ভোটের বছরে আ. লীগের আয় ২৪ কোটি টাকা

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ একাদশ সংসদ সংসদ নির্বাচনের বছরে ২৪ কোটি টাকার বেশি আয় করেছে, যার মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১৯ কোটি টাকা।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 August 2019, 04:10 AM
Updated : 1 August 2019, 04:10 AM

২০১৮ পঞ্জিকা বছরের আর্থিক লেনদেনের যে হিসাব বিবরণী আওয়ামী লীগ নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, বর্তমান দলটির তহবিলে রয়েছে সাড়ে ৩৭ কোটি টাকা।

দলটির নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বুধবার ইসি সচিব মো. আলমগীরের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয়।

পরে ইসির মিডিয়া সেন্টারে এইচটি ইমাম সাংবাদিকদের বলেন, এবার আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা। ব্যয় হয়েছে ১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ৫৫৭ টাকা। দলের তহবিলে বর্তমানে রয়েছে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা রয়েছে।

এর আগে বুধবার ইসিতে দলের অডিট রিপোর্ট জমা দেয় বিএনপি। ২০১৮ সালে বিএনপির প্রায় ১০ কোটি টাকা আয় দেখিয়েছে। সেই হিসেবে আওয়ামী লীগের আয়ের পরিমাণ বিএনপির দ্বিগুণেরও বেশি।

২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে একাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিক্রি করে। এই খাতে তারা ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা আয় দেখিয়েছে। আর অনুদান হিসেবে ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা পাওয়ার তথ্য দেওয়া হয়েছে হিসাব বিবরণীতে।

ব্যয়ের খতিয়ানে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভবন নির্মাণে ব্যয় ১০ কোটি ৫৬ লাখ ৫৩ হাজার ১০০ টাকা খরচের তথ্য দিয়েছে আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের আয়ের হিসাব

চাঁদা: এক কোটি ৪৫ লাখ ১৯ হাজার ৭০০ টাকা

এর মধ্যে কার্যনির্বাহী সদস্যদের চাঁদা ৩৬ লাখ ৩৬ হাজার টাকা, উপদেষ্টাদের চাঁদা ১০ লাখ ৩৩ হাজার ২০০ টাকা, জাতীয় কমিটির সদস্যদের চাঁদা ৫ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা, সংসদ সদস্যদের ৭৯ লাখ ২২ হাজার টাকা ও সংরক্ষিত আসনের এমপিদের চাঁদা ১৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা

সদস্য সংগ্রহ/নবায়ন ফরম বিক্রি: দুই কোটি ৯ লাখ ৭৭ হাজার ৫২০ টাকা

মনোনয়ন ফরম বিক্রি: ১০ কোটি ৮৮ লাখ ১০ হাজার টাকা

অনুদান: ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৮৫ হাজার ৩৫৫ টাকা।

মোট আয়: ২৪ কোটি ২৩ লাখ ৪২ হাজার ৭০৭ টাকা

এর আগে পঞ্জিকা বছরে ২০ কোটি ২৪ লাখ ৯৬ হাজার ৪৩৬ টাকা আয় এবং ১৩ কোটি ৬৩ লাখ ৪৮ হাজার ৩১৯ টাকা ব্যয়ের হিসাব নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছিল গত ১১ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ।

২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর দলটির হিসাবে স্থিতি ছিল ৩২ কোটি ২২ লাখ ১৬ হাজার ৪৩৭ টাকা। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে তা বেড়ে ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭৮ হাজার ৫৮৭ টাকা হয়েছে।

২০০৮ সালে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু হওয়ার পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ মেনে প্রতিটি নিবন্ধিত দলকে প্রতি পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব নিবন্ধিত নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে নিরীক্ষা করিয়ে পরের বছরের ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জমা দিতে হয়।

জাপার আয় মাত্র ২ কোটি টাকা

২০১৮ সালে জাতীয় পার্টির ১ কোটি ৯৭ লাখ ৩৬ হাজার টাকা আয় এবং ১ কোটি ২০ লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যায়ের তথ্য নির্বাচন কমিশনে জমা দিয়েছে।

জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী নির্বাচন কমিশনে জমা দেন দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য রেজাউল ইসলাম ভূইয়া ও সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হেলাল উদ্দিন।

সাবেক সামরিক শাসক এইচএম এরশাদের গড়া এ দল ২০১৭ সালে ১ কোটি ৮ লাখ ৫৫ হাজার ২৪০ টাকা এবং ১ কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৩৬১ টাকা ব্যয়ের হিসাব ইসিতে জমা দিয়েছিল।

আর ২০১৬ সালে ৭৩ লাখ ৬০ হাজার ৫০০ টাকা আয়ের বিপরীতে ১ কোটি ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৩০৩ টাকা ব্যয় দেখিয়েছিল জাতীয় পার্টি।