শনিবার নাগরিক ঐক্যের ইফতার মাহফিলে তিনি বলেন, “দেশ পরিচালিত হবে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে। স্বাধীন দেশ শাসন করবে যারা অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করবে তারাই, কিন্তু সংবিধান সমুন্নত রাখার দায়িত্ব পালন করবে। সংবিধানে যে প্রতিশ্রুতিগুলো আছে তা পালন করার তাদের দায়িত্ব আছে, কর্তব্য আছে।”
“আমি বলব, সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকুন। সংবিধানকে সমুন্নত রেখে সংবিধানের প্রতিশ্রুতি নির্ভেজাল গণতন্ত্র, কার্যকর গণতন্ত্র, মানুষের মৌলিক অধিকার- এসব আমরা নিশ্চিত করব সেই ঐক্যবদ্ধ হয়ে। ইনশাল্লাহ আমরা এটা করব।”
সংবিধান অনুযায়ী বহুদলীয় গণতন্ত্র চর্চায় বহুদলের উপস্থিতি থাকলেও তাদের মধ্যে মৌলিক বিষয়ে ঐক্যমত থাকবে বলে মন্তব্য করেন কামাল হোসেন।
“আমাদের মধ্যে মতভিন্নতা থাকতে পারে, তবে জনগণ ক্ষমতার মালিক এটা নিয়ে কোনো দ্বিমতের অবকাশ থাকতে পারে না। কারণ স্বাধীনতাই থাকে না যদি আমরা এটা না মানি।”
নির্বাচনে ক্রটি থাকলে তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি দাবি করতে পারবে না বলেও মন্তব্য করেন কামাল হোসেন।
“গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় সংগ্রামী নেতা, যিনি বার বার গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, কারাবরণ করেছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, যাকে দেশের মানুষ গণতন্ত্রের মাতা বলে অভিহিত করেছেন তাকে দীর্ঘকাল কারাগারে বন্দি করে রেখেছে। তারা (সরকার) জানে, দেশনেত্রী যদি বাইরে থাকেন তাহলে এই সমস্ত বানচাল হয়ে যাবে। জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মুখে তারা পালিয়ে যেতে বাধ্য হবে।”
যারা ‘গণতন্ত্রকে ভালোবাসেন, মানুষের অধিকার ফিরে পেতে চান’ তারা ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল।
“এই ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই স্বৈরাচারী সরকারকে পরাজিত করতে হবে, দেশনেত্রীকে মুক্ত করতে হবে, গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে,” বলেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, “সরকার দেশে লুটপাটের অর্থনীতি প্রতিষ্ঠা করেছে। কোথাও শান্তি নেই, সর্বত্র সংকট। এ থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে আন্দোলনের বিকল্প নেই।”
কেউ কাউকে পছন্দ, অপছন্দ করলেও সবাই একজোট হয়ে আন্দোলনের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি।
“আজকের দিনে এটাই আমাদের শপথ হোক। ওরা (সরকার) যত চালাক হোক, আমরা তার চাইতে অনেক বেশি বুদ্ধিমান, অনেক বেশি কৌশলী,” বলেন তিনি।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়কারী শহিদুল্লাহ চৌধুরীর পরিচালনায় ইফতারের আগে সংক্ষিপ্ত এই আলোচনা সভায় গণফোরামের মোস্তফা মহসিন মন্টু, সুব্রত চৌধুরী, বিএনপির আবদুস সালাম, জেএসডির আবদুল মালেক রতন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের হাবিবুর রহমান তালুকদার, বিকল্পধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক দিলারা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
ইফতারে গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মাবজমিন সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, পরিবেশ সংগঠন বেলা-এর রেজওয়ানা হাসান চৌধুরী, গণফোরামের রেজা কিবরিয়া, মহসিন রশিদ, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক আহমেদ, আমিন আফসারী, রফিকুল ইসলাম পথিক, বিএনপির শামা ওবায়েদ, শায়রুল কবির খান, জেএসডির শহিদউদ্দিন মাহমুদ, নাগরিক ঐক্যের এসএম আকবর, বিকল্পধারার শাহ আহমেদ বাদল, গণদলের গোলাম মাওলা, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার মিলু চৌধুরী, কল্যাণ পার্টির এম এম আমিনুর রহমান, জাগপার আসাদুর রহমান খান প্রমুখ নেতারা অংশ নেন।