ডেঙ্গু: ঢাকা ও আশপাশকে ‘দুর্গত এলাকা’ ঘোষণার দাবি জাসদের

সারাদেশে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির পরিস্থিতির মধ্যে রাজধানীসহ সংলগ্ন অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2019, 08:36 AM
Updated : 1 August 2019, 09:08 AM

পাশাপাশি পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠনের দাবিও জানিয়েছে দলটি।

বৃহস্পতিবার জাসদ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “ডেঙ্গু পরিস্থিতি একটি জাতীয় বিপদ ও দুর্যোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

“তাই জাসদ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা আইন-২০১২ অনুযায়ী ডেঙ্গুকে আপদ এবং দুর্যোগ ঘোষণা করা, ঢাকাসহ সংলগ্ন অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা হিসেবে ঘোষণা করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে সম্পৃক্ত করে জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কাউন্সিল গঠন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে।”

সংবাদ সম্মেলনে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সিঙ্গাপুর, কলকাতা, ফিলিপাইন, চীনের অভিজ্ঞতা সরকারকে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে অবিলম্বে ঢাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কোচিং সেন্টারে ছুটি দেওয়ারও দাবি জানান শিরীন আকতার।

তিনি বলেন, “ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলাগুলোতে ডেঙ্গুতে মানুষের দুঃখজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। খোদ রাজধানীতেই ডেঙ্গুর চিকিৎসা সেবার অপ্রতুলতা ও হিমশিম অবস্থা চলছে। ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সামর্থ্যের অভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঢাকায় এডিস মশার বিস্তার প্রতিরোধে এখনও কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বরং এ ক্ষেত্রে গাফিলতি ও ব্যর্থতা এখনও কাটিয়ে উঠেনি।”

শিরীন আখতার বলেন, “দুর্ভাগ্যজনকভাবে মানুষের বিপদকে পুঁজি করে কিছু বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার নামে ডাকাতি এবং মশা মারার স্প্রে, ওষুধ নিয়ে মজুতদারী ব্যবস্থা শুরু হয়েছে।”

বর্তমান পরিস্থিতে ঢাকা ও আশপাশের অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা এবং জাতীয় দুর্যোগ কাউন্সিল গঠনের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন,  “ডেঙ্গু পরিস্থিতির ভয়াবহতার কথা চিন্তা করে এবং ডেঙ্গু সংকট মোকাবেলা করার কথা চিন্তা করে আমরা কেবল দুটি সিটি করপোরেশন এবং স্থাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ওপর ছেড়ে রাখতে পারি না।

“সেজন্য আমরা জাতীয় দুর্যোগ আইন সামনে এনে জাতীয় দুর্যোগ কাউন্সিল গঠন এবং একই সাথে ঢাকাসহ আশপাশের অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি করছি।”

তিনি আরও বলেন, “পূর্বপ্রস্তুতির ব্যর্থতা, আগাম সতর্কতা আমলে না নেওয়া এবং সমন্বয়হীনতা, পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উত্থাপন, গাফিলতি এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও সিটি করপোরেশনের ডেঙ্গু সমস্যা মোকাবেলা করার জন্য যথেষ্ট ঘাটতি এবং কমতি থাকার কারণে আমরা দেখছি একটা ভয়াবহ সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ডেঙ্গু সমস্যা নভেম্বর পর্যন্ত প্রলম্বিত হতে পারে।

“আমরা এই মুহূর্তে মনে করি, ডেঙ্গু মশার বিস্তারস্থল ধ্বংস করে দেওয়া, ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা, একই সাথে বছরব্যাপী কার্যক্রম গ্রহণ করে ঢাকাসহ সারাদেশকে ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা মুক্ত করতে হবে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি, জাতীয় দুর্যোগ আইন প্রয়োগ করা হোক।”

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মীর হোসাইন আখতার, স্থায়ী কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান শওকত, সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান বাবুল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।