যারা শপথ নিয়েছে তারা গণদুশমন: গয়েশ্বর

দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যারা সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছেন বা নেবেন, তারা ‘গণদুশমন’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 April 2019, 09:22 AM
Updated : 25 April 2019, 12:18 PM

ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচিত জাহিদুর রহমান জাহিদ বৃহস্পতিবার শপথ নেওয়ার পর গয়েশ্বরের এমন প্রতিক্রিয়া আসে। 

তিনি বলেন, “আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হচ্ছে- আমরা সংসদে যাব না। দলের সিদ্ধান্ত যিনি অমান্য করবেন তিনি দলের ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত হবেন না- এই সহজ কথাটা আপনারা বুঝে নিন।”

গত ডিসেম্বরে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ তোলা বিএনপি ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

কিন্তু গণফোরামের দুই নেতা সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির খানের পথ অনুসরণ করে বিএনপির জাহিদুর রহমানও বৃহস্পতিবার দুপুরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দপ্তরে গিয়ে এমপি হিসেবে শপথ নেন।

ওই শপথ অনুষ্ঠানের ঘণ্টাখানেক পর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর বলেন, “দলের সিদ্ধান্ত, দলের আদর্শ এবং নেত্রীকে (খালেদা জিয়া) জেলখানায় রেখে কেউ যদি শপথ নিয়ে থাকে এবং ভবিষ্যতে নেয়, তারা জাতীয়তাবাদী শক্তির সাথে চলার যোগ্যতা রাখে না।

“তারা হল গণদুশমন। জনগণই তাদের বিচার সময় মত করবে এবং সেটার জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে।”

স্পিকারের কাছ থেকে শপথ নেওয়ার পর দলের সিদ্ধান্ত না মানার কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জাহিদুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ সদস্য হিসেবে তাকে নির্বাচিত করেছে এলাকার জনগণ। তাদের প্রত্যাশা পূরণ করতেই তিনি শপথ নিয়েছেন।

এ বিষয়ে কটাক্ষ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘‘কী জাহিদ একজন… তিনি দাবিদার, তিনি নির্বাচনে জয়লাভ করছেন ধানের শীষে, আজকে শপথ গ্রহণ করেছেন। জনগণের সাথে যিনি থাকতে পারেন না, তিনি কোথায় শপথ নিলেন, কোথায় শপথ নিলেন না- এটা বিবেচনার বিষয় না।”

৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের ‘আগের দিনই’ ভোট হয়ে গেছে মন্তব্য করে এই বিএনপি নেতা বলেন, “১৬ কোটি মানুষ ভোট দিতে পারে নাই- এই কথাটা আমার না, এটা সকলের কথা।

“যারা আওয়ামী লীগ করেন, তাদের ৫ শতাংশও ভোট দিতে পারেন নাই। জনগণ যেখানে ভোট দিতে পারে নাই, সেই সংসদে তিনশ আসনে কেউ জয়লাভ করে নাই, কেউ পরাজিত হয় নাই।”

একাদশ সংসদ নির্বাচনে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তবে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বগুড়া-৬, মোশাররফ হোসেন বগুড়া-৪, জাহিদুর রহমান ঠাকুরগাঁও-৩, আমিনুল ইসলাম চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২, হারুনুর রশীদ চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩, এবং উকিল আবদুস সাত্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে নির্বাচিত হন।

বিএনপির এই ছয়জনের বাইরে গণফোরামের আরও দুইজন নির্বাচিত হন, যারা ইতোমধ্যে শপথ নিয়েছেন।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে ‘গণমাধ্যম বিরোধী আইন বাতিল, সাংবাদিক হত্যার বিচার, বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া ও বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি’র দাবিতে এই মানববন্ধন হয়।

সংগঠনের সভাপতি সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ মানববন্ধনে বিএফইউজের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বর্তমান মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ডিইউজের সভাপতি কাদের গণি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিবসহ সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতারা বক্তব্য দেন।