ঈদের দিন বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালের ৬২১ নম্বর কক্ষে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন দুই ঘণ্টা স্বজনদের সঙ্গে সময় কাটান।
দুর্নীতির মামলায় দণ্ড নিয়ে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে কারাগারে যাওয়া খালেদা গত ১ এপ্রিল থেকে বিএসএমএমইউ হাসপাতালে রয়েছেন।
এবার নিয়ে তিনটি ঈদ বন্দি অবস্থায় কাটালেন ৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া।
এবার শুধু সাতজন নিকটাত্মীয়কে তার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ দেয় কারা কর্তৃপক্ষ, যার সমালোচনা করে আসছে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন বোন সেলিনা ইসলাম, তার স্বামী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, ভাই প্রয়াত সাইদ এস্কান্দারের স্ত্রী নাসরিন এস্কান্দার, ছোট ভাই শামীম এস্কান্দারের ছেলে অভীক এস্কান্দার এবং ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউকের মেয়ে তামান্না হক।
দেখা করতে গিয়েছিলেন তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহিনা খান জামান বিন্দু এবং প্রয়াত আরাফাত রহমানের শাশুড়ি মোখরেমা রেজাও।
বেলা ১টায় খালেদা জিয়ার এই সাত স্বজনকে বিএসএমএমইউর ছয় তলায় নিয়ে যাওয়া হয়। দাপ্তরিক প্রক্রিয়া সেরে তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় খালেদা জিয়ার কেবিনে।
স্বজনরা পোলাও, মুরুগির রোস্ট, রেজালাসহ বিভিন্ন মাছে ভাজা নিয়ে নিয়ে যান খালেদা জিয়ার জন্য; সঙ্গে ছিল দুধ-সেমাই ও মিষ্টি। তাদের হাতে ছিল গোলাপের তোড়া।
বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানান, খালেদা জিয়ার স্বজনরা পৌনে ৩টায় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে যান।
বিএনপি চেয়ারপারসনের গত দুটি ঈদ পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি কক্ষে কাটলেও এবার তাতে ভিন্নতা আসে।
হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানায়, বিএসএমএমইউতে তার কেবিনে একটি চেয়ার, একটি টেবিল, একটি বেড, ড্রেসিং টেবিল রয়েছে। গৃহকর্মী ফাতেমা বেগম থাকেন পাশের আরেকটি কক্ষে, এই ফাতেমাই তার সেবাশুশ্রূষা করেন।
বিএনপি নেতারা দলীয় চেয়ারপারসনের সঙ্গে দেখা করতে চাইলেও অনুমতি পাননি জানিয়ে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তার তীব্র সমালোচনা করেন।
বিএনপি সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের বিএসএমএমইউ শাখার সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম সেলিমসহ কয়েকজন চিকিৎসক ও কর্মচারী বেলা ১২টার দিকে একটি ফুলের তোড়া দিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখতে যেতে চাইলেও কারা কর্তৃপক্ষ তাদের ফিরিয়ে দেয়।
মহিলা দলের ২০/৩০ নেতা-কর্মীকে বৃষ্টির মধ্যে নিচে দাঁড়িয়ে ছয় তলায় তাদের নেত্রীর কেবিনের দিকে তাকিয়ে থাকতে দেয়া যায়। তবে অন্যদিনের মতো তারা স্লোগান দেননি।
বিএসএমএমইউর রোগীদেরও কেবিন ব্লক দিয়ে যাওয়ার সময় উৎসুক দৃষ্টিতে খালেদার কেবিনের দিকে তাকাতে দেখা যায়। সাংবাদিকদের কাছে পেয়ে কেউ কেউ বিএনপি চেয়ারপারসনের খবরও জানতে চান।