ঈদের দিনও অবস্থানে ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধরা

ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে বিক্ষুব্ধরা ঈদের দিনও তাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 June 2019, 07:56 AM
Updated : 5 June 2019, 08:09 AM

গত ২৬ মে থেকে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যে টানা অবস্থান নেন তারা। বুধবার ঈদের দিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে নামাজ পড়ে আবারও সেখানে বসেছেন তারা।

ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন না হওয়া পর্যন্ত এই অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা রয়েছে তাদের।

এদিকে সকালে ঈদের নামাজ পড়ে বিক্ষুব্ধ ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।

সম্মেলনের এক বছর পর গত ১৩ মে ছাত্রলীগের ৩০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হলে তা পুনর্গঠনের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন পদ না পাওয়া কিংবা প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতারা।

তারা অভিযোগ করেন, বিবাহিত, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, চাকরিজীবী ও বিভিন্ন মামলার আসামিসহ নানা অভিযোগবিদ্ধ অনেককে পদ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বঞ্চিত করা হয়েছে অনেক ত্যাগী নেতাকে।

এনিয়ে বিক্ষুব্ধদের সঙ্গে মারামারিও বাঁধে কমিটিতে পদ পাওয়া নেতাদের। এরপর কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে আশ্বাসে পিছু হটে বিক্ষুব্ধরা।

বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের মুখে গত ২৯ মে ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিতর্কিত কয়েকজনকে বাদ দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির ১৯টি পদ শূন্য ঘোষণা করেন।

কিন্তু এরপর পূর্ণাঙ্গ কমিটিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা হলে ফের অবস্থানে ফেরে বিক্ষুব্ধরা; তাদের দাবি, আগে বিতর্কিত সবাইকে সরাতে হবে, তারপরই যেন কর্মসূচি নেওয়া হয়।

২৬ মে রাত থেকেই রোদ-বৃষ্টির মধ্যেও তারা এই কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। দাবি মানা না হলে ঈদ পেরিয়েও অবস্থান ধরে রাখার ঘোষণা রয়েছে তাদের।

বুধবার সকালে বিক্ষুব্ধদের অন্যতম মুখপাত্র ও বিগত কমিটির কর্মসূচি ও পরিকল্পনা সম্পাদক রাকিব হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে যাতে কমিটির পুনর্গঠন ঈদের আগেই হয়।

“এজন্য আমরা জোর দাবি জানিয়েছিলাম ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আওয়ামী লীগের যারা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিল তাদের কাছে। কিন্তু দুঃখের বিষয়, তারা এই সমস্যার সমাধান ঈদের আগে না করার কারণে আজকে ঈদের দিনেও আমাদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হয়েছে।”

তিনি বলেন, “সবাই তো চায় পরিবারের সাথে, বাবা মার সাথে ঈদ করতে, আমরাও চেয়েছিলাম। ক্যাম্পাসে পরিবার ছাড়া এখানে ঈদ করছি এজন্য আমাদের খুব খারাপ লাগছে। তারা বিতর্কিতদের ঈদ করার সুযোগ দিল আর আমাদের ঈদ করার সুযোগ দিল না।

“আমাদের চাওয়া এখন শুধু জননেত্রী শেখ হাসিনাই পূরণ করতে পারে। আমরা চাইব, অতিসত্বর যাতে কমিটি থেকে বিতর্কিতদের বাদ দিয়ে ত্যাগীদের সুযোগ দিয়ে কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।”

বিগত কমিটির মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা বিষয়ক উপ-সম্পাদক আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমাদের মাঝে ঈদের আনন্দ স্পর্শ করতে পারে নাই।  কারণ যতক্ষণ না পর্যন্ত ছাত্রলীগের এই বিতর্কিত কমিটি পুনর্গঠন করা না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখানেই অবস্থান করব।”

প্রধানমন্ত্রী ৮ জুন দেশে আসার পর তাদের আন্দোলন আরও ‘কঠোর’ হবে বলে তিনি জানান।

অবস্থান কমসূচিতে ছিলেন ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক এস এম মামুন, সাবেক উপ দপ্তর সম্পাদক নকিবুল ইসলাম সুমন, সাবেক উপ কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক মুরাদ হায়দার টিপু, সাবেক স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক রানা হামিদ, কবি জসিমউদদীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান প্রমুখ।