বাজেটে নিয়ম না মেনেই ভ্যাট ‘বসিয়ে দিয়েছে’: আমীর খসরু

প্রস্তাবিত বাজেটে ভ্যাটের আওতা বাড়ানোর জন্য যে পরিকল্পনা দেওয়া হয়েছে, তার সমালোচনা করেছেন বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 June 2019, 04:35 PM
Updated : 26 June 2019, 04:35 PM

বুধবার এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ক্ষমতাসীন দলের ‘ধনী চক্রকে সুবিধা দিতেই’ এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে।

বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা খসরু বলেন, ‘‘গরীবের টাকা, কর্মজীবীদের টাকা, যারা কষ্ট করে তাদের টাকা লুটপাট করে বড় লোকদের মধ্যে বিতরণ করার একটা প্রক্রিয়া বাংলাদেশে এখন শুরু হয়েছে। এ বাজেটটা প্রকৃত পক্ষে গরীবের টাকা, সাধারণ মানুষের টাকা, কষ্টার্জিত টাকা নিয়ে বড় লোকদের মধ্যে বিতরণ করছে।

‘‘এই বড় লোক মানে তারা আবার দলীয় বড় লোক হতে হবে, এমনে বড় লোক হলে চলবে না। ব্যবসায়ী মানে দলীয় ব্যবসায়ী হতে হবে। এর বাইরে কারো ফিরে আসার ‍সুযোগ নেই।”

গত ১৩ জুন সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব করেন। টাকার অঙ্কে এটা বিদায়ী অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে ১৮ শতাংশ বেশি।

আমীর খসরু বলেন, ‘‘বাজেটে ভ্যাটের যে সম্প্রসারণ করা হয়েছে দেখবেন এক অবাক কারবার। সাধারণ গরীব মানুষ, মধ্যবিত্ত মানুষ, নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ যে সমস্ত জায়গায় তাদের টাকাগুলো খরচ করে দৈনন্দিন জীবনে, প্রত্যেকটির ওপরে ভ্যাট বসিয়ে দিয়েছে। আমার মনে হয় তারা (সরকার) ভ্যাটের আইন-কানুনও মানে নাই।”

যারা ভ্যাটের আওতায় আসে না, তাদেরকেও এখন টাকা দিতে হবে মন্তব্য করে খসরু বলেন, ”ভ্যাটের নিয়মটা হচ্ছে, বিভিন্ন পর্যায়ে ভ্যাট যখন দেয় বিভিন্ন পর্যায়ে রেয়াত পেয়ে যায়। এটা আলটিমেটলি যদি ৭ শতাংশ ভ্যাট হয়, যে ব্যক্তি শেষ পণ্যটি কেনে সে ৭ শতাংশ ভ্যাট দেয়- এটা সরকারের কোষাগারে চলে যায়।

‘‘এখন ওরা (সরকার) কী করেছে- যে লোকটা কাঁচামাল কিনবে তার ওপরে ৭ শতাংশ, যখন সে এটা প্রডিউস করে হোল সেল বাজারে দেবে তার ওপরে ৭ শতাংশ, সে যখন নিজে বিক্রি করবে তার ওপরেও আবার ৭ শতাংশ।

“বলছে ৭ শতাংশ, নিতেছে সাতের ওপর সাতের ওপর সাত এবং এই টাকাটা কে দিচ্ছে? সাধারণ মানুষ। যারা ভ্যাটের আওতায় আসে না, তাকে এই টাকাটা দিতে হচ্ছে। এটা কত বড় অন্যায় যে ৭ শতাংশের জায়গায় অধিক কর নিয়ে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে।”

বিদ্যুত ও গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, ব্যাংকে তারল্য সংকট, মেগা প্রকল্পের নামে ‘কোটি কোটি টাকা লুটপাট’ হচ্ছে অভিযোগ তুলে আমীর খসরু বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের অর্থ লুটপাট করে দেশে দলীয় চক্র তৈরি করা হয়েছে। এই লুটপাটে দলীয় রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আমলা এবং যারা নির্বাচনী চক্রে ছিল- তারা সকলে এই লুটপাটের অংশ।”

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হাবিবউন নবী খান সোহেলের মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে জিয়া আদর্শ একাডেমি।

সংগঠনের সভাপতি আজম খানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান জুবেদের পরিচালানায় এ আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, কাদের গনি চৌধুরী, তকদির মো. জসিম বক্তব্য দেন।