কোনো মন্ত্রী বন্যার্ত এলাকায় ‘হেলিকপ্টার মুভ’ করেনি: ফখরুল

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কোনো মন্ত্রীকে বন্যাকবলিত এলাকায় যেতে দেখা যায়নি।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 July 2019, 03:29 PM
Updated : 19 July 2019, 07:38 PM

গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে শুক্রবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের কাছে এ তিনি অভিযোগ করেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, সরকারের চরম উদাসীনতা বন্যার ব্যাপারে। তারা বন্যার্তদের পাশে দাঁড়াতে পারছে না। এরকম পরিস্থিতিতে সরকারের যেরকম উদ্যোগ নেওয়ার কথা সেটা দেখা যাচ্ছে না। সরকারের পদক্ষেপগুলো মানুষ দেখতে চায়।

“এখন পর্যন্ত ত্রাণমন্ত্রী কোথাও ঘুরে আসেননি। আপনারা পত্রিকায় কি ছবি দেখছেন যে, কোনো মন্ত্রী এলাকাতে গেছেন বা  বন্যাকবলিত এলাকায় হেলিকপ্টার মুভ করেছে? দেখেন নাই। অর্থাৎ সরকারের যে জনগনের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই সেটা বুঝা যায়।”

বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ‘বিরোধী দলের তেমন কিছু করার নেই’ মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, “তারা ত্রাণ কমিটি পাঠাতে পারে, সেখানে কিছু কিছু সাহায্য নিয়ে সাহায্য করতে পারে। কিন্তু সরকারের দায়িত্ব বন্যাকবলিত মানুষকে রক্ষা করা, যেটা সরকার করছে না।”

বিএনপি মহাসচিব জানান, স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে আহ্বায়ক ও দলের ত্রাণবিষয়ক সম্পাদক হাজী আমিনুর রশীদ ইয়াসীনকে সদস্য সচিব করে বৈঠকে দলের পক্ষ থেকে ২১ সদস্যের একটি ত্রাণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। এতে ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সংশ্লিষ্ট জেলার নেতৃবৃন্দও থাকবে।

এই কমিটি অবিলম্বে তাদের কর্মকাণ্ড শুরু করবেন বলে জানান তিনি।

বিকাল ৪টা থেকে দুই ঘণ্টা স্থায়ী বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ নানা বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে, দেশে আজকে ক্রমাগত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা ক্রমেই ভেঙে পড়ছে। এমন একটা অবস্থা তৈরি হয়েছে যেন মনে হচ্ছে দেশে একটা এনার্কি চলছে।”

তিনি বলেন, “আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বে যারা রয়েছেন, তারাই এখন সবচাইতে আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন। সরকার বলতে যা বুঝায়, এরকম গভর্নমেন্ট আছে কিনা- এটাই আজকে জনগণের কাছে প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।”

এই পরিস্থিতিতে ‘জাতীয় ঐক্যমত’ সৃষ্টির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করতে হলে বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে কথাবার্তা বলা প্রয়োজন। আমরা এবিষয়ে চিন্তা করছি এবং বিষয়টাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি।”

মির্জা ফখরুল বলেন, “ডেঙ্গু এখন ভয়াবহ মহামারী আকার ধারণ করেছে। অর্থমন্ত্রী বলেছেন, তিনি ডেঙ্গুর ভয়ে অফিসে যাচ্ছেন না, মশা কামড়াতে পারে। একবার তার ডেঙ্গু হয়ে গেছে। অথচ একজন মেয়র বলেছেন যে, এখন পর্যন্ত নাকি কিছুই হয় নাই।

“এখন পর্যন্ত ২১ জন মারা গেছেন, কয়েক হাজার মানুষ আক্রান্ত হয়েছে। সবাই এখন দিনের বেলায় শিশুদের মশারির নিচে রাখছেন …., বড়রা মোজা পরে থাকেন-কখন এডিস মশা কামড় দেবে সেই ভয়ে। সিটি করপোরেশনের কোনো উদ্যোগ নাই। আমি নিজে উত্তরায় থাকি। এখন পর্যন্ত কোনো উদ্যোগ দেখতে পাইনি- এটাই বাস্তবতা বলছি।” 

বৈঠকে খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন। লন্ডন থেকে স্কাইপে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান যুক্ত ছিলেন।