এরশাদের জন্য বনানীর কার্যালয়ে শোক বই

যেখানে বসে দলের কার্যক্রম চালাতেন এইচ এম এরশাদ, বনানীর সেই কার্যালয়ে তার জন্য খোলা হয়েছে শোক বই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 July 2019, 09:04 AM
Updated : 15 July 2019, 12:54 PM

রোববার সকালে সিএমএইচে এরশাদের মৃত্যুর পরপরই বনানীর জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের কার্যালয় শোক বই খোলার কথা জানান দলীয় চেয়ারম্যানের রাজনৈতিক ও প্রেস সচিব সুনীল শুভরায়।

তিনি বলেছেন, আগামী ১৮ জুলাই পর্যন্ত ওই কার্যালয়ে শোক বইটি থাকবে।

দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঢাকা ও রংপুরে চারটি জানাজার পর মঙ্গলবার দাফন করা হবে এরশাদকে। বুধবার হবে কুলখানি।  

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ সংসদে বিরোধীদলীয় নেতার ভূমিকায় ছিলেন। নানা রোগে ভুগে ৯০ বছর বয়সে মারা গেলেন তিনি।

সেনাপ্রধান থেকে ক্ষমতা দখল করে নয় বছর দেশ শাসনের পর ১৯৯০ সালে গণআন্দোলনে পতন ঘটার পর জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন এরশাদ।

জাতীয় পার্টির প্রধান কার্যালয় বিজয়নগরে হলেও এরশাদ বনানীর কার্যালয়েই বসতেন। একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে অসুস্থ হয়ে পড়ার আগ পর্যন্ত সেখানেই নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতেন তিনি।

একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ঢাকার কচুক্ষেতে জনসভায় এইচ এম এরশাদ

এরশাদের মৃত্যুতে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, ওয়ার্কার্স পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে শোক জানানো হয়েছে। ১৯৯০ সালের আগে দশকজুড়ে এরশাদ পতনের আন্দোলনে এই তিনটি দলের শীর্ষনেতাই ছিলেন নেতৃত্বের ভূমিকায়।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শোকবার্তায় এরশাদের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশের পাশাপাশি তার আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনের সমবেদনা জানান।

এরশাদের মৃত্যুতে ঠিক একই ভাষায় শোকবার্তা দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদকে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করে তার মৃত্যুতে শোক জানিয়ে তার পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে বিবৃতি দেন।

এরশাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিবৃতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, “এইচ এম এরশাদ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ায় জাতি একজন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদকে হারাল।”

শ্রম প্রতিমন্ত্রী বেগম মুন্নুজান সুফিয়ান শোকবার্তায় বলেছেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের জন্য বড় ধরনের ক্ষতি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়েছিলেন এরশাদকে শেষ বার দেখতে। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “উনার চলে যাওয়াটা সকলের জন্য হৃদয়বিদারক ঘটনা।”

এরশাদের মৃত্যুতে নব্বইয়ের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলনে চিকিৎসকদের নেতা মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, “তবে শেষ পর্যন্ত হলেও এরশাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হয়েছিল। গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতি মাথায় নিয়ে কয়েক দফা সরকারের সঙ্গে ছিলেন। নানা দায়িত্বও পালন করেছেন।”

নব্বইয়ের ছাত্রনেতা অসীম কুমার উকিলের মতে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা ‘ঘটন-অঘটনের নায়ক’ ছিলেন এরশাদ।

তিনি বলেন, “তবে শেষ পর্যন্ত তিনি অনুধাবন করতে পেরে গণতন্ত্রের চাকাকে সুদৃঢ় করতে কাজ করার চেষ্টা করেছেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা অঘটন- ঘটনে তিনি বেঁচে থাকবেন দীর্ঘ দিন।”