দেশের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা প্রমাণ করে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সময়োচিত ও যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত।

“নবগঠিত কমিটি অতীতের ন্যায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকবে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে আশা করি।"

ছাত্রদলের সর্বশেষ কমিটি গঠন হয়েছিল ২০১৪ সালের ১৪ অক্টোবর। ওই কমিটিতে সভাপতি ছিলেন রাজীব আহসান ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আকরামুল হাসান।

শুরুতে ১৫৩ সদস্যের আংশিক কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘদিন পর এই কমিটি পূর্ণাঙ্গ করা হয়, যাতে ৭৩৬ জনকে পদ দেওয়া হয়েছিল।

গত ৩ জুন ছাত্রদলের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি ভেঙে দেয় বিএনপি। এরপর ৪৫ দিনের মধ্যে কাউন্সিলে প্রত্যক্ষ ভোটে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচনের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।

এবার বয়সের শর্ত যোগ করা হলে তা নিয়ে সংগঠনটির একাংশ প্রকাশ্যে বিরোধিতায় নেমেছিল। নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও ভাংচুর চালানো হয়। তখন কয়েকজনকে বহিষ্কারও করা হয় ছাত্রদল থেকে। পরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।