সংসদ প্রাঙ্গণে এরশাদের জানাজা

জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের জানাজা হল জাতীয় সংসদ ভবনের প্রাঙ্গণে।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 July 2019, 07:12 AM
Updated : 15 July 2019, 09:19 AM

আরও দুই দফা জানাজা শেষে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকায় সেনাবাহিনীর কবরস্থানে দাফন করা হবে সাবেক এই সামরিক শাসককে।

রক্তের ক্যান্সার মাইডোলিসপ্লাস্টিক সিনড্রোমে আক্রান্ত এরশাদ ১০ দিন লাইফ সাপোর্টে থাকার পর রোববার সকালে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৯০ বছর।

রোববার দুপুরে ঢাকা সেনানিবাসে সেনা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার এক দফা জানাজা হয়।

জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে সোমবার সকালে বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

পাঁচবারের এই এমপির কফিন জাতীয় পতাকা ও সেনাবাহিনীর পতাকায় মুড়ে সোমবার সকালে জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে নিয়ে আসা হয় রেওয়াজ অনুযায়ী আরেক দফা জানাজার জন্য।

তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে সংসদের দক্ষিণ প্লাজার বদলে জানাজার আনুষ্ঠানিকতা সারা হয় দক্ষিণ প্লাজার নিচের টানেলে।

জানাজার পরে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের কফিনে।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব, স্পিকারের পক্ষে সার্জেন্ট অ্যাট আর্মস এবং ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিরোধী দলীয় নেতার কফিনে।

জানাজার আগে এরশাদের জীবনী পড়ে শোনান জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গাঁ। বক্তব্য দিতে এসে আবেগ আপ্লুত গয়ে পড়েন এরশাদের ভাই জাতীয় পার্টির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জিএম কাদের। 

এরশাদের স্ত্রী সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ জানাজায় এসেছিলেন ছেলে শাদ এরশাদকে সঙ্গে নিয়ে। সবার কাছে এরশাদের জন্য দোয়া চান রওশন। 

রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ, ডেপুটি স্পিকার শেখ ফজলে রাব্বী মিয়া, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন, সংসদের প্রধান হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী সেখানে জানাজায় অংশ নেন। 

বিরোধী দলীয় নেতা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নিতে জাতীয় সংসদ প্রাঙ্গণে তার ভাই জিএম কাদেরসহ দলের অন্য নেতারা।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে তোফায়েল আহমেদ, শেখ ফজলুল করিম সেলিম, মাহবুব-উল আলম হানিফ, মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন এবং বিএনপি নেতা ব্যরিস্টার মওদুদ আহমদ ও জিএম সিরাজ যোগ দেন জানাজায়।

জাতীয় পার্টির নেতাদের মধ্যে রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, আবু হোসেন বাবলা, মুজিবুল হক চুন্নু, আনিসুল ইসলাম মাহমুদ জানাজায় অংশ নেন।

সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে এরশাদের কফিন নিয়ে যাওয়া হয় কাকরাইলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে। নেতা-কর্মীদের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য সেখানে বিকাল ৩টা পর্যন্ত রাখা হবে এরশাদের মরদেহ।

আছরের পর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে আরও এক দফা জানাজা হবে এরশাদের। বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারে করে সাবেক এই রাষ্ট্রপতির মরদেহ মঙ্গলবার সকালে নেওয়া হবে তার নির্বাচনী এলাকা রংপুরে।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শহরের ঈদগাহ মাঠে ‘পেয়ারা’ নামে পরিচিত রংপুরের সন্তান এরশাদের চতুর্থ জানাজা হবে। ঢাকার ফিরিয়ে আনার পর দুপুরে বনানীর সেনা কবরস্থানে দাফন করা হবে বাংলাদেশের চতুর্থ সেনাপ্রধানের মরদেহ।