রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের পুনর্গঠিত ১১১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি ঘোষণা করা হয়।
কামাল হোসেনের উপস্থিতিতে দলের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এই কমিটি ঘোষণা করেন।
নতুন কমিটিতে সভাপতি পদে আছেন কামাল হোসেনেই, তার সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক রেজা কিবরিয়া। রেজা সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার ছেলে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে হাবিগঞ্জের একটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে যান রেজা কিবরিয়া।
নির্বাচনের আগে বিএনপি যখন আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে গণফোরামসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জোট করে, সে সময় তাদের সঙ্গে রেজার যোগদান রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
ওই নির্বাচনে বিএনপির ভরাডুবি (মাত্র ৬টি আসন পায় তারা) হলেও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে তাদের জোট শরিক গণফোরামের দুজন নেতা নির্বাচিত হন। গণফোরামের দলীয় প্রতীক উদীয়মান সূর্য নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রথমবারের মতো সংসদে দলটির প্রতিনিধিত্ব করছেন মোকাব্বির খান। সুলতান মোহাম্মদ মনসুরও গণফোরাম থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন।
ওই নির্বাচনের চার মাসের মাথায় গণফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হল রেজা কিবরিয়াকে। তার সঙ্গে ভোটের আগে দলটিতে যোগ দেওয়া সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা অধ্যাপক আবু সাইয়িদকে নির্বাহী সভাপতি করা হয়েছে।
বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহমিন মন্টুকে নতুন কেন্দ্রীয় কমিটির এক নম্বর সদস্য করা হয়েছে।
পুনর্গঠিত কমিটিতে ১৩ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে কামাল হোসেনের সঙ্গে স্থান পেয়েছেন এ এইচ এম খালেকুজ্জামান, অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, মফিজুল ইসলাম খান কামাল, অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, মোকাব্বির খান, আমসা আ আমিন, অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহসিন রশীদ, অ্যাডভোকেট শান্তিপ্রদ ঘোষ, অ্যাডভোকেট আওম শফিক উল্লাহ, মেসবাহ উদ্দীন আহমেদ ও অ্যাডভোকেট জানে আলম।
এসএম আলতাফ হোসেন, জামালউদ্দিন আহমেদ, তবারক হোসেন ও নৃপেল ঘোষকে নিয়ে একটি উপদেষ্টামণ্ডলী করা হয়েছে।
গত ২৬ এপ্রিল গুলিস্তানের মহানগর নাট্যমঞ্চে গণফোরামের বিশেষ কাউন্সিলের পর নতুন কমিটির নাম ঘোষণা করা হল।
সম্পাদকমণ্ডলীর মধ্যে কোষাধ্যক্ষ, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক, সংস্কৃতি সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি।
নতুন কমিটিতে স্থান পাননি রফিকুল ইসলাম পথিক, যিনি গত কমিটিতে প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
২৬ এপ্রিলের কাউন্সিলে মোকাব্বির খানের অংশগ্রহণের প্রতিবাদ জানিয়ে পথিক অধিবেশন কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সংসদে যোগ দেওয়ার পর কীভাবে মোকাব্বির খান কাউন্সিলে আসেন, তা নিয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের অবস্থান সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।
সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু কেন গুরুত্বপূর্ণ পদে নেই, কামাল হোসেনকে এ প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “এটা উনার প্রস্তাবেই রাখা হয়েছে।”
কত সদস্যের কমিটি করা হয়েছে জানতে চাইলে নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী বলেন, “কিছু নাম বাকি আছে। ১১১ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে।”
সংবাদ সম্মেলনে সুব্রত চৌধুরী ছাড়াও অধ্যাপক আবু সাইয়িদ, রেজা কিবরিয়া, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোশতাক হোসেন, মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
তবে মোস্তফা মহসিন মন্টু ও রফিকুল ইসলাম পথিকসহ বেশ কয়েকজন অনুপস্থিত ছিলেন।