খালেদার বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যাবে বিএনপি

খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও মুক্তির বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2019, 03:25 PM
Updated : 17 August 2019, 03:44 PM

শনিবার সন্ধ্যায় স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।

তিনি বলেন, “আমরা দেশনেত্রীর স্বাস্থ্য ও তার মুক্তির বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। যেসব গণতান্ত্রিক দেশ আছে তাদেরকে অবহিত করব এবং অন্যায়ভাবে যে দেশনেত্রীকে আটক করে রাখা হয়েছে সে বিষয়টা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য যথোপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “ঈদের আগে দলের চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের যে বিষয়টা এসেছিলে হাই কোর্টে, সেখানে একটা নেতিবাচক আদেশ হওয়ার পর থেকে আমাদের যে ধারণাটা আরও দৃঢ় হয়েছে, এখন বিচার ব্যবস্থা আর স্বাধীনভাবে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। সরকার বিচার ব্যবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করছে।

“সেক্ষেত্রে আইনিভাবে এটা কিছুটা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে যে, এখানে আমরা ন্যায়বিচার  পাব কিনা। সে কারণে আমরা দেশনেত্রীর মুক্তির আন্দোলনকে বেগবান করার জন্য বিভাগীয় পর্যায়ে সমাবেশের কর্মসূচি অব্যাহত রাখব। যেহেতু আগস্ট মাসে সরকার কোনো কর্মসূচি নিতে দেয় না সে কারণে আমাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১ সেপ্টেম্বর থেকে এই কর্মসূচি আবার শুরু করব।”

খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঈদের আগে চট্টগ্রাম, বরিশাল ও খুলনায় সমাবেশ করেছে বিএনপি।

বিনামূল্যে ডেঙ্গুর চিকিৎসার দাবি

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “ডেঙ্গু পরিস্থিতি আগের চেয়ে আরও ভয়াবহ। সবাই বলছেন, আগামী মাসটা নাকি আরও খারাপ যাবে, অবস্থা আরও বাড়বে। দুর্ভাগ্যের বিষয়টা হচ্ছে যে, এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুর ওষুধ এসে পৌঁছেনি।”

“আমরা গত সভা থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারকে অনুরোধ করেছিলাম, এর প্রতিরোধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে। সেটা সরকার করেনি, আপাৎকালীন একটা ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলাম, সেটা নেওয়া হয়নি। তার ফলে যারা ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যাচ্ছেন তারা সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছে না। আমরা দাবি জানাচ্ছি সম্পূর্ণ বিনা খরচে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য, সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।”

কোরবানির পশুর চামড়া নিয়ে ‘ক্ষমতাসীন দলের সিন্ডিকেটের’ তৎপরতা এবং সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, “চামড়া শিল্প ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য এসব কাজ করেছে। স্থায়ী কমিটি সরকারের ব্যর্থতা ও উদাসীনতার জন্য তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। অবিলম্বে এই শিল্পকে রক্ষার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমরা সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দলের ভাইস চেয়ারম্যান হারুন আল রশিদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া ও একজন বিচারপতির গ্রামের বাড়িতে হামলার নিন্দা জানান তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনে জেলা-মহানগর-উপজেলা পর্যায়ে শোভাযাত্রা, সভা-সমাবেশ-আলোচনা সভা অনুষ্ঠানে সিদ্ধান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠকে হয়েছে জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, “ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে আমরা র‌্যাশি ও পরদিন আলোচনা সভা করব। এরপরেই বেগম জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভাগীয় সমাবেশগুলো আমরা সমাপ্ত করব।”

আগামী ২৪ অগাস্ট জন্মাষ্টমী উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের সদস্যদের সংবর্ধনার আয়োজন করা হবে বলে জানান তিনি।

স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মহাসচিব ছাড়া খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।

লন্ডন থেকে স্কাইপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও যুক্ত ছিলেন বৈঠকে।