ডেঙ্গু ছাড়া কাবু হইনি কভু: মুস্তফা কামাল

ডেঙ্গুর যাতনা ভুলতেই পারছেন না অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল; তার ভাষ্যে, জীবনে তাকে এত কাবু করতে পারেনি অন্য কিছু।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 August 2019, 02:18 PM
Updated : 25 August 2019, 02:21 PM

রোববার ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড আয়োজিত শোক দিবসের আলোচনায় নিজের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কথা আবার তোলেন তিনি।

অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আ আ স ম আরেফিন সিদ্দিকীর সঙ্গে নিজের বয়সের তুলনা করতে গিয়ে প্রধান অতিথি মুস্তফা কামাল বলেন, “আমি ভেবেছিলাম, আরেফিন সিদ্দিকি সাহেব আমার থেকে বড়। কিন্তু আমি উনার থেকে অনেক বড়। বয়সের দিক থেকে আমি বড়। কারণ উনি ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। আর আমি ১৯৬৮ সালে মাস্টার্স শেষ করেছি। আমার বয়স ৭৩।”

এরপরই তিনি বলেন, “বয়স অনেক হয়েছে, কেউ আমাকে কাবু করতে পারেনি। একমাত্র ডেঙ্গু আমাকে কাবু করেছে। বাজেটের দুদিন আগে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছি। ৭ মিনিট আমার জ্ঞান ছিল না। ওই ৭ মিনিট কিভাবে কেটেছে, আমি তা মেলাতে পারি না।”

এ বছর জুন মাসের শুরুর দিকে ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়। সে সময়ই আক্রান্ত হয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। গত ১৩ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপনের দুদিন আগে অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি।

বাজেট দিতে হাসপাতাল থেকে সরাসরি সংসদে যান অর্থমন্ত্রী, কিছুক্ষণ পর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রধানমন্ত্রী তার হয়ে বাজেট উপস্থাপন করেন।

সুস্থ হয়ে কাজে ফেরার পর আরও কয়েকটি অনুষ্ঠানে নিজের ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে মুস্তফা কামাল বলেছিলেন, ‘আল্লাহ’ যেন কাউকে ডেঙ্গু না দেয়।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গত ২৫ জুলাই এই অনুষ্ঠানেও ডেঙ্গুর যাতনার কথা বলেছিলেন অর্থমন্ত্রী (ফাইল ছবি)

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে পাকিস্তান আমলের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে চাটার্ড একাউন্টটেন্ট মুস্তফা কামাল বলেন, “পাকিস্তান আমলে আমি যখন অডিট করতে যেতাম, তখন চারজন অডিটরের মধ্যে অন্যরা আগেই টেবিলের সকল জায়গা দখল করে রাখত। আমাকে বসার জন্য একটি পুরানো ট্রাঙ্ক দেওয়া হত, আর অডিটের কাগজপত্র ও লেখার জন্য আরেকটি ট্রাঙ্ক দেওয়া হত, সেখানে বসেই আমাকে অডিট করতে হত।

“পাকিস্তানিরা আমাদের বাঙালিদের এভাবেই অবমূল্যায়ন করতো। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু আমাদের মুক্তি এনে দিয়েছেন।”

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে সোনালী যুদ্ধে নামার আহ্বান জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “বঙ্গবন্ধু মৃত্যুর আগে দুটি যুদ্ধ রেখে গেছেন। একটি হচ্ছে রক্তাক্ত যুদ্ধ, যার মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়েছে। সেই যুদ্ধে ৩০ লাখ নারী-পুরুষ শহীদ হয়েছেন, দুই লাখ মা-বোন সম্ভ্রম হারিয়েছেন। জীবন দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যসহ জাতীয় চার নেতা।

“আর একটি যুদ্ধ তিনি রেখে গেছেন, সেটি হলো সোনালী যুদ্ধ। যারা প্রথম যুদ্ধে অংশগ্রহণ করতে পারেননি, তারা সেই রক্তের ঋণ শোধ করতে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে এক সঙ্গে কাজ করবেন।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।