তিন শপথই পূরণ করেছেন শেখ হাসিনা: মতিয়া

নির্বাসিত জীবন থেকে দেশে ফেরার সময় শেখ হাসিনা তিনটি শপথ করেছিলেন এবং সেগুলো তিনি পূরণ করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা মতিয়া চৌধুরী।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 May 2019, 08:19 PM
Updated : 17 May 2019, 08:19 PM

শেখ হাসিনার ৩৮তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শুক্রবার আওয়ামী লীগের আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, “শেখ হাসিনা তিনটি শপথ নিয়ে দেশে ফিরেছিলেন। পিতৃহত্যার বিচার, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং ভাত ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা। এসবই তিনি করেছেন।

“শিক্ষার আলোয় আলোকিত করেছেন। দেশকে উৎকর্ষতার দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। পদ্মা সেতু আজ দৃশ্যমান, কাজ সমাপ্তের পথে। যে টানেলের কথা কখনো কেউ ভাবেনি, সেই টানেলও নির্মাণ করা হচ্ছে।”

আর বিএনপি এখন তাদের কর্মের প্রায়শ্চিত্ত করছে বলে মন্তব্য করেন মতিয়া চৌধুরী।  

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার সময় ছোট বোন শেখ রেহানা, স্বামী ও দুই সন্তানসহ শেখ হাসিনা পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। ফলে তারা প্রাণে বেঁচে যান। প্রায় ছয় বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা।

দিবসটি উপলক্ষে বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এই সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, “সেদিন আওয়ামী লীগ যে কারণেই তাকে (শেখ হাসিনা) সভাপতি নির্বাচিত করুক না কেন, পরবর্তীতে তার দূরদর্শী নেতৃত্ব, রাষ্ট্রনায়কোচিত নেতৃত্ব প্রমাণ করে দিয়েছে, শেখ হাসিনাকে সভাপতি নির্বাচিত করার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। 

“শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির অগ্রদূত। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, তার কন্যা শেখ হাসিনা দেশের সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিয়েছেন। এছাড়া সম্ভব ছিল না।”

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী আবদুর রাজ্জাক বলেন, “দেশে ধানের দাম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের আলোচনা হচ্ছে, আমি জানি। আমাদের জন্য উভয় সংকট চলছে। আমরা চাই সীমিত আয়ের মানুষের জন্য দাম কম থাকুক। আবার যারা ধান উৎপাদন করেন, তারাও যেন ন্যায্য মূল্যটা পান। প্রয়োজনে ধান-চাল রপ্তানি করে কৃষকদের বাঁচিয়ে রাখা হবে।”

সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, “শেখ হাসিনার দেশে ফেরার তিনটি মাত্রা আছে। প্রথম মাত্রা, তার নেতৃত্ব। দ্বিতীয় মাত্রা, তিনি না ফিরলে আওয়ামী লীগের সংকট দূর হত না। তৃতীয় মাত্রা হল, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যে বাংলাদেশ হারিয়ে গিয়েছিল, সেই বাংলাদেশকে ফিরিয়ে এনেছেন।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল আলম হানিফ বলেন, “আজ যারা আইনের শাসনের কথা বলেন, তাদের নেতা ‘খুনি’ জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করে আইনের শাসন ভূলুণ্ঠিত করেছিলেন। শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেছেন। 

“পাকিস্তানের এজেন্ট, পাকিস্তানের সহযোগী শক্তি বিএনপি-জামায়াত আবারও গণতন্ত্রের কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অশুভ তৎপরতা চালিয়ে উন্নয়ন ও অগ্রগতিতে বাধার সৃষ্টি করেছে। এই অশুভ তৎপরতার প্রতিহত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব, এটাই আজকের দিনের প্রত্যয়।”

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, তথ্যমন্ত্রী এবং প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

এছাড়া দলের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।